নড়াইলে ভূমি অধিগ্রহন জটিলতার কারণে সাড়ে ৫কোটি টাকার সেতু নির্মাণের দরপত্র বাতিল

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে: নড়াইলের কালিয়ায় ঠিকাদার নিয়োগের নয় মাস পর ভূমি অধিগ্রহন জটিলতার কারণে প্রস্তাবিত কলাবাড়িয়া সেতুর নির্মাণ কাজের দরপত্র বাতিল করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল থেকে জানান, একই সঙ্গে বাতিল হয়েছে ঠিকাদারকে দেয়া কার্যাদেশ। গত ৩১ মে দরপত্র বাতিলের ঘটনাটি অতি সম্প্রতি জানাজানি হলে সেতুটি নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয়দের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর ব্যায় বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৫৫ হাজার ৬০৬ টাকা ।
 কালিয়া উপজেলা প্রকৌশলীর অফিস সুত্রে জানা গেছে, বিগত ১৯৮৫ সালে কালিয়া তথা নড়াইলের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য কালিয়া-গোপালগঞ্জ সড়কের কলাবাড়িয়া নামক স্থানে চিত্রা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ। দীর্ঘ দিন সেতুটি মেরামত না করায়, গত ২০২০ সালের ১৫ আগষ্ট সকালে সেতুর মাঝখানের একটি অংশ ভেঙে পড়ে।এরপর তার পাশে নতুন করে একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। সে অনুযায়ী গত ২০২২ সালের ১৯ জুলাই ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৫৫ হাজার ৬০৬ টাকা ব্যায় বরাদ্দ ধরে ঠিকাদার নিয়োগের জন্য দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে ওই বছর ২৩ আগষ্ট নড়াইলের ‘আলমগীর এসইজেভি’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়।
কিন্তু নতুন এসেতুটি নির্মাণের জন্য নির্ধ্বারিত স্থানে ভুমি অধিগ্রহন জটিলতার কারণে ঠিকাদার নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শুরু করতে না পেরে কাজের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত ভাবে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। গত ৩১ মে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ দরপত্র ও কার্যাদেশ বাতিল করে। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং প্রকিয়াটি শেষ হলে নতুন দরপত্র আহ্বান করাসহ ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে।
কলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহামুদুল হাসান কায়েস বলেন, কালিয়ার মানুষের গোপালগঞ্জ তথা রাজধানী ঢাকার সাথে সরসরি যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সেটুতি নির্মাণ অতি জরুরী হয়ে পড়েছে। এই এলাকার মানুষের জীবন মানের উন্নয়নের জন্য দ্রুত ভূমি অধিগ্রহনসহ সেতুটি নির্মাণের জোর দাবি জানাচ্ছি।
ঠিকাদার আলমগীর স্বপন বলেন, কার্যাদেশ পাওয়ার পর জমি অধিগ্রহন জটিলতার কারণে কর্তৃপক্ষ আমাকে কাজটি বুজিয়ে দিতে না পারায়, কাজ শুরু করা যায়নি। তার ওপর আবার নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ করবেন না বলে চুক্তি বাতিলের জন্য কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানানো হয়েছিল।
কালিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুনু সাহা বলেন, সেতুটিতে ভারী যান চলাচল ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই ভারি ও মাঝারি যান চলাচল বন্দ করতে সেতুর দুই পাশে পিলার পুতে রাখা হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহনসহ সেতুর কাজটি যাতে দ্রুত সম্পন্ন করা যায় সে বিষয়ে উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সাথে আলোচনা করা হয়েছে।
নড়াইলের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিত কুমার কুন্ডু বলেন, পুরাতন এই  সেতুর পাশে একটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য নিয়ম অনুযায়ী একজন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়ে ছিল। কিন্তু ভূমি অধিগ্রহন জটিলতার কারণে ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি। চুক্তিটি বাতিল করা হয়েছে।  প্রস্তাবিত সেতুর জন্য নির্ধ্বারিত স্থানের ভূমি অধিগ্রহনের প্রক্রিয়া শেষ হলে আবার দরপত্র আহ্বান করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.