মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্র বলাৎকারের অভিযোগ

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা  প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার একটি কওমী মাদ্রাসার এক ছাত্রকে  বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক  মুক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে স্থানীয় এলাকাবাসীর তোপের মুখে পড়েন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ১০ দিনের জন্য মাদ্রাসা ছুটি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। এদিকে ঘটনার পর থেকে মাদ্রাসার ওই শিক্ষক পলাতক আছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) আওলাই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য অলিউল রহমান ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানাগেছে, পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই ইউনিয়নের একটি কওমী মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসেবে  চাকরি করেন গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার টুলট বড়গাঁও এলাকার আজাহার আলীর ছেলে মুক্তার হোসেন। তিনি একমাত্র শিক্ষক হিসেবে কিছুদিন থেকে ওই মাদ্রাসায় দায়িত্ব পালন করছেন। মাদ্রাসার ছাত্র সংখ্যা প্রায় অর্ধশতাধিক হলেও আবাসিকে থাকেন ২০ জন ছাত্র। অভিযোগ আছে, মাদ্রাসার কমলমতি ছাত্রদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বলাৎকার করে আসছেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার (৯ অক্টোবর) রাতে যখন সব ছাত্ররা ঘুমিয়ে পড়েন তখন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রকে চাকুর ভয় দেখিয়ে বলাৎকার করেন এবং কাউকে না বলতে নিষেধ করেন। এঘটনায় ওই ছাত্র বিষয়টি তাঁর মাকে জানালে, পরিবারের লোকজন মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ভোরে আমাদের সন্তানের কাছ থেকে জানতে পারলে প্রথমে কমিটির সদস্যদের অবগত করলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো কৌশলে ওই শিক্ষককে পালিয়ে দেয়। বর্তমানে আমাদের সন্তানকে নিয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছি। এই ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই আমরা।
তারা আরো বলেন, আমাদের এতিম বাচ্চাটাকে ওই মাদ্রাসায় পড়াশোনার জন্য দিয়েছি। কিন্তু মাদ্রাসার ওই লম্পট শিক্ষক আমাদের সন্তানকে চাকুর ভয় ভীতি দেখিয়ে প্রায়ই বলাৎকার করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য .অলিউল রহমান বলেন, বিষয়টি নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক দ্বারা এতিম বাচ্চাকে বলাৎকারের ঘটনা কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি জাকারিয়া হোসেন বলেন, এঘটনায় মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  তবে আমরা ওই শিক্ষকে পালিয়ে দেইনি। তাছাড়া মাদ্রাসা কিছু সমস্যার কারনে পূর্বেই মাদ্রাসা ছুটির সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)  জাহিদুল হক জানান, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার পক্ষ থেকে কোন লিখিত অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.