শামীম আখতার, বিভাগ (খুলনা)ঃ কেশবপুরে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মাদ্রাসা পড়ুয়া এক ছাত্রসহ দু’জন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ উভয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় পৃথক-পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
থানা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গড়ভাঙ্গা গ্রামের মনিরুল ইসলাম মোড়লের ছেলে ফারুক হোসেন (১৬) স্থানীয় গড়ভাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেনীতে পড়াশোনা করতো। তার পিতা পেশায় একজন ভ্যান চালক। তাদের সংসার চলতো অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে। ফারুক হোসেন অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন সময় পিতা-মাতার নিকট মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য বায়না ধরে আসছিলো। গত ৩ মার্চ সন্ধ্যার সময় স্থানীয় গড়ভাঙ্গা বাজারে পিতার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে তার কথা-কাটাকাটিসহ মনোমালিন্য হয়। পরবর্তীতে ফারুক হোসেন গড়ভাঙ্গা বাজার থেকে ফিরে এসে পিতার উপর অভিমান করে তাদের বাড়ীর পার্শ্বে জনৈক আঃ বারিক মোড়লের আম বাগানের একটি আমগাছের ডালের সাথে গলায় গামছা পেচিয়ে আত্মহত্যা করে। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন তাকে বাড়ীতে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোজাখুজি শুরু করে। খোজাখুজির একপর্যায়ে ফারুক হোসেনের দাদা লুৎফর মোড়ল (৬৫) রাতে আমগাছের ডালের সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে দেখে ডাক-চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন ঘটনাস্থলে এসে ফারুক হোসেনকে নিচে নামিয়ে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষনা করে। আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
অপরদিকে, বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়নের কালিয়ারই মাঠপাড়া গ্রামের সাইফুল আলমের স্ত্রী ফারজানা বেগম (২৮) একজন মানুষিক রোগী ছিলেন। বিবাহের পর থেকে বেশীরভাগ সময় তার পিতার বাড়ীতে থাকতো। গত ১০ দিন আগে সে স্বামীর বাড়ী থেকে চলে এসে কালিয়ারই পিতার বাড়ীতে আসে। সে পিতার অবস্থানকালে ৪ মার্চ সকালে বাড়ীর সকলের অগোচরে পিতার বসতঘরের আঁড়ার সাথে ব্যবহৃত ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। পরবর্তীতে তার মা দেখতে পেয়ে তার ডাকচিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে ওড়না কেটে নিহতের মৃতদেহটি নিচে নামিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জহিরুল আলম বলেন, মাদ্রাসা পড়ুয়া এক ছাত্রসহ দুজনের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় পৃথক পৃথক অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় উভয়ের মরদেহ পরিবারের লোকজনের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে, এখানকার মানুষ খুবই আবেগ প্রবণ। সামান্য তুচ্ছ ঘটনায় এ উপজেলায় আত্মহত্যার প্রবণতা অনেকটা বেশি। পারিবারিক কলহ, অভাব-অনটন জনিত হতাশা থেকে আত্মহত্যা বেশি হয়ে থাকে।