শেষ মুহূর্তের প্রতিমা সাজ সজ্জাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাপাহারের কারিগররা

তছলিম উদ্দীন সাপাহার, (নওগাঁ) প্রতিনিধি: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর মাত্র ২দিন বাকি। শেষ মুহূর্তে সাপাহারে মÐপে মÐপে রং-তুলির আঁচড়ে প্রতিমা সাজসজ্জার কাজ চলছে। প্রতিমা ও মÐপ তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমা তৈরির কারিগরসহ সংশ্লিষ্টরা। এতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

রবিবার ৬অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন পুজা মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, সদরের পালপাড়া পুজামÐপ, সাহাপাড়া ও বাড়োয়াড়ী পূজা মÐপে শেষ মুহূর্তের প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে জোরেসোরে। রং তুলির আঁচড়ে প্রতিমা সাজানোর কাজ করছেন কারিগররা। এছাড়া বাঁশ, বেত, তালপাতা, খড়, কাগজসহ বিভিন্ন আলোকসজ্জার মধ্যে দিয়ে মÐপ সাজানোর কাজও চলছে বেশ জোরে সোরে।

সদরের পালপাড়া পূজা মÐপে প্রতিমার রঙের কাজ করছেন কারিগর গোপাল পাল। তিনি বলেন, দুর্গা প্রতিমা তৈরি করতে প্রায় ১২ দিন সময় লেগেছে। এখন রং কাজ শেষ করেছি, আশা করছি, খুব শীঘ্রই প্রতিমা কমিটির কাছে দেবী দুর্গার প্রতিমা হস্তান্তর করা হবে।

সাহাপাড়া পূজা মÐপের কারিগর নিপুন রয় প্রতিনিধিকে বলেন, প্রতিমা তৈরিতে মাটির কাজ শেষ করে এখন রঙের কাজও প্রায় শেষ করেছি। ইতো মধ্যে আমাদের ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

শেষ মুহূর্তের সাজ সজ্জার কাজ করছেন কারিগর লক্ষন পাল তিনি বলেন, প্রতিমা তৈরি ৯০ শতাংশ কাজ হয়েছে। রঙের কাজ প্রায় শেষ দিকে। এ ছাড়া সাজসজ্জার জন্য শাড়িসহ আনুসাঙ্গিক কাজও প্রায় শেষের দিকে। এ ছাড়াও উপজেলার তিলনা পূজা মন্প, নিশ্চিতপুর,ভিওইল সহ প্রায় ৭ টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ করেছি।

তিনি বলেন, একটা প্রতিমা তৈরি করতে প্রায় ২৫ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। প্রতিমা তৈরি করতে বাঁশ, কাঠ, খড়, তারকাটা, সুতা, পাট, বিভিন্ন ধরনের মাটি ও রং ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

সাপাহার সদর পালপাড়া দূর্গা মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল পাল বলেন, সাপাহারে ১৮ টি মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যে জোরেসোরে কাজ চলছে। প্রতিটি পূজা মÐপের কাজ প্রায় ৮৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এখন নির্দিষ্ট সময়ের অপেক্ষায় আমরা আছি। আগামী ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে আমাদের পূজার মুল কার্যক্রম শুরু হবে। ১৩ অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্য দিয়ে ৫ দিন ব্যাপী ধর্মীয় উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।

পূজার নিরাপত্তা বিষয়ে তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তন হলেও সাপাহারে কোন ধরেনের শঙ্কার সৃষ্টি হয়নি। এছাড়াও শারদীয় দুর্গা পূজা উৎসব উপলক্ষ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী সহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সাথে মতবিনিময় সভা হয়েছে। তারা সবাই আমাদেরকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, উপজেলার ১৮ টি পূজা মÐপে সরকারি ভাবে ৫০০ কেজি চাউল বিতরণ করা হয়েছে এবং ১০ হাজার টাকা নগদ অর্থ প্রদান করা হবে। সেই সাথে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মন্ডপে মন্ডপে গ্রাম পুলিশের পশাপাশি আনসার ও পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। এই উপজেলাতে তেমন কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটনার সম্ভাবনা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *