শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টারঃ নওগাঁয় দীর্ঘ ৬ মাস পর মলিনা হত্যা রহস্য উদঘার্টন সহ যেভাবে অভিযুক্ত কে আটক করলো থানা পুলিশ।
বিয়ের জন্য চাপ দেওয়ায় হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন মলিনা বিবি (৫০) নামের নারী। দীর্ঘ ৬ মাস ১০ দিন পর আসামি সোনাবর মৃধাকে (৪৫) কে আটকের পর এ হত্যা রহস্য উদঘার্টন করতে সক্ষম হয়েছে নওগাঁর মান্দা থানা পুলিশ।
আটককৃত সোনাবর মৃধা নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়ন এর চক-শ্রীকৃষ্ণ গ্রামের মৃত অফির উদ্দিন মৃধার ছেলে। নওগাঁর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টিপু মুন্সীর আদালতে এ হত্যা কান্ডের দায় শিকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি। হত্যা কান্ডের শিকার মলিনা বিবি মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়ন এর চকদারপাড়া গ্রামের জিয়ার উদ্দিন এর মেয়ে।
স্বামী পরিত্যক্তা এই নারী মলিনা মান্দা উপজেলার সতিহাট বাজার এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস সহ বাজারের একটি তুলার মিলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পাশাপাশি অন্যের সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন তিনি।
আসামী সোনাবর মৃধা জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, মলিনা বিবির সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বিয়ে করার জন্য গত বছরের ৬ জুলাই মলিনা বিবিকে মোবাইল ফোনে তার কাছে আসার জন্য প্রলুদ্ধ করে ডেকে নেয় সোনাবর মৃধা। এরপর সারাদিন তারা দু’জন বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা করেন। ওইদিন সন্ধ্যার পর সোনাবর কে বিয়ের জন্য চাপ দেন মলিনা বিবি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগ-বিতন্ডা ও তুমুল কথা-কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। পরে বিয়ের কথা বলে ভালাইন ইউনিয়ন এর আয়াপুর পাগলিতলা মন্ডপের কাছে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে মলিনা বিবিকে। মৃত্যু নিশ্চিত করে তার মৃতদেহ পাগলিতলা মন্ডপের পাশে একটি ঘাসখেতে ফেলে আত্মগোপনে চলে যায় সোনাবর মৃধা।
এব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, মলিনা বিবির মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকে ক্লুলেস এ হত্যাকান্ড রহস্য উদঘাটনে নানাভাবে তৎপর ছিলো পুলিশ। কিন্তু আসামী সোনাবর মৃধা বারবার স্থান পরিবর্তন করায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছিল না। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ফরিদপুর জেলার কোতয়ালি থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সোনাবর মৃধা হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ২০২৩ সালের ৭ জুলাই নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়ন এর আয়াপুর পাগলিতলা মন্ডপ এর পাশের একটি ঘাসখেত থেকে মলিনা বিবির মৃতদেহ উদ্ধার করেন মান্দা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মলিনার ছেলে আবদুল মজিদ বাদি হয়ে মান্দা থানায় একটি মামলা করেন।