আর মাত্র ১দিন পর হতে যাচ্ছে বেনাপোলের বহু কাঙ্খিত পৌরসভা নির্বাচন।। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচার- প্রচারনায় প্রার্থীরা

বেনাপোল প্রতিনিধিঃ নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আর মাত্র ১ দিন পর হতে যাচ্ছে বহু আকাঙ্খিত বেনাপোল পৌর সভা নির্বাচন। দীর্ঘ ১২ বছর পর এই নির্বাচন উপলক্ষে বইছে বেনাপোল পৌর এলাকা সহ গোটা শার্শা উপজেলায় উৎসব এর ইমেজ। ১৭ জুলাই সকাল থেকে শুরু হবে বেনাপোল পৌর সভার ৯ টি ওয়ার্ডের ১২ টি কেন্দ্রে ভোট। নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী ও বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দিন, সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছে সাবেক বিএনপি নেতা ও সাবেক বেনাপোল সিএন্ড এফ এ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি মফিজুর রহমান সজন ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নিবেদীত কর্মী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড ফারুক হোসেন উজ্জল।

দীর্ঘদিন পর এই নির্বাচনে বেনাপোলে তিনজন মেয়র প্রার্থী এবং ৬৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী ও ৩০ জন সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী লড়ছেন। গত ৩১ মে নির্বাচন কমিশন এর ঘোষনা অনুযায়ী এবং ২৬ জুন প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচার- প্রচারনায় সরগরম বেনাপোল পৌর এলাকা। নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীরা দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। এবং প্রচার – প্রচারনায় সীমান্ত ঘেষা এই বেনাপোল শহরে প্রার্থীরা দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।

এরই মধ্যে সাধারন ভোটাররা নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়ে ও তুলেছেন প্রশ্ন। তবে ইভি এম পদ্ধতিতে কোন প্রকার অনিয়ম হয় না এবং হবে না সে ব্যাপারেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানারো হচ্ছে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। কোন প্রকার অনিয়মের সুযোগ নেই।

এদিকে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর নানা ধরনের আশ্বাস দিয়ে ভোটারদের মাঝে প্রচার করছে এসব প্রার্থীরা।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতিকের প্রার্থী নাসির উদ্দিন বলেন, বেনাপোল পৌর সভা বহু আকাঙ্খীত একটি নির্বাচন হতে যাচ্ছে দীর্ঘ ১২ বছর পর। কোন প্রকার অনিয়ম পেশী শক্তি ব্যাবহার ও নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হতে দেওয়া যাবে না। নির্বাচন হবে অবাধ ও সুষ্ঠু। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজ পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের পর দেশের মানুষ আরো বড় বড় স্বপ্ন দেখছে। তবে সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে এক মাত্র বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। বেনাপোল সহ গোটা শার্শা উপজেলা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট এর পর ছিল উন্নয়ন বঞ্চিত। দীর্ঘ দিন পাকিস্তানী ভাবধারার মানুষ রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশ উন্নয়নে পিছিয়ে গেছে। তবে ১৯৯৬ সালে দীর্ঘ ২১ বছর পর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক উন্নয়ন করে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু কর্নফুলি ট্যানেল মেট্রো রেল সহ রাস্তাঘাট এবং অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে ভোট দিতে হবে। তিনি বলেন বেনাপোল পৌরসভার অসমাপ্ত কাজ করা হবে। এখানে সব থেকে বেশী প্রয়োজন একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মান। আমি সকলকে সাথে নিয়ে বেনাপোলের জনগুরুত্বর কথা তুলে ধরব মাননিয় প্রধান মন্ত্রীর কাছে।

আওয়ামীলীগের প্রার্থী নাসির উদ্দিন আরো বলেন, আজ দেশে মুক্তি যোদ্ধা বাবাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা ভাতা দিয়ে সন্মানিত করেছেন। তিনি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, পঙ্গু ভাতা মাতৃত্ব কালীন ভাতা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের বিকল্প কিছু নেই। পৌর নির্বাচন সহ আগামি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতিককে বিজয় করার জন্য সকলকে আহবান জানান।

এদিকে সতন্ত্র প্রার্থী মফিজুর রহমান সজন ও বেনাপোলে হাসপাতাল নির্মান এর গুরুত্ব দিয়ে নানা প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি নির্বাচন উপলক্ষে প্রচার- প্রচারনায় বাধা বিঘ্নর সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানান। তিনি বলেন আমি প্রশাসনের কাছে দাবি রাখব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্টু করার জন্য। তাতে যে জয়ী হবে তাকে বিজয়ের মালা পরানো হবে।

এদিকে আর এক সতন্ত্র প্রার্থী ফারুক হোসেন উজ্জল বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসাবে আমার অনেক দায়িত্ব কর্তব্য রয়েছে। বেনাপোলের মানুষ এর কাছে আমার দাবি থাকবে আমাকে ভোট দিয়ে বেনাপোল এর উন্নয়ন করার সুযোগ দিতে।

তবে সাধারন ভোটাররা মনে করেন, বেনাপোল সহ সারা দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে তা বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সময় । এত উন্নয়ন ১৯৭৫ এর ১৫ আগষ্ট এর কোন সরকার করতে পারেনি। তাই দেশকে আরো উন্নয়ন এবং সুখি সমৃদ্ধ করতে একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামীলীগকে আবারও রাষ্ট্র ক্ষমতায় আনতে হবে।

বেনাপোল পোর্ট থানা ওসি কামাল হোসেন ভুইয়া বলেন বেনাপোল পৌর সভা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্টু হবে সে ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। তিনি বলেন,ইতিমধ্যে বেনাপোল পৌর নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাথে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার জন্য কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে।

শার্শা উপজেলা নির্বাচন কমিশনার সৌমেন বিশ্বাস ছন্দর কাছে নির্বাচন কেমন হবে এবং ঝুকি পুর্ন কোন কেন্দ্র আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন যাতে সুষ্ট’ অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় সে ব্যাপারে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। নির্বাচনে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, ডিবি সহ সকল প্রকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন পরিবেশ বজায় রাখতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.