নওগাঁয় নির্যাতনের পর স্ত্রীর মাথার চুল কেটে নিলো এক পাষণ্ড স্বামী

মোহাম্মদ আককাস আলী প্রতিনিধি নওগাঁর মহাদেবপু : নওগাঁর মহাদেবপুরে নির্যাতনের পর স্ত্রীর মাথার চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পাষণ্ড স্বামীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ওই গৃহবধূর স্বামী মিনহাজ হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে ঈদের পরের দিন গত রোববার বিকালে উপজেলার শিবরামপুর দক্ষিণপাড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রায় ৪ বছর পূর্বে একই গ্রামের হারুন অর রশিদের মেয়ে হেরা খানমের (২০) সঙ্গে জিয়াউল হকের ছেলে মিনহাজ হোসেনের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে আড়াই বছরের একটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই মিনহাজ যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করে আসছিলেন। ঈদের পরের দিন রোববার বিকালে আবারও যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী হেরা খাতুনকে হাত-পা বেঁধে ঘরে আটকে রেখে মারপিট করতে থাকেন তিনি।
মারপিটের একপর্যায়ে কাঁচি দিয়ে তার মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেয়। পরে তার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ঘরে আটকে রেখে পালিয়ে যান স্বামী মিনহাজ। সন্ধ্যার দিকে তার চেঁচামেচিতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। খবর পেয়ে পরদিন সোমবার বিকালে হেরার বাবা-মা ঢাকা থেকে এসে মেয়ের চিকিৎসা করান।
গৃহবধূ হেরার বাবা হারুন জানান, অভাবের সংসারে পেটের দায়ে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ঈদেও বাড়ি আসতে পারেননি তারা। মেয়েকে নির্যাতনের খবর পেয়ে সোমবার বিকালে ঢাকা থেকে এসে মেয়ের চিকিৎসা করান। তার মেয়ে এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে জামাই মিনহাজ তার মেয়েকে নির্যাতন করে আসছে। রোববার বিকালে আবারও যৌতুকের দাবিতে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে ৩-৪ ঘণ্টা ঘরে আটকে রেখে মাথার চুল কেটে দিয়েছে। জামাই মিনহাজ এর আগে তাকে এবং তার মেয়েকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাতসহ বিভিন্ন সময়ে মারপিট করেছে।
এ ঘটনায় হারুন অর রশিদ বাদী হয়ে মিনহাজ হোসেনকে আসামি করে মহাদেবপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।
ওসি মো. শাহীন রেজা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মিনহাজকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *