মাগুরা প্রতিনিধি, খন্দকার নজরুল ইসলাম মিলনঃ মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলায় শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ শ্রীপুর সরকারী এমসি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবি করে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দিয়েছে। লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, গত শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক কেএম রোকন উজ-জামান ওরফে সুইট অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। এর আগেও ঐ শিক্ষক একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে এই ধরনের অপকর্ম করেছেন বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়। অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্রী সায়মা আকবর অর্পি বলেন, তিনি শিক্ষক নামের কলঙ্ক।ইতিপূর্বে সে বিভিন্ন অপকর্ম করছে যা অনেকে জানে, কিন্তু পরে তা ধাপাচাপা দিয়েছে এর বিচার হয় নি। কিন্তু আমাদের সহপাঠীর সাথে যা করছে তা দুঃখজনক ঘটনা। আমরা এর সঠিক বিচার চাই। এই শিক্ষককে যদি বিচার না করা হয় তাহলে আরো শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট হবে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বদনাম হবে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছাবিনা ইয়াসমিন বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার কাছে কোনো অভিযোগ দেয়নি। তবে ইউএনও মহোদয়ের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ঘটনার শিকার ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঐ ছাত্রীর বাড়িতে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু ফোন না ধরার কারণে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের কারো সঙ্গেও তিনি কথা বলেননি বলে স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক কেএম রোকন-উজ-জামান বলেন, ‘আমি এ ধরনের কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। কেউ ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও ইউএনও সাহেবের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।’ এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ মহল বলেন, ‘একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আমার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত শেষে দোষী প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে রোববার (১৫ অক্টোবর) রাত ৯ টা ৩০ ঘটিকার সময় বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ক্রীড়া অফিস কক্ষ থেকে পুলিশের হাতে আটক হন অভিযুক্ত শিক্ষক রোকন-উজ-জামান। এ বিষয়ে উক্ত বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী মোঃ ইউসুফ আলী জানান, রোববার রাতে বিদ্যালয়ের ভিতরে ডিউটি করা কালীন অবস্থায় অনুমান রাত ৯টা ৩০ঘটিকার সময় প্রশাসনিক ভবনের দরজা ভাঙ্গার শব্দ পাই, পরে যাইয়া দেখি ক্রীড়া অফিস কক্ষের দরজা ভাঙ্গা এবং একজন ব্যক্তি রুমের ভিতরে আলমারি খুলে কিছু জিনিসপত্র চুরি করার চেষ্টা করছিলো ও প্রমান লোপাটের চেষ্টা করছিলো তখন আমি চোর চোর শব্দ করলে স্থানীয় জনগণের সহায়তায় রুমের ভিতরের ব্যক্তিকে আটক করে দেখি যে, ওই ব্যক্তি আর কেই নয় সে স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক রোকনুজ্জামান। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।