ক্ষেতলালে স্বাধীনতার ৫১ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নবীর উদ্দীন শাহ্ পরিবার

মো:মোকাররম হোসাইন  জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি:মহান স্বাধীনতার ৫১ বছরেও স্বীকৃতি পায়নি ভারত থেকে ট্রেনিং নিয়ে দেশে ফেরার পথে পাক বাহিনীর হাতে নিহত শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নবীর উদ্দীন  শাহ পরিবার। তার লাশও পায়নি তার পরিবার এ বেদনা বয়ে বেড়াচ্ছেন তাঁর একমাত্র ছেলে আঃ রাজ্জাক ও পাঁচ মেয়ে মনোয়ারা ছাবিরুন নেহা  ছোবেদা বেগুম  এ বিষয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর  দুপুরে যুদ্ধকালীন বলা না বলা কথা বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিলেন  শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নবীর উদ্দীন শাহ ছেলে আঃ রাজ্জাক ।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালে সেদিন মুক্তিকামী অন্যদের সাথে যোগ দেন  উপজেলার মামুদপুর  ইউনিয়নের বেলতা বানদিঘি গ্রামের মৃত বছির শাহা্র ছেলে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নবীর উদ্দীন শাহ্ তিনি ১১ নং সেক্টেরের ভারতে প্রশিক্ষণ নেন। পরে সেখান থেকে ট্রেনিং নিয়ে দেশে ফেরার পথে (১০ডিসেম্বর)জয়পুরহাট  জেলার ধলাহার ইউনিয়নে জামাতী আর পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর হাতে আটক হন শহীদ নবীর উদ্দীন  শাহ্ ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধে যোগদান করায়  নির্মমভাবে খুন হন অসংখ্য বাঙালি। তেমনই বর্বরতার শিকার শহীদ নবীর উদ্দীন  শাহ্ বিজয়ের আগ মুহূর্তে রাজাকারের সহায়তায় পাকসেনারা হত্যা করে নবীর উদ্দীন শাহকে৷

২৪ ডিসেম্বর দুপুর গড়িয়ে কেবলই পশ্চিমে হেলেছে সূর্য।  ক্ষেতলাল  উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের  বেলতা বানদির্ঘী  গ্রামের শহীদ নবীর উদ্দীন শাহ ছেলে আঃ রাজ্জাকের সংঙ্গে  দীর্ঘ আলাপ কালে তিনি বলেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার  বয়স ছিলো মাত্র ১৩ বছর মায়ের মুখে শুনেছি আমার বাবা যুদ্ধে গেছে যুদ্ধ চলাকালে  এমন সময় খবর আসে আমার বাবা জামাতী ও পাকবাহিনীর  হাতে আটক হয়েছেন জেলার ধলাহার ইউনিয়নে সেখান থেকে জেলার বাজলা  স্কুল মাঠে নিয়ে আসে বাবাকে  তিন দিন আটক রাখে তখন আমার  মা এলাকার বাসির সহয়াতায় তখন কার ক্ষমতা ধর রাজাকার আঃ আলিমের সংঙ্গে যোগা যোগ করেন বাবাকে ফিরিয়ে  আন্তে  তাতেও লাভ হয়নি পরের দিন আক্কেলপুর নিয়ে এসে পাকিস্থানি মিলিটারিরা আমার বাবাকে মেরে গণ কবর দিয়েছে তখন অস্থিতিশীল দেশ৷  আমার বিধবা মা বাবার সংঙ্গে  দিশেহার হয়ে পরেন৷

দেশ সাধীনের ১ বছর পর আক্কেলপুর বধ্যভূতিতে এক হৃয়বিদারক ঘটনা  সরকারি অফিসারা আমাদের খবর দিলে আমি আমার মা সহ কয়েজক  গিয়েছি আমার বাবাসহ অনেক লাশের কঙ্কাল তোলা হয়েছে আমার বাবার পড়নে নতুন লঙ্গী ছিলো পিছনে তামার তার দিয়ে হাত বাধা ছিলো তখন লোক জন কম ছিলো ভয়ে মানুষ জন সেখানে আসত না আমার সব ঘটনা মনে আছে  তখন আক্কেলপুর ব্যংকের মাধ্যমে সরকার  আমাদের  দুই হাজার টাকা দিয়েছে দেশ সাধীনের পর থেকে আমার  মা ও বাবার সোকে কাতর খুব কষ্টে আমাদের মানুষ করেছে দেশে অনেক মুক্তি যুদ্ধা ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে আমার বাবা ও একজন শহীদ মুক্তিযুদ্ধা আমার বাবাকে রাষ্টীয় ওভাবে তালিকা ভুক্তি করার জন্য কয়েক বছর ধরে দারে দারে ঘুড়েছি  আমার মাও মারা গেছে আমার বাবার জন্য আক্কেলপুর বদ্ধভূতিতে  গিয়ে শহীদ বাবার জন্য পরিবারের সবাই কবর জিয়ারত ও দোয়াখায়ের করে আসি  আমার বাবার নাম ওই গন কবরের মধ্য   তিন নং সিরিয়ালে উল্লেখ করা আছে তবুও আমার বাাবার নাম মুক্তিযুদ্ধের তালিকা করা হয়নি৷

শহীদ নবীর উদ্দীন শাহ নাতি মোঃ নাসির আক্ষেপ করে বলেন আমরা শহীদ পরিবারের সন্তান দেশে কত ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা সম্মান পায় রাষ্টের কাছে আমার দাবি আমার দাদা এদেশের জন্য জীবন দিয়েছে পাকিস্তানি মেলিটারিরা দাদাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে আমার দাদা রাষ্টীয়ও  ভাবে সম্মান পাওয়ার যোগ্য আমরা তো  কোন  সাহায্য চাইনি দাদা একজন শহীদ মুক্তিযুদ্ধা বাংলাদের ইতিহাসে তার নাম থাক এটি আামাদের শহীদ পরিবােরর প্রত্যাশা
শহীদ  নবীর উদ্দীন শাহ গ্রামের প্রবিণ  ব্যক্তিরা যানান নবীর উদ্দীন যুদ্ধে গিয়েছিলো আমরা জানি ভারত থেকে টেনিং করে আসার পথে  ধলাহার ইউনিয়নে আটক করে মেলিটারিরা পাঁচ দিন পর গ্রামে খবর আসে পাকাস্তিনারা নবীরকে হত্যা করেছে তখন  ছোট গ্রাম ছিলো হাতে গনা কয়েকটি লোকের বসবাস কে কার খোজ রাখে নবীর একজন শহীদ মুক্তিযুদ্ধা এলাকা বাসী চান শহীদ মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া হোক নবীরকে। সেইসঙ্গে দাবি জানান, সেই কবরটি সংরক্ষণেরও।

শহীদ নবীর উদ্দীন শাহা্র স্ত্রী আকেলজান বেওয়ার  ন্যাশলাল আইডি কার্ডে মৃত স্বামী নবীর উদ্দীন শাহ  এবং নবীর উদ্দীনের ছেলে আঃ রাজ্জাকের ন্যাশলাল আইডি কার্ড  পিতা মৃত নবীর উদ্দীন শাহ্ শহীদ নবীর উদ্দীন শাহার পৈত্রিক ভিটার আর এস খতিয়ানে নবীর উদ্দীন শাহা্র নাম লিপিবদ্ধ আছে শহীদ  নবীর উদ্দীনের পাঁচ মেয়ে এক ছেলে বড় মেয়ে মনোয়ারা মারা গেছেন এবং আক্কেলপুর বধ্যভূমি গনকবরে শহীদ নবীর উদ্দীন শাহা্র ন্যামপ্লেট নাম সহ গ্রামের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে৷

বধ্যভূমিটি ও গনকবর অবস্থিত আক্কেলপুর সদর উপজেলার নিকটবর্তী আমুত্ত গ্রামের মাঠে। ১৯৭১ সালে ২২ জন মুক্তিযোদ্ধা পাকিস্তানী বাহিনীর হাতে এখানে নিহত হন। শহীদদের স্মরণে এখানে একটি সৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এদের মধ্য ২২ জন মুক্তিযোদ্ধাও ছিল। ১৯৯৬ সালে আক্কেলপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা নূর হোসেন তালুকদার এই গণকবরের উপর একটি স্মৃতিসৌধ নির্মান করেন।

তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ছয়জন গাড়োয়ান সহ এই গণকবরে শায়িত আছেন নাম না জানা অনেকে। তবে যাদের নাম জানা যায় তারা হলেন..
১) মোঃ সাবের জোয়ারদার (গোপিনাথপুর)
২) মোঃ তোফাজ্জল হোসেন (গোপিনাথপুর)
৩) মোঃ নবির উদ্দিন শাহ্ (বানদিঘি)
এ ব্যাপারে আক্কেলপুর বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আঃ হাই জানান, এই পরিবারের সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়া উচিৎ।

জানতে চাইলে মামুদপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মশিউর রহমান শামীম জানান, একটি দুটি নয় মুক্তিযুদ্ধের সময় এমন ঘটনা রয়েছে অসংখ্য। কজনইবা মনে রেখেছে তাদের। তাই দিনে দিনে জোরালো হচ্ছে দেশের জন্য আত্মত্যাগ করা এমন যোদ্ধাদের তালিকা করে যথাযথ মর্যাদা দেয়ার দাবি যানাই৷ক্ষেতলাল উপজেলা  বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আজাহার আলী বলেন,  মুক্তিযুদ্ধে নবীর উদ্দীন শাহ্ জোরালো ভূমিকা রাখে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.