সিরাজগঞ্জে পুলিশের কর্মবিরতি, ১১ দাবিতে বিক্ষোভ

মোঃ লুৎফর রহমান লিটল সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : বৈষম্য মুক্ত পুলিশ গঠনের দাবিতে সিরাজগঞ্জে বিক্ষোভ ১১ দফা দাবিতে বাংলাদেশ পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মবিরতি পালন করছেন সিরাজগঞ্জে জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে জেলা পুলিশ লাইন্সের রিজার্ভ অফিসের সামনে ১১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেন কর্মরত পুলিশ সদস্যরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায় ও দোষি পুলিশের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচিও পালন করেছে তারা।
বিক্ষোভ কর্মসূচীতে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (এস.আই) শাহিন মাহমুদ বলেন, পুলিশ সদস্যরা বিগত ১৫ বছরে অধস্তন কর্মকর্তাদের সাথে বিসিএস পুলিশ অফিসারদের বিভিন্ন অন্যায়য়ের কথা তুলে ধরে তাদের শাস্তির দাবি করেন। একই সাথে পুলিশ সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তার দাবিও ১১ দফা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মে না ফেরার হুশিয়ারী দেন তারা।
বৈষম্য মুক্ত বাংলাদেশ পুলিশ গঠনের ১১ দফা দাবিগুলো হলো, স্বাধীন কমিশন গঠন, পুলিশ বাহিনীকে সংস্কার করে দলীয় প্রভাব মুক্ত জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করতে হবে। আমরা যে রংয়ের ইউনিফর্ম পরিধান করে কলংকিত হয়েছি সেই পোষাকের রং পরিবর্তন করে কনস্টবেল থেকে আইজি পর্যন্ত একই ড্রেসকোড হতে হবে। সেই সঙ্গে চলমান  সংহিসতায় পুলিশ সদস্য আহত ও নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, যে সকল দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে জানমালের নিরাপত্তার জন্য আগ্নেযাস্ত্র ব্যবহার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকারের বিভাগীয় ব্যবস্থা অথবা হয়রানি করা যাবে না। সকল পুলিশ সদস্যদের অন্যান্য সংস্থার চাকুরীর মতো শ্রম আইন অনুযায়ী ৮ ঘন্টা কর্মঘন্টা নিশ্চিত করতে হবে। রাস্ট্রের প্রয়োজনে যদি ৮ ঘন্টার বেশি দায়িত্ব পালন করতে হয় তাহলে ওভার টাইম হিসাবে গন্য করতে হবে। এই দাবিসহ ১১টি দাবি তুলে ধরেছে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন থানায় কর্মকর পুলিশ সদস্যরা।
এসময় বিক্ষোভে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইয়ামিন, এস.আই মো. জসিম, এস.আই রাসেলসহ প্রায় শতাধিক পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, (গত ৪ আগষ্ট) বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের ব্যানারে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা থানায় হামলা চালিয়ে ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। সেই নিহত পুলিশ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া করেছেন তারা।
নিহতরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদরের মহারাজপুর গ্রামের মাহতাব মন্ডলের ছেলে ও এনায়েতপুর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক, পাবনার সুজানগর উপজেলার ভাদরভাগ গ্রামের শাহাদৎ হোসেন খানের ছেলে এসআই রইজ উদ্দিন খান, একই উপজেলার মানিকহাট গ্রামের প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের ছেলে এসআই প্রনবেশ কুমার বিশ্বাস, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার জলঢাকা বাজার এলাকার খলিরুর রহমান মন্ডলের ছেলে এসআই মো. তহছেনুজ্জামান, দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার দেবকুন্ডা গ্রামের মনছুর আলী মোল্লার ছেলে আনিছুর রহমান মোল্লা, নওগা সদরের কোমায়গাড়ি গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে এএসআই ওবায়দুর রহমান, পাবনা সুজানগর উপজেলার খয়রান গ্রামের সেকেন্দার আলী মল্লিকের ছেলে কনস্টেবল আরিফুল আযম, একই উপজেলার খাপুর গ্রামের আবু জাফরের ছেলে কনস্টেবল রিয়াজুল ইসলাম, নওগার পত্নীতলা উপজেলার আমন্তপুর গ্রামের তোজাম্মেল হক শাহের ছেলে কনস্টেবল রবিউল আলম, পাবনার সাথিয়া উপজেলার হাঁড়িয়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে কনস্টেবল হাফিজুল ইসলাম, পাবনার ফরিদপুর উপজেলার আগপুংগলী গ্রামের আল আমিন মোল্লার ছেলে কনস্টেবল আব্দুস সালেক, রাজশাহীর গোদাগাড়ি উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের লোকমান আলীর ছেলে কনস্টেবল লোকমান আলী ও একই উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে কনস্টেবল শাহিন উদ্দিন। ঢাকায় রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত দুজনের মধ্যে এসআই নাজমুলের নাম জানা গেলেও অপর কনষ্টেবলের নাম পরিচয় বিস্তারিত জানা যায়নি

Leave a Reply

Your email address will not be published.