কালাইয়ে নার্সারী করে সাবলম্বী বেলাল হোসেন

মোঃ মোকাররম হোসাইন, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ নার্সারীতে শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। গাছের চারা দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায়।জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র তিনমাথা বাজারে জেসমিন নার্সারী বানিজ্য ভাবে চারা উৎপাদন করে আর্থিকভাবে লাভবান ও স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। নার্সারী থেকে নানা প্রজাতির চারা স্থানীয় বাজার ছাড়াও যাচ্ছে এ অন্চলের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা হয়।যার কারণে জেসমিন নার্সারী বানিজ্য ভাবে বেশ পরিচিত লাভ করেছে। নার্সারী ব্যবসায় আপনাকে প্রথমে যে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটা শিখতে হবে তা হলো গাছ পরিচর্যা করা।সব সময়ই আমি নার্সারীর গাছের চারা পরিচর্যা ও গুটি কলম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মেধা ও শ্রম দিয়ে গড়ে তুলেছেন নার্সারী। তিনি আরও বলেন,আমি প্রায় ১৪ বছর ধরে এই নার্সারী ব্যবসা করে যাচ্ছে। প্রতিটি গাছ পাইকারি বিক্রি করি ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয় ।নার্সারীর পাশাপাশি কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত।নিজের জায়গা জমি না থাকায় অন্যের বর্গা জমিতে প্রথমে শুরু হয় চারা উৎপাদন। তখন থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

তিনি এ উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত মোজাহার আলী ফকির ছেলে বেলাল হোসেন (৫০) ফকির।

বেলাল হোসেন বলেন, আমি এখন নিজস্ব ৫০শত জমিতে দুইটি নার্সারী গড়ে তুলেছি।বিঘাপ্রতি আট থেকে দশ হাজার পর্যন্ত চারা বিক্রি করা যায়। একটি চারা তৈরি করতে খরচ হয় আড়াই থেকে তিন টাকা ।আর সেই চারা পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে বিক্রি করতে হয়।সার বীজ সেচ পরিচর্যা ও পরিবহন খরচ বাদে ওই ৫০শত জমির চারা বিক্রি করেন ,অন্তত বছরে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চারা বিক্রি করেন। এ নার্সারী থেকে তিনি প্রতি বছর অন্তত ৬০ হাজার টাকার টাকা লাভ করেন। তিনি আরও বলেন এ নার্সাারী থেকে ক্রেতারা চারা কিনতে আসেন অনেক দূর দুররান্ত থেকে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে , সে খানে মাটির বেডে চারা রোপণ, বেড প্রস্তুতের কাজও চলছে ।আবার কিছু কিছু চারা রোপণের জন্য জমি তৈরি করা হচ্ছে । সে খানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির আম গাছের চারা গুলো হচ্ছে , বারিফর, কুয়াপাহারী, হাড়িভাঙ্গা, দিশাহারা, আম রুপালী, বানানা, কাটিবন, ফিউজার,লাকফজলি সহ প্রায় সব ধরনের আম গাছের চারা বিক্রি করেন। এছাড়া ও নার্সারীতে ফলের চারা ও ফলজ,বনজ, ওষুধী, গাছের চারা পাওয়া যায়। তিনি বলেন নার্সারী একটি লাভজনক ব্যবসা ।তাই ধান চাষ কমিয়ে দিয়ে নার্সারি করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।তিনি আরও বলেন,সরকারি ভাবে বনবিভাগের পক্ষ থেকে তাদের উৎসাহ এবং বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়।

বেলাল হোসেন বলেন,নার্সারীর আয় দিয়েই সংসার চলে ও ছেলে মেয়ে পড়াশোনা খরচ চালাচ্ছি ।আমার পরিবারের সদস্য সংখ্যা মোট ৫ জন।বড় ছেলে কাউছার লেখাপড়া শেষ করে একটি প্রাইভেট ঔষুধ কোম্পানিতে চাকরী করেন।সংসার চালানোর পর বাড়তি টাকা সঞ্চয় করেন। নার্সারী করে তিনি যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি খুব ভালো আছেন। সব মিলিয়ে এই নার্সারী দিয়ে আমি সফল ভাবে জীবন যাপন করছি।

বেলাল হোসেন বলেন,বেকার যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, জমি লিজ নিয়ে নার্সারী করে বেকার যুবকরা সাবলম্বী হতে পারেন। নার্সারী একটি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা। এ ব্যবসায় আসলে ভালো করার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। নতুন প্রজন্ম এ ব্যবসায় আসলে তারাও লাভবান হবেন।

কালাই উপজেলার বনবিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন,চারা উৎপাদন একটি ভালো উদ্যোগ।তবে ইউকেল্পটার গাছের চারা তৈরি ও রোপণ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

কালাই উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র রায় বলেন,এ উপজেলায় ১২ টি ছোট বড় নার্সারী রয়েছে।তার মধ্যে নয়টি নিবন্ধ আছে বাকী তিনটি নিবন্ধ নেই । জীবন রক্ষাকারী গাছ ও সামাজিক বনায়ন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নার্সারী সংখ্যা বৃদ্ধি জন্য মাঠপর্যায়ে কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তারা নানা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.