নওগাঁর কাগজের ফুল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন বৈশাখী মেলায়

মোহাম্মদ আককাস আলী প্রতিনিধি মহাদেবপুর : বৈশাখ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে মেলা। সেসব মেলায় কাগজের ফুলের যোগান দিতে নানা রংয়ের বাহারি কাগজ, কাপড় ও শোলা দিয়ে ফুল তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর আত্রাইয়ের জামগ্রামের ফুল কারিগররা। তারা স্টার, চর্কি, মানিক চাঁদ, গোলাপ, সূর্যমুখী, কিরণমালা, জবা, বিস্কুট, গাঁদাসহ বিভিন্ন নামের বাহারি নাম আর ডিজাইনের ফুল তৈরি করছেন।
প্রায় ৪০ বছর আগে ওই গ্রামের ২-৩টি হিন্দু পরিবার এই ফুল তৈরির কাজ শুরু করেন। এখন তাদের হাত ধরে পুরো গ্রামের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস এই ফুল তৈরি। বর্তমানে ওই গ্রামের প্রায় ৪০০ পরিবার এই বাহারি ফুল তৈরির কাজে নিয়োজিত। সংসার দেখভাল করার পাশাপাশি গ্রামের নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, ছোট-বড় সবাই এই ফুল তৈরি করার কাজ করে থাকেন।
পহেলা বৈশাখে এই ফুলের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে দুই ঈদে, বিভিন্ন পূজা ও মেলায়ও এই ফুল বিক্রি করা হয়। কেউবা কাপড়, কাগজ আর বাঁশসহ নানা উপকরণ দিয়ে সকাল থেকে রাত অবধি ফুল তৈরির কাজ করে চলেছেন। পরিবারের একজন নয়, ফুল তৈরির এ কাজ করছেন পরিবারের সকলেই। বিশেষ করে বাড়ির নারীরা সংসারের কাজ-কর্ম সেরে তৈরি করছেন এসব বাহারি ফুল। খুব বেশি পরিশ্রম না হলেও ধৈর্য সহকারে করতে হয় এই কাজগুলো।
ফুল তৈরির পর পুরুষরা বিক্রির জন্য চলে যায় জেলা ও জেলার বাহিরে। তারা ১৫-২০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করে ফুলগুলো বিক্রি শেষ করে পুনরায় বাড়ি ফেরেন। এতে করে বাৎসরিক একটি বড় অংকের আয়ও করে থাকেন ফুল কারিগররা।
জামগ্রামের ফুল কারিগর দুলু বলেন, “প্রথমে আমার দাদা, এরপর আমার বাবা। তারা গত হওয়ার পর আমিও দীর্ঘ ২০ বছর ধরে এই ফুল ব্যবসা করে আসছি। এসব ফুল তৈরির উপকরণ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আনা হয়। সেগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করে ফুলে রূপান্তরিত করা হয়।”
 জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, “সৌখিন মানুষ ও শিশুদের কাছে এই বাহারি কৃত্রিম ফুলগুলোর চাহিদা অনেক বেশি। এই ফুল কারিগররা বাংলার সাংস্কৃতিক উৎসবকে বর্ণিল করতে বিশেষভাবে ভূমিকা রাখছেন। শুধু পহেলা বৈশাখ নয়, বিভিন্ন গ্রামীণ মেলার সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যাপক ভূমিকা রাখে এই জামগ্রামের ফুল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *