সকল নারীর অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শবান মহিয়সী নারী

কালের সংবাদ ডেস্কঃ  বন্ধুরা.আমাদের আজকের আয়োজন বাংলার ঐতিহ্যবাহি নবাব পরিবারের গর্বিত আপনজন সৈয়দা হোসনে আরা বেগমকে নিয়ে, যিনি নিজের মেধা ও মননকে কাজে লাগিয়ে ঐতিহ্যের সৌরভে সুভাসিত করেছেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও বেগম লুৎফুন্নিসার প্রাণ প্রিয় লাল সবুজের বাংলাকে।

১০ই জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে, বাংলার মহিয়স নারী সৈয়দা হোসনে আরা বেগমের সুন্দর সব কর্ম-কাহিনী সংক্ষেপে তুলে ধরেছি আমরা। ভিন্নধর্মী এই আয়োজনটি শুধু মাত্র কালের সংবাদ-ও ক বাংলা টিভি-র অগনিত দর্শকদের জন্য তেুলে ধরা হলো-মহিয়সী নারী সৈয়দা হোসনে আরা বেগমের জন্ম- ১৯ মার্চ। পিতা

ডাক্তার সৈয়দ নাসির আলী মির্জা ও মাতা গুলশান আরা বেগমের স্নেহধন্য কন্যা তিনি। তার স্বামী,প্রকৌশলী এস. জি. মোস্তাফা, যিনি নবাব সিরাজউদ্দৌলার ৮ম বংশধর। তার প্রিয় মানুষ তারই ছেলে নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারের ৯ম রক্তধারা প্রজন্ম নবাবজাদা আব্বাস আরেব। তার প্রিয় মুখ নবাব সিরাজউদ্দৌলার প্রিয়তমা সহধর্মিনী মহিয়সী নারী বেগম লুৎফুন্নিসা এবং তার আম্মা মহিয়সী নারী গুলশান আরা বেগম।

তিনি অবসর কাটাতেন প্রিয় পরিবারের সাথে। বিশেষ করে ফজরে নামাজ পড়া ও কোরআন শরীফ তেলাওয়াতে তিনি পরম আত্ম-তৃপ্তি ও অফুরন্ত শান্তি পেতেন। সেই সঙ্গে প্রভাতের প্রকৃতি ও আপনজনের সেবায় কাটানো মুহূর্তগুলো তিনি তাঁর জীবন কালে বেশ উপভোগ করেন। তিনি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন প্রতিটি মানুষ সদা সত্য কথা বলবে এবং সত্য পথে চলবে, আর এতেই মানবের প্রকৃত কল্যাণ নিহিত। তিনি সর্বপ্রথম বিদেশের মাটিতে যান বাংলার বীর নবাব আলিবর্দী খান ও বাংলার দেশপ্রেমিক নবাব সিরাজউদ্দৌলার পূন্যভূমি বাংলার মদিনা ও খোসবাগ জিয়ারতে।

তিনি ছিলেন সেরা রাধুনীও বটে। তিনি সুযোগ পেলে নিজের রান্না বাংলার দরিদ্র মানুষদের খাওয়াতেন। তিনি সিরাজ পরিবারের সব নবাবী ঐতিহ্য ধরে রাখার ব্যাপারে খুবই একনিষ্ঠ ছিলেন
বন্ধুরা মেয়ে, স্ত্রী এবং মা হিসেবে সৈয়দা হোসনে আরা বেগম ছিলেন একজন পূর্ণাঙ্গ নারী। মহিয়সী নারী গুলশান আরা বেগমের গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন তাঁর এই গুণী সন্তান। তিনি ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী, সর্বগুণে গুণান্বিতা এবং হাস্যোজ্জ্বল ব্যক্তিত্বের অধিকারী।

তাঁর নসীহত, কর্ম থেকে তাঁর দৃঢ় চরিত্র ও মহৎ হৃদয়ের পরিচয় পাওয়া যায়। তাঁর সন্তানদের মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারের ৯ম রক্তধারা প্রজন্ম সৈয়দ গোলাম আব্বাস আরেব ওরফে নবাবজাদা আলি আব্বাসউদ্দৌলা এবং অন্য সকলে সততা, দেশপ্রেম, সাহস ও দয়ার জন্য বাংলার জমিনে সুপরিচিত।
তাঁর সন্তান নবাবজাদা আব্বাসউদ্দৌলার চারিত্রিক বলিষ্ঠতা এবং সুদৃঢ় পদক্ষেপ বাংলার ইতিহাসের গতি পরিবর্তন করে দিয়েছে, মহিয়সী নারী সৈয়দা হোসনে আরা বেগম ছিলেন বাংলার ঐতিহ্যবাহী নবাব সিরাজউদ্দৌলা পরিবারের গৃহবধূ ও চার সন্তানের জননী।

তিনি সাহস ও দৃঢ় বিশ্বাসের জন্য সকলের কাছে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে বিরাজ করছেন। তিনি মহানবী (সা.)-এর শিক্ষা ও চিরন্তন খোদায়ী হুকুম-আহকামের অনুসারী ছিলেন। এ ধরনের একজন ধর্মপ্রাণ মহিয়সী নারী ছিলেন সৈয়দা হোসনে আরা বেগম। সমসাময়িক মহিলাদের জন্য তিনি এক আদর্শ ও অনুসরণীয় প্রতীক হিসাবে বিবেচিত।

বন্ধুরা তিনি কতবড় বিদূষী ও মহিয়সী নারী,জীবনের সব লোভ ও আয়েশ পরিত্যাগ করে তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময়টি পরিবার পরিজন গরীব দুঃখী সেবা ও আল্লাহ ও আহলেবাইতের ইবাদত বন্দেগী ও ধ্যানে কাটিয়ে দেন। মহিয়সী নারী সৈয়দা হোসনে আরা বেগমের সততা দেশপ্রেম ভালবাসা ও ত্যাগ বাংলাদেশের ইতিহাসেসর্বকালে সমুজ্জ্বল হয়ে থাকবে। স্বামী পরিবার-পরিজন সৈয়দা হোসনে আরা বেগমকে বিশেষ স্নেহ ও সম্মানের দৃষ্টিতে দেখতেন। তিনি সহৃদয়তা ও দয়ার উজ্জ্বল প্রতীক হিসেবে ইতিহাস পাঠকের নিকট চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। বাংলা ভূমি তাঁকে মর্যাদার আসন দিয়েছে এবং বাংলার জনগণও তাকে সব সময়ে সম্মান দেখিয়ে আসছে।

সৈয়দা হোসনে আরা বেগম আজীবন রোজ সকাল সন্ধ্যায় মোমবাতি, আগরবাতি জ্বালিয়ে কোরআন পাঠ করতেন। তিনি প্রতিদিনই নামাজ আদায় করে আল্লাহার দরবারে দেশবাসীর মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করতেন। আর এ ভাবে অশ্রু বিসর্জন করতে করতেই একদিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বঙ্গীয় এ মুসলিম নারী তাঁর জীবন কালে যে উন্নত নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধের পরিচয় দিয়েছিলেন তা প্রশংসনীয়।

তিনি প্রতিবেশী দীন-দুঃখী নর-নারী ও অভাবগ্রস্থ আলেম-উলামাদের মধ্যে প্রিতিনিয়ত দান খয়রাত করতেন। প্রায় সারা বছরই রোযা রাখতেন তিনি। তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও ব্যবহার ছিলো অতীব মধুর।

সকলে তাঁকে সমানভাবে শ্রদ্ধা জানাতো এবং তারা তাকে ‘বেগম আম্মা’ বলে সম্বোধন করতো। জনসাধারণ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবাদিতে ‘বেগম আম্মার’ সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করতো। দূর-দূরান্ত হতে বহু হতাশ রোগী হাযির হতো বেগম আম্মার দোয়ার জন্য। যা সাধারণ মানুষের তার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাবোধের পরিচয় বহন করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.