কালাইয়ে বরশি দিয়ে মাছ ধরার অভিযোগে বৃদ্ধকে মারধর

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের কালাইয়ে বড়শিতে মাছ ধরা কে কেন্দ্র করে আঃ গফুর মন্ডল (৯৬) কে মাথায় আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাছ চাষী আলামিনের বিরুদ্ধে। পরে আহত আঃ গফুরকে চিকিৎসার জন্য কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়। আলামিনের অভিযোগ তার পুকুরে ফালানো বরশি নিতে চাইলে তারা আমাকে মারধর করে।

গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার এল্লাগাড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর)পুকুরে বিষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে ।

আহত আঃ গফুর মন্ডল বলেন, আমি বরশি দিয়ে মাছ মারার জন্য বাড়ি বের হই। খরের পালার সাথে বরশি রেখে কোদাল দিয়ে চেড়া ওঠানোর কিছুক্ষণের মধ্যে আলামিন এসেই লাঠি দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত করে। আমাকে অন্যায় ভাবে মারার সুষ্ঠু বিচার চাই।

মৎস্য চাষী আল আমিন (৩৫) বলেন, আমি পুকুরে ডিউটি করতে এসে দেখি আ: গফুর মন্ডল পুকুরে ৬ টি বরশি ফালাইছে। এর আগে অনেক বার নিষেধ করলেও শুনেনি এবং বলে এটা আমার অভ্যাস আমি ছারতে পারবো না। পরবর্তীতে আমি তাকে ধরে বরশি টা নেওয়ার জন্য টানাটানি করি তখন এক পর্যায়ে তার বউ ছল এসে লাঠি ঠেঙ্গা নিয়ে আমাকে দাবার দেয়।

গ্রামবাসী জানায় , আ: গফুররের মাছ মারার নেশা আছে। তবে অন্য কারো পুকুরে না। তার নিজ পুকুর ও আশপাশের পরে থাকা জোলা, সুই (ড্রেন) মাছ ধরে। ঘটনার দিন আব্দুল গফুর মাছ ধরার জন্য আলামিনের পুকুরের ধারের খরের পালার পাশদিয়ে কোদাল নিয়ে মাটি খুঁরে চেরা (কেঁচো) তুলতে যায়। এমতা অবস্থায় আলামিন লাঠি হাতে নিয়ে দৌড়ে এসে তাকে ধরে এলো পাথারি মারধর করে। পরে সে আহত হলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আঘাতে তার মাথা ফেটে যায় এবং তাছাড়াও শরীরে অনেক জায়গায় আঘাত লেগেছে ও ক্ষত হয়েছে।

মৎস্য চাষি আলামিনের ছোট ভাই আতিকুর বলেন, পুকুরটি খাস সরকারি পুকুর আমার মামা সাদী লিজ নেই। সেখান থেকে আমার বড় ভাই আলামিন পুকুরটি লিজ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে মাছ চাষ করে আসছে। হঠাৎ করে পুকুরটিতে বরশি দিয়ে গফুর হাজি মাছ ধরে। এমতাবস্থায় তাকে মাছ ধরতে নিষেধ করলে একপর্যায়ে তকঝক শুরু হয়। পরে বিষয়টি আমার বড় ভাই সাবেক মেম্বার গ্রামের মাতব্বর কে জানালে আজ সকালে দেখি পুকুরে বিষ করা।

এল্লাগাড়ি গ্রামের বাদশাহ জানায়, কয়েকদিন আগে তারা পুকুরে পানি কমে টানা দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে । বৃষ্টি হওয়ার পুকুরটি আবার ভরে ওঠে। এখন তারা দোষ দিচ্ছে গ্রামের লোক নাকি তাদের পুকুরে বিষ দিয়েছে।

আ: গফুরের ছেলের বউ বলেন, পুকুর পাড়ে পালার কাছে চেড়া তুলতেছিল আমার শশুর। তাই দেখে আলামিন লাঠি হাতে করে নিয়ে এসে আমার শশুরকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। আমার শ্বশুর রক্তাক্ত হয়ে পড়ে থাকলেও আমরা তাকে মারিনি।

গ্রামের মাতাব্বর আইয়ুব হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে গ্রামের ছেলে ফেরদৌস মাচং/টং এ আলোচনা করেন ঘটনার প্রেক্ষিতে যদি তারা এখন পুকুরে বিষ দেয় তাহলে তোমার দূষি হয়ে যাবা। আজকে সকালে শুনতে পাই পুকুরে অনেক লোকের সমাগম। সেখানে গিয়ে তাদের হাতে কিছু মরা মাছ দেখি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, এল্লাগাড়ি গ্রামে মাছ মারা কে কেন্দ্র করে গফুর হাজির মাথায় বাড়ি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়। গ্রামের ভিতরের পুকুরটি সোহাগ মেম্বার মাছ চাষ করে। পুকুরে বিষ দেওয়ার বিষয়টি তাদের সাজানো।

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)ওয়াসিম আল বারী বলেন, তারা পুকুরে বিষ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ৯৯৯ এ কল কল করলে বিষয়টি পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.