স্বতঃস্ফূর্ততা”কে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে——-আ স ম রব

হাকিকুল ইসলাম খোকন, প্রতিনিধি আমেরিকাঃ  জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন— গণঅভ্যুত্থান বা বিপ্লব কিংবা সংগ্রাম শুধু মাত্র স্বতঃস্ফূর্ততায় সফল হয় না। বরং শেষ পর্যায়ে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। আন্দোলন-সংগ্রাম তখনই সাফল্য লাভ করে যখন তা লক্ষ্য অর্জনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে এবং সংগ্রামীতত্ত্ব সমৃদ্ধ নেতৃত্ব এবং নিষ্ঠ সংগঠন দ্বারা পরিচালিত হয়। ফ্যাসিবাদী মতাদর্শের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক-রাজনৈতিক সংগ্রাম বা লড়াইকে পরিচালিত করতে হবে গণমানুষের মতাদর্শে দীক্ষিত যৌথ নেতৃত্বে পরিচালিত সংগঠন দ্বারা।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর আমাদের করণীয় হচ্ছে— ফ্যাসিবাদ উচ্ছেদ ও ফ্যাসিবাদীব্যবস্থা বিলোপ ক’রে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা এবং শাসনপদ্ধতি প্রবর্তন করা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি ,শনিবার জেএসডি কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভায় সভাপতির বক্তৃতায় আ স ম রব এসব কথা বলেন।

সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন— রাজনৈতিক প্রস্তাবনা উত্থাপন করেন। রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন বাস্তবতা হাজির হয়েছে। শাসনব্যবস্থা রূপান্তরের মাধ্যমে জনগণের মুক্তির প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। শুধু রাজনৈতিক দল নয়, বাংলাদেশের শাসন-ক্ষমতা রূপান্তরের জন্য বিকশিত সমাজশক্তিকে রাজনৈতিক-সংগ্রামে উপনীত ক’রে রাষ্ট্রক্ষমতার অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এটাই রূপান্তরের পথ। এটাকেই সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করতে হবে। এ যাবৎ বাংলার মানুষ আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে বারবার আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। জনগণ তথা শ্রমজীবী-কর্মজীবী এবং পেশাজীবীসহ সকল স্তরের নারী, পুরুষ, কিশোর, যুবা, আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার ব্যাপক অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশে একাধিকবার গণঅভ্যুত্থানও সংঘটিত হয়েছে; কিন্তু জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা কখনোই বাস্তবায়িত হয়নি। জনগণ বারবার প্রতারিত হয়েছে। প্রচলিত রাজনৈতিকধারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে পারেনি। ফলে জনগণ ঘরে ফিরে যাওয়ার সাথে-সাথে বারবারই আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে।
বারবার এই ‘বিশাল গণআন্দোলন’ এবং ‘গণঅভ্যুত্থান’র পর প্রত্যাশিত আশা-আকাঙ্ক্ষা অর্জনে ‘হতাশা আর ব্যর্থতা’র উপর্যুপরিচক্র থেকে জাতিকে বের হয়ে আসতে হবে। সফল গণঅভ্যুত্থান সংঘটনে যেমন প্রয়োজন তেমনি দেশ ও জাতি বিনির্মাণেও সকল শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবীর অংশীদারিত্ব দরকার। এ জন্য দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সকল শ্রমজীবী-কর্মজীবী-পেশাজীবী জনগণের অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিনিধিত্ব এবং কৃত্যভিত্তিক প্রশাসন কায়েমই হবে, গণঅভ্যুত্থানের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের স্থায়ীরূপ। তাহলেই আর বারবার রক্তাক্ত গণঅভ্যুত্থানের প্রয়োজন হবে না। কারণ, এই প্রক্রিয়ায় গণঅভ্যুত্থানের অংশীজনরাই রাষ্ট্রবির্নিমাণে নিয়োজিত থাকবেন। এতে জনগণের অন্তর্ভুক্তিমূলক স্বশাসন কায়েম হওয়ায় ফ্যাসিবাদও সমূলে উৎপাটিত হবে।
স্বাধীন দেশের উপযোগী ও জনগণের অভিপ্রায়মুখী গণমানুষের শাসনব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্য অর্জনে দেশে দ্বিতীয় ধারার রাজনীতির অনুসারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন এবং কার্যকর ঐক্যের জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণও আবশ্যক। সুতরাং ফ্যাসিবাদীব্যবস্থা উচ্ছেদে অংশীদারিত্বের গণতন্ত্রের মতাদর্শের ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিকশক্তি গড়ে তোলার প্রয়োজনীয় ও কার্যকর উদ্যোগ জেএসডিকেই গ্রহণ করতে হবে।

জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বক্তব্য রাখেন তানিয়া রব, অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার,বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী,এ কে এম মিজান উর রশিদ চৌধুরী, সোহরাব হোসেন,দেওয়ান ইস্কান্দার রাজা চৌধুরী, আমিন উদ্দিন বিএসসি, আবদুল লতিফ খান, অ্যাডভোকেট মিয়া হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঈনুর রহমান,অ্যাডভোকেট সৈয়দ বেলায়েত হোসেন বেলাল, মোশাররফ হোসেন, লোকমান হাকিম,বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান মতি, অধ্যক্ষ আব্দুল মোতালেব, আমির উদ্দিন,কামাল উদ্দিন মজুমদার সাজু, এস এম শামসুল আলম নিক্সন, ইকবাল খান জাহিদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আবদুল মান্নান মুন্সি,লোকমান হোসেন বাবলু, নুরু রহমান, সৈয়দ বিপ্লব আজাদ, মুজতোবা কামাল, ইকবাল হোসেন,আজম খান,অধ্যক্ষ হারুনুর রশীদ বাবুল,মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন,শফিউল আলম,এডভোকেট শামসুদ্দিন মজুমদার সাচ্ছু,ফারহান হাবিব,মীর জিল্লুর হাকিম,হাবিবুর রহমান মাষ্টার,স ম রেজাউল করিম,আজগর আলী,আমানুল্লাহ খান সহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *