মাগুরার মহম্মদপুরের শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় মেলা অনুষ্ঠিত

খন্দকার নজরুল ইসলাম মিলন  মাগুরা  প্রতিনিধি ; লোকমুখে শোনা যায় ১০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে এই মেলা প্রথমে মাগুরা সদর উপজেলার গোপাল গ্রাম ইউনিয়নের বাহারবাগ গ্রামে অনুষ্ঠিত হতো।
দূর-দূরান্তের গ্রাম গুলো থেকে ঘোড়া নিয়ে আসতো প্রতিযোগিতার জন্য। কোন এক বছর বড়রিয়া গ্রামের লোকদের সাথে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার পুরস্কার নিয়ে মেলার আয়োজকদের সাথে দ্বন্দ্ব হয়।আর সেই দ্বন্দ্বের জের ধরে মূলত পরবর্তী বছর মেলাটি ঐ একই দিনে বড়রিয়া গ্রামেও শুরু হয়। মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার বালিদিয়া ইউনিয়নের বড়রিয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় মেলা প্রতিবছর পৌষ মাসের ২৮ তারিখে শুরু হয়ে থাকে এবং ৩ দিন ধরে চলতে থাকে মেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা এবং প্রায় ১৫-২০ দিন ধরে বিভিন্ন জেলা হতে আগত কাঠের ফার্নিচার ক্রয়/বিক্রয় চলতে থাকে ।
আর ঐ তারিখেই বাহারবাগ গ্রামে ১দিনের জন্য মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠদের মাধ্যমে জানা যায় শত বছরের ও বেশি সময় ধরে ব্যাপক আয়োজনে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। মেলার অন্যতম আকর্ষণ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। মাগুরা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে ঘোড়া আসে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। এছাড়া এই মেলায় ইতিপূর্বে পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, নাগরদোলা, লাঠিখেলা খেলা হতো বলেও জানা গেছে।
মেলায় বিভিন্ন ধরনের কাঠের ফার্নিচার, বাঁশ-বেতের সামগ্রী, মাটির তৈরী নানা ধরনের মৃতশিল্প, চুড়িমালা, কসমেটিক, পিঠা, মিষ্টি, মাছ, সবজীর দোকানও বসে থাকে।এছাড়াও বিনোদনের জন্য নাগরদোলা,চড়কি,চলন্ত ঝুলন্ত নৌকা সহ হরেকরকম জিনিসের আগমন ঘটে এই মেলায়। মেলা উপলক্ষ্যে বড়রিয়াসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির মেয়ে জামাইদের দাওয়াত করে আপ্যায়ন করার রেওয়াজ রয়েছে। এ মেলা উপলক্ষ্যে বড়রিয়াসহ আশেপাশের প্রায় সব বাড়ীর মেয়ে জামাইয়েরা ব্যাগভর্তি বাজার নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে আসে।এছাড়াও মেলাস্থলে লক্ষ লক্ষ দর্শক/দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। এই মেলার চতুর্দিকে অন্তত ১০ কিলোমিটার জুড়ে চোখে পড়ে মেলার মিষ্টি সহ বিভিন্ন ধরনের মালামালের পসরা। উৎসব থাকে পুরো এলাকা জুড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.