কালাইয়ে আলু রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা

মোঃমোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটে কালাই উপজেলা আলু উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ।সোনালী আমন ধান কাটা পাশাপাশি এখন আলু রোপণের কাজে ব্যস্ত কৃষকরা।জানা গেছে যে,জয়পুরহাট আলু উৎপাদনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা হিসেবে পরিচিত।এ উপজেলায় উৎপাদিত আলু দেশের চাহিদা মিটিয়ে, বিভিন্ন দেশও বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
এ উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় ইতোমধ্যে আগাম জাতের আলু লাগানো শেষ হয়েছে। এখন চলছে অন্যান্য জাতের আলু লাগানোর চলতি ২০২৩ -২৪ রবি মৌসুমে উপজেলায় ১০ হাজার৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।তবে এবার আলুর বীজ এবং সারের দাম বেশি হওয়ায়- আবাদওগত বছরের তুলনায় কিছুটা কমেছে। এখন সেই আলুতেই আগামী দিনের স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে ,মাঠে মাঠে চাষিরা এখন আলু রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।কেউ চাষ দেওয়ার আগে,জমিতে জৈব এবং রাসায়নিক সার ছিটিয়ে নিচ্ছেন।কেউ কেউ মেসি বা পাওয়ার টিলার দিয়ে আলু রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন।কেউবা রোপণ করছেন আলু। আবার কেউ জমিতে সেচ দিচ্ছেন।
কৃষকরা বলছেন, অন্য বছরের চেয়ে এবছর আলু চাষে বিঘাপ্রতি উৎপাদন খরচ বেড়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা।কারণ হিসেবে কৃষি উপকরণ সহ শ্রমিকের পাশাপাশি জমি লিজ ও সেচ খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় কথা বলেছেন, এতে এবছর আলু চাষে বিঘাপ্রতি কৃষকের খরচ গুনতে হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত । গত বছর ছিল ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা মাত্র ।
কালাই উপজেলা আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের   হাতিয়র গ্রামের কৃষক রাশিদুল আলম বলেন, ‘এবার আমি মাত্র ছয় বিঘা জমিতে মিউজিকা ওএ্যাস্টেরিক জাতের আলু চাষ করেছি। প্রতি বস্তা আলুর বীজ কিনেছি ২ হাজার৭০০শত টাকায়।সারও কিনেছি চড়া দামে।গত বছরের চেয়ে এবার বিঘা প্রতি ১০-১২ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।আলু তোলার মৌসুমে দাম ধানের মতন একটু বেশি হলে, ধার-দেনাগুলা পরিশোধ করতে পারতাম।
এ উপজেলার পুনট ইউনিয়নের পশ্চিম নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার বলেন,   আমি এবার পাঁচবিঘা জমিতে এ্যাস্টেরিক জাতের আলু লাগাচি।সার কিনতে গিয়ে ডিলারদের দোকানে অনেক ঘুরেও সরকারি মূল্যে সার না পেয়ে বাধ্য হয়েই বেশি দামে সার কিনে আলু চাষ করতে হচ্ছে।ফলে প্রতি বিঘায় খরচ পড়বে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা।এরপর ও ভালো ফলনে পাওয়া আশা করছি।
এ উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন উদ্দিন বলেন,এবার তিন বিঘা জমিতে এ্যাস্টেরিক জাতের আলু চাষ করেছি।এবার আলু চাষে খরচ হচ্ছে বেশি।ব্যবসায়ীরা চালাকি করে, চড়া দামে সার আর বীজ বিক্রি করে।তেলের দামও বেশি।তাই এবার সবমিলিয়ে খরচ বেশি হচ্ছে। শেষে লাভ হবে কি না,লোকসান হবে জানিনা না
 এ বিষয়ে কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন,কালাই উপজেলাতে প্রায়১০হাজার৭০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।এবারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে গত বছরেরর চেয়ে কম। এর কারণ,কৃষকদের আমরা আলু চাষের পাশাপাশি সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করছি।সে উদ্দেশ্যে সরিষা চাষের জন্য আমরা কৃষকদের প্রনোদনাও দেয়েছি।সরিষা বেশি চাষ হলে, ভোজ্য তেলের উৎপাদন বাড়বে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.