মান ভাল হওয়ায় কালাইয়ের বীজ আলুর চাহিদা বেড়েছে

মোঃ মোকাররম হোসাইন, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাট জেলা দ্বিতীয় বৃহত্তম আলু উৎপাদনকারী হিসেবে পরিচিত।এ জেলার কালাই উপজেলা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়। এ বছর আলুর রোগব্যাধিসহ নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ভালো ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে আলুর রোগ প্রতিরোধে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দিয়ে এসেছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগের কৃষি অফিসার অরুণ চন্দ্র রায়সহ সংশ্লিষ্ট অফিসাররা। এ কারনেই এ অঞ্চলের আলু উন্নতমানের হওয়ায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাশাপাশি যাচ্ছে দেশের বাহিরে। বিশেষ করে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে চাষীরা তাদের জমিতে যত্ন নেওয়ায় এ অঞ্চলের বীজ আলুর মান অনেক উন্নত। এ কারণে এই অঞ্চলের বীজের চাহিদা ব্যাপক। আর তাইত প্রতিবছর সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে শতশত ক্রেতা বীজ আলু কিনতে আসেন কালাই উপজেলায়।
সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ার লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের সাদবিলা গ্রামের আমজাদ, আঃ রহমান, ছালাম ও আলহাজ্বসহ কয়েকজন আলু বীজ ক্রেতার সাথে কথা হয়। এ সময় তারা  বলেন, আমরা প্রতি বছর আলু সেশনে কালাই উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের জমিনপুর, এল্লাগাড়ি, জামুড়া, বাসুড়াসহ কয়েকটি গ্রামে বীজ আলু কিনে থাকি। এ এলাকার আলুর মান খুব ভাল হওয়ায় ৬৫ কেজি আলু ৩০০০ থেকে ৩২০০ শ’ টাকায় কিনছি। আমরা এসব আলু বস্তা করে এই এলাকার হিমাগার গুলিতেই রাখি। অন্য এলাকার আলুর চেয়ে এ এলাকার আলু জমিতে লাগিয়ে আশানুরূপ ফলন পেয়ে থাকি আমরা।
জমিনপুর গ্রামের মাহফুজ বলেন, আমাদের বাড়িতে বাহির থেকে অনেকেই রুমানা বীজ আলু কিনতে আসছিল। আমাদের আলু মান দেখে ৬৫ কেজি আলু ৩৫শ’ টাকা দাম করেছিল। বীজ কম থাকায় বিক্রি করিনি।
এল্লাগাড়ি গ্রামের আ: হালিম, হামিদুল, ইয়াছিন, মতলেবসহ কয়েকজন জানায়, এ বছর লাভের আশায় বেশীরভাগ আলু চাষী হিমাগারে বীজ আলু সংরক্ষণ করে রেখেছেন। এ জন্য বাহির থেকে কিনতে আশা ক্রেতারা তাদের চাহিদামতো বীজ আলু পাচ্ছেনা।
কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১০ হাজার ৭১০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৯৬৯ মেট্রিকটন  এবং উৎপাদন হয়েছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার ৪৯ মেট্রিকটন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের লিফলেট বিতরণসহ নানা রকমের পরামর্শ দেওয়ার ফলে আলু চাষীরা তাদের জমিথেকে আশানুরূপ ফলন পেয়েছে।
কালাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায়  বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিতে। সেই পরামর্শের আলোকে এবার আলু চাষাবাদে চাষীরা ভাল ফলন পেয়েছে। তাছাড়াও পেয়েছে ভালো দাম । এ উপজেলার কৃষকদের উৎপাদিত সফল যাতে সারাবিশ্বে চাহিদা থাকে আমরা চেষ্টা করছি সেই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.