কালের সংবাদ ডেক্সঃ শুধু খাদ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না। বণ্টনের বিষয়টিও জড়িত এর সঙ্গে। একটি দেশের অর্থনীতি কীভাবে চলবে তা বহুলাংশে নির্ভর করে বর্তমান সরকারের নীতি কৌশলের ওপর। দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি বা মোকাবিলার ক্ষেত্রে সরকারের নীতি কৌশলের ভূমিকাই প্রধান।
দুর্ভিক্ষের প্রধান কারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এত নিচে নেমে আসে যে, প্রয়োজনীয় জিনিসও মানুষ ক্রয় করতে পারে না। দ্বিতীয়ত, যাদের ক্রয়ক্ষমতা আছে তাদের জন্যও সমস্যা হয়ে যায়। তৃতীয়ত, খাদ্যদ্রব্য থাকার ফলেও গুদামজাত করা হয়। এই তিন কারণে মূলত দুর্ভিক্ষ হয়। আরেকটা কারণ হচ্ছে যখন এক স্থানে দুর্ভিক্ষ হয় তখন মানুষকে সহযোগিতা করার যে চেষ্টা সেটার অভাব দেখা দেয় বেশ কিছু মানুষের মধ্যে। দেশের অনেক আইসোলেটেড এলাকা যেখানে দুর্ভিক্ষ হয় কিন্তু সহযোগিতা পৌঁছায় না। এই কারণগুলোই দুর্ভিক্ষের কারণ।
মডার্ন যুগে দুর্ভিক্ষ হওয়াটা ডিফিকাল্ট। সরকারি বা সামাজিক সাহায্য কিংবা দেশের বাইরে থেকেও সাহায্য চলে আসে।
বাজারে অনেক সময় দ্রব্য থাকার পরও মূল্য বেড়ে যাচ্ছে। মজুত করা হচ্ছে গুদামে, পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। এটার জন্য খাদ্যদ্রব্যের এক্সেস পাওয়া যাচ্ছে না। এটা যদি ব্যাপক আকারে হয় তবে একটা শঙ্কা রয়েছে।
রাজনৈতিক কারণে কোনো জায়গায় ট্রান্সপোর্ট আটকে যেতে পারে। কিন্তু দিনের পর দিন হবে না। সেটাকে রুখে দেয়ার জন্য সরকারের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে। সরকারের নানা প্রতিষ্ঠান আছে। ’৭৪ সালে যেটা হয়েছিল সেটা হঠাৎ করে হয়েছিল। তখন যে খাদ্যদ্রব্য ছিল না তা নয়। তখন এক্সেস ছিল না। বেসরকারি সংস্থাগুলো যেতে পারতো না। সময়মতো রেসপন্স করতে পারে না। দেশে যদি মহামারি হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত অবস্থা হয় যে জায়গা মতো পণ্য যেতে পারছে না।
দুর্ভিক্ষ হয় খাদ্য সরবরাহ চাহিদার সঙ্গে পর্যাপ্ত না হলে। সঠিক সরবরাহ থাকলে দেখতে হবে মূল্যস্থিতি কী রকম। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ক্রয়সীমার মধ্যে আছে কিনা।
সোশ্যাল সাপ্লিমেন্ট ঠিক রাখার দিকে সবার নজর রাখতে হবে। যাতে যাদের প্রয়োজন তারাই সাহায্য পায় এই বিষয়গুলোর দিকেও খেয়াল রাখা দরকার সবসময়।
বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সার্ভেতে বলা হয় দেশের দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেছে। দুর্ভিক্ষের সংজ্ঞাতে বলা হয়েছে, গণহারে যখন মৃত্যু হয় বা ইত্যাদি হয় তখন দুর্ভিক্ষ হয়।
দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছে বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দেখাযাচ্ছে দেশের উৎপাদন একেবারেই খারাপ হচ্ছে না। দেশ প্রয়োজনীয় খাদ্য আমদানিও করতে পারবে। সেটার জন্য বিদেশি সাহায্যও পাওয়া যাবে। রেমিট্যান্স থেকেও অর্থ আসছে। ফলে দুর্ভিক্ষের মতো অবস্হার পরিস্থিতি উদ্ভব হবে না এদেশে।