কৃষকের ধান বিক্রির টাকা আত্মসাত

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে শতাধিক কৃষকের ২০-২৫ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সাধারণ কৃষকদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে কৃষকরা।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার ইটাখোলা বাজারের বণিক সমিতির সামনের রাস্তায় এলাকার সাধারণ কৃষকবৃন্দের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষকদের থেকে জানা যায়, ইটাখোলা বাজারের মেসার্স জে আর ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোঃ মামুনুর রশিদ জিবো ও তার পুত্র রাজিব গত বোরো মৌসুমে ইটাখোলা বাজারে শতাধিক কৃষকের কাছ থেকে ১২ লক্ষাধিক টাকার ধান ক্রয় করেন। ধান কেনার সময় প্রত্যেক কৃষককে কাগজে ধানের দর ও টাকার পরিমাণ সম্বলিত স্লিপ দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা নিতে গেলে ঘর বন্ধ করে ধান ব্যবসায়ীরা গা ঢাকা দেয়। এরপর থেকে কৃষকরা নানা চেষ্টা করেও সেই টাকা উদ্ধার করতে না পেরে মানববন্ধন কর্মসূচী পালনের পর তারা ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে স্মারকলিপিও প্রদান করেন।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচী চলাকালে একডালা গ্রামের কৃষক জুয়েল রানা অভিযোগ করেন বলেন, রাজিব ২০২০ সালে আমার কাছ থেকে এক গাড়ী ধান কিনে নেয়। টাকা দিচ্ছি দিবো বলে এতদিনেও দেয়নি। আমি এখন তার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা পাবো। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
কালাই উপজেলার মাধাইনগর গ্রামের কৃষক মঞ্জুরুল বলেন, রাজিব তার কাছ থেকে ৩৮ হাজার ৬০০ টাকার ধান নিয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সে টাকা পরিশোধ করেনি। একই অভিযোগ বিনাই গ্রামের  কৃষক পান্নু মিয়ার। তিনি রাজিবের কাছ থেকে টাকা পাবেন সাড়ে ২৭ হাজার। তিনি বলেন, ধানের টাকা না দেওয়ায় গতবার কুরবানি দিতে পারিনি।
ক্ষেতলাল পৌরসভার সাবেক মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু বলেন,‘ইটাখোলা বাজারে আমরা দীর্ঘদিন যাবত সুনামের সাথে ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু ধান ব্যবসায়ী রাজিব ও তার পিতা আব্দুর রশীদ সহ একটি চক্র কৃষকদের ধান নিয়ে প্রতারণা করায় বাজারে সুনাম নষ্ট হয়েছে। ইটাখোলা বাজারে ধান-চাল বিক্রি করতে এখন স্থানীয় কৃষকরা ভয় পান। রাজিব এলাকার কৃষক সহ অন্যান্য ব্যবসায়ীর অন্তত ২০ লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করে আত্মসাৎ করেছে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ব্যবসায়ী রাজিব ও তার পিতার সাথে যোগযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায় নি। মোবাইল ফোনও তারা রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফতাবুজ্জামান আল ইমরান বলেন,ব্যবসায়ীর নিকট থেকে টাকা পাওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ বা স্মারক লিপি দেননি। অভিযোগ পেলে ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.