মাঝাইল গ্রামে বিধবা মহিলার জমি দখলের অভিযোগ

খন্দকার  নজরুল ইসলাম মিলন, মাগুরা প্রতিনিধি: মাগুরা সদর উপজেলার ৬ নং রাঘবদাইড় ইউনিয়নের মাঝাইল গ্রামের মৃত ইব্রাহিম মোল্লার ৩ শতক মাঠের ধানী জমি দখল করে খুটি পুতে দিয়েছে, এর অভিযোগ দিলেন তছিরুদ্দিন মোল্লার কন্যা আনোয়ারা খাতুন (৫৫) বিধবা মহিলা।
৬ নং রাঘবদাইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর জমাজমি সংক্রান্ত বিষয়ে গত ১৩ জুলাই ২০২৩ তারিখের অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, আনোয়ারা খাতুনের স্বামী গত ৩ জুন ১৯৯৬ তারিখে মাঝাইল মৌজায় ২৮ শতক জমি ক্রয় করে। যার সাবেক দাগ নং- ৭৫৯ এবং বর্তমান দাগ নং- ৬৯১, উক্ত জমির পার্শ্বে বিবাদী মাঝাইল গ্রামের মৃত রাহেন উদ্দিন মন্ডলের পুত্র মোঃ আবু বক্কার মন্ডল ৬৯০ দাগে ৬৮ শতক জমি ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করিতেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় দীর্ঘ প্রায় ২৭ বছর পর গত শুক্রবার ৭ জুলাই ২০২৩ তারিখে আনোয়ারা খাতুনের ক্রয়কৃত জমিতে জবর দখল করে স্থানীয় এলাকার কিছু লোকজনের সহযোগিতায় ৩ শতক জমি দখল করে সিমেন্টের খুটি স্থাপন করেছে উত্তর-দক্ষিণ লম্বালম্বি ভাবে।
শের আলী জানান, বক্কার মন্ডল জানিয়েছে ঐ জমির পরিমাপ ম্যাপ ও দলিলে নাই, তাই আমার জমির সাথে পূরণ করে দিতে হবে।
বিধবা মহিলা আনোয়ারা খাতুন জানান, আমার জমিতে বক্কার মন্ডলরা এখন চাষ করতে দিচ্ছে না এবং শীতকালীন শস্য ফসল বুনতে দিচ্ছে না। প্রায় ৩০-৩৫ বছর পূর্বে আমার স্বামী ইব্রাহিম মোল্লা ৩৩ শতক জমি ক্রয় করে কিন্তু ৪-৫ বছর পর জমি রেজিষ্ট্রি করতে গেলে ৫ শতক জমি কম আছে এটা জানা যায়। যার ৫১০ নং খতিয়ানের ৬৯১ দাগে ২৮ শতক জমি আছে।  তখন রেজিষ্ট্রি অফিসের লোকজন ও জমি বিক্রেতা বলেন ২৮ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে দলিল হবে আর বাকি ৫ শতক জমি কেউ কোনদিন ধরতে আসবে না। তারা আরও জানায় দলিল যার নামে থাকবে সে ব্যক্তিই অতিরিক্ত জমি ভোগ করবে। ওহাব মন্ড মামাতো-ফুফাতো ভাই বক্কার মন্ডলের, এই ওহাব মন্ডল গভীর ষড়যন্ত্রের ইন্দনদাতা। আয়নাল মন্ডলের কাছে থেকে প্রায় ১০ বছর পূর্বে জমি ক্রয় করে বক্কার মন্ডল পুরো জমি ঘিরে নেয়। কিন্তু হঠাৎ করে বর্তমানে তারা অন্যায় ভাবে এই জমি দখলের কাজ করছে। মাতব্বর তৈয়ব শিকদার ৩ শতক জমি বের করে করে অতিরিক্ত সেই জমির দক্ষিণ-উত্তর লম্বালম্বি সিমেন্টের ৭ টি পিলার পুতে দিয়েছে। গত রবিবার ২৯ অক্টোবর দিন চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম বাবুল ফকিরের নির্দেশে জমি চাষ করতে ও গোবর সার দেওয়ার সময় বক্কার মন্ডল, তার স্ত্রী, বেটার বৌ, বক্কার মন্ডলের ৩ ভাই ও মিশন স্যান্ডেল দিয়ে ব্যাপক আকারে মারধর ও জমিতে প্রবেশ করলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদর্শন করে অকথ্য ভাষায় কথা বলে।
ফখরুদ্দিন মন্ডল জানায়, উক্ত জমি ঘেরে বেশি কিন্তু দলিলে জায়গা কম আছে। আবু বক্কার মন্ডলরা গভীর ষড়যন্ত্র করে জোরপূর্বক ৩ শতক জায়গা দখল করে নিয়েছে।
আঙ্গুর খাতুন জানান, আমার বাড়ির জমি নিয়ে বক্কার মন্ডলরা আমাদেরকে খুবই অত্যাচার করে।
বক্কার মন্ডল জানান, খুলনা স্টার জুট মিল খালিশপুরে দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর চাকরি করে ২ বছর পূর্বে গ্রামের বাড়ি এসেছি। আমার মোট দুই দাগে ৯৯ শতক জমি আছে ৫১ নং আর এস খতিয়ান ৬৮৯ দাগ ও ৫০১ নং খতিয়ান ৬৯০ নং দাগে ৬৮ শতক। ইব্রাহিম মোল্লাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে ছিলাম স্যালো মেশিন ক্রয় করে জমি চাষ করার জন্য। স্যালো মেশিন আমার জমির আইলের সাথে এবং পানির হাউসটি আমার জমির ভিতর পড়েছে। জমির আইলের ড্রেন ভেঙ্গে নিয়ে এসব করেছে, পূর্ব পাশে আমার জমি আছে, তবে হাত দেড়েক জায়গা আছে। জমিতে পিলার পুতে দিয়েছে গ্রামের তৈয়ব আলী শিকদার, হাসান মোল্লা, হালিম শিকদার, ইবাদত বিশ্বাস, শের আলী সহ আরও কয়েকজন লোকজন। চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দিলে সুষ্ঠু ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা কিন্তু ৪ মাস হয়ে গেছে। যখন গতকাল আনোয়ারা পিলার উঠাতে গেলে ছেলে ফয়জুল ও আমার স্ত্রী বাঁধা দিলে তাদেরকে বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। তিনি আরও বলেন, আমি আইনের মাধ্যমে সঠিক সমাধান চাই।
ভুক্তভোগী আনোয়ারা খাতুন বলেন, ৩ শতক জমি যদি সরকারি খাস জমি হলে সেটা আমি সরকারকে দিয়ে দিবো কিন্তু বক্কার মন্ডলকে কোনদিন দিবো না।
রাঘবদাইড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম বাবুল ফকির জানান, মাঝাইল গ্রামের জমাজমি সংক্রান্ত বিষয়ে আনোয়ারা খাতুনের কাছে থেকে অভিযোগ পত্র পাওয়া গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.