জয়পুরহাটে কালাইয়ে যান্ত্রীক পদ্ধতিতে আমনের চারা রোপণের উদ্বোধন

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার জনপ্রিয় করতে গ্রামের বিস্তীর্ণ জমি একত্রিত করে শুরু হয়েছে সমালয় পদ্ধতিতে চাষাবাদ। ট্রেতে বীজ বপন করে উৎপাদিত ধানের চারা রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রের মাধ্যমে মাঠে রোপন করা হচ্ছে। এতে ফসল পরিপক্ক হলে কৃষকেরা কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে তাদের ক্ষেত কেটে ঘরে তুলতে পারবে।

ট্রেতে বীজ বোপনের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় পরিপক্ক চারা উৎপাদন করে জয়পুরহাটের কালাইয়ে যান্ত্রীক পদ্ধতিতে সমলয়ে আমন ধান চাষাবাদে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে চারা রোপণ পদ্ধতির উদ্বোধন করা হয়েছে। খরিপ মৌসুমে কৃষি প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় সমলয়ে রোপা আমন ধান চাষাবাদে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের বালাইট মাঠে এসব পরিপক্ক চারা শ্রমিক ছাড়াই যান্ত্রীক পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়।

এ উপলক্ষ্যে বালাইট মাঠে স্থানীয় কষকদের নিয়ে সমাবেশের আয়োজন করেন কৃষি অফিস। এতে সভাপতিত্ব করেন কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জান্নাত আরা তিথি। সমাবেশে বক্তব্য দেন জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছাঃ রাহেলা পারভীন, অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায়, আহম্মেদাবাদ ইউপি’র চেয়ারম্যান আলী আকবর মন্ডল।

সমাবেশ থেকে বের হয়ে স্থানীয় কৃষকরা বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে মাটিতে ধানের চারা রোপন করতে গিয়ে মাটি ভেঙে বীজতলা নষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু সমালয় পদ্ধতিতে যন্ত্রের মাধ্যমে নিখুঁতভাবে চারা রোপন সম্ভব হচ্ছে। যন্ত্র দিয়ে খুব অল্প সময়েই বিঘার পর বিঘা জমিতে নিখুঁতভাবে ধানের চারা রোপন করা যায়। এতে সঠিক পরিমাপে ও দূরত্বে চারা রোপিত হওয়ায় অপচয়ও কমছে। শুধু তাই নয়, এই পদ্ধতিতে ফসলি জমিতে পোকা মাকড়ের বিস্তার রোধ, রোগ ও বালাই দমন সহজতর হওয়ার পাশাপাশি কৃষি শ্রমিক নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না আমাদের। যা আজ নিজ চখেই দেখলাম।

উপজেলা কৃষি অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, সমালয়ে ধান চাষ পদ্ধতিতে বিস্তীর্ণ জমি একত্রিত করে একই সময়ে একই সঙ্গে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদের আওতায় আনা হয়ে থাকে। ট্রেতে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় বীজতলা। চারা হতে সময় নিয়েছে ১৩ দিন। সেখান থেকে চারা নিয়ে জমিতে রোপন করা হচ্ছে। খরিপ মৌসুমে কৃষি প্রনোদনা কর্মসূচির আওতায় সমলয়ে এবার কালাই উপজেলার ৭৫ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে এ পদ্ধতিতে ধানের চাষাবাদ হচ্ছে। সমালয় কর্মসূচির আওতায় জমিতে যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপন থেকে কর্তন পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। এই পদ্ধতিতে শ্রমিক সংকট ছাড়াও নানা প্রতিবন্ধকতা দূর হবে। এতে উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি ধান চাষে লাভবান হবে কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোছাঃ রাহেলা পারভীন বলেন, সমালয় চাষের মাধ্যমে বেশি শ্রমিকের আর প্রয়োজন হবে না। এতে উৎপাদন খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। লাভবান হবেন কৃষকরা। সমালয়ের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃষিযন্ত্র ব্যবহার করে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমানো। এ পদ্ধতিতে বিঘা প্রতি ফলন সনাতন পদ্ধতির চেয়ে ১০-১৫% বৃদ্ধি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.