ভাঙ্গুড়ায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

সিরাজুল ইসলাম আপন, ক্রাইম রিপোর্টার (পাবনা): পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পাটুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা: কানিজ ফাতেমার বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অত্র বিদ্যলয়ের ছাত্র ছাত্রীর অভিভাবকেরা ম্যানেজিং কমিটির কাছে এ অভিযোগ করেন। শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ও ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকরা প্রধান শিক্ষিকাকে নিয়ে এ বিষয়ে একটি মিটিং করেন।

মিটিংয়ে অভিভাবকেরা প্রধান শিক্ষিকার অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির সকল বিষয় তুলে ধরেলে প্রধান শিক্ষিকা কানিজ ফাতেমা সকলের সামনে তার অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এসময় অত্র বিদ্যলয়ের ম্যানেজিং কমিটি সভাপতি ওসমান গণি (রঞ্জু) মোল্লা প্রধান শিক্ষিকাকে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে আত্মসাৎকৃত সকল অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির মধ্যে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পরেন।

জানা যায়, পাটুলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে মোট ২৫৩ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। প্রাক প্রাথমিকে ৫০ জন, প্রথম শ্রেণীতে ৪৬ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ৪২, তৃতীয় শ্রেণীতে ৪০ জন, চতুর্থ শ্রেণীতে ৪০ জন ও পঞ্চম শ্রেণীতে ৩৫ জন। প্রধান শিক্ষিকা কানিজ ফাতেমা ২০১৮ সালে মার্চ মাসে উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাটুলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই সরকারের নিদের্শ অমান্য করে তিনি প্রতেক ছাত্র ছাত্রীর কাছ থেকে পরি¶ার ফি বাবদ ১ম শ্রেণীতে ৫০ টাকা, ২য় শ্রেনী ৬০ টাকা, ৩য় শ্রেণী ৭০ টাকা, ৪র্থ শ্রেণী ৮০ টাকা, ৫ম শ্রেণী ১০০ টাকা করে আদায় করছে। নতুন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি বাবদ ১৫০ টাকা। প্রত্যায়ন পত্র বাবদ ২০০ টাকা। উপবৃত্তি ফর্ম পূরণ বাবদ ২০০ টাকা। পুরাতন বই ফেরত নিয়ে বিক্রি করা। বিভিন্ন কোম্পানির সৌজন্য গাইড বই ছাত্র ছাত্রীর কাছে বিক্রি করা। ডি আর বাবদ ১৫০ টাকা। বিভিন্ন দিবসে খেলা দোলা বাবদ টাকা আদায়সহ নানা অযুহাতে ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে বছরের পর বছর টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে আসছে। কোন ছাত্র-ছাত্রী তার নির্ধারিত চাঁদার টাকা না দিলে সেই ছাত্র-ছাত্রীকে মারধরসহ তাকে স্কুল থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী নিলিমার বাবা ইউপি সদস্য ওসমান গণিসহ একাধিক শিক্ষার্থীর অভিবাবক এই দুর্নীতিকারি শিক্ষিকার বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা মোছা: কানিজ ফাতেমা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরকারি নিয়ম না থাকলেও অফিসের নির্দেশে আমি টাকা নিয়েছি। এই টাকা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজে লাগিয়েছি। আবার কিছু সময় অফিস ম্যানেজ করতে হয়েছে এই টাকা দিয়ে।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: হাসান আলী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে কোন টাকা নেওয়ার বিধান নেই। যদি কোন শিক্ষক নিয়ে থাকে তদন্ত সাপেক্ষে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: নাহিদ হাসান খান বলেন, সরকারি নিয়ম না মেনে টাকা নিলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.