বদলগাছীতে বেশি দামে কিনে কম দামে দুধ বিক্রি করেন মোস্তফা!

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ রমজান আসলেই যেখানে বেড়ে যায় নিত্যপণ্যের দাম। সেখানে মাত্র ৪০ টাকা লিটার গরুর দুধ বিক্রি করছেন নওগাঁর বদলগাছী  উপজেলার মথুরাপুর  ইউনিয়নের  কাষ্ঠগাড়ি গ্রামের মিষ্টি ব্যবসায়ী মোস্তফা । পুরো রমজানজুড়ে ‘সুষ্ঠু বণ্টনের স্বার্থে’ একটি পরিবারের কাছে দিনে একপোয়া -আধা লিটার থেকে এক লিটার দুধ বিক্রি করেন তিনি।  রমজানজুড়ে প্রতি হাটে ১০০ লিটার দুধ বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই ব্যবসায়ী।
রোজার প্রথম দিন থেকেই কম দামে দুধ কিনতে  হাটের দিন তার ভ্রাম্যমাণ দুধের দোকানে ভিড় করছেন অসংখ্য মানুষ। স্বল্প মূল্যে দুধ বিক্রির উদ্যোক্তা মোস্তফা হাট বারের দিন বাজারে আগত দুগ্ধ খামারিদের কাছ থেকে ৬০-৫০ টাকা পাইকারি দরে দুধ ক্রয় করে তা প্রতি লিটার দুধ ৪০টাকা দরে সাধারণ খেটেখাওয়া দিনমজুর লোকজনের কাছে কম দামে বিক্রি করছেন।
পাইকারি দরের চেয়ে প্রতি লিটার দুধে ১০-২০টাকা ভূর্তকিতে রমজানে সাধারণ মানুষের কাছে দুধ বিক্রি করছেন মোস্তফা।
এলাকাবাসী বলছেন, রোজার মাসে বাজারে দুধ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা লিটার। বর্তমান ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা মিটিয়ে চড়ামূল্যে দুধ কেনা দরিদ্র মানুষের পক্ষে কোনোভাবেই সম্ভব না। তাই কম দামে দুধ কিনতে পেরে অনেক খুশি তারা।
বুধবার  (১৯ মার্চ) বিকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নামমাত্র মূল্যে দুধ কিনতে মানুষের দীর্ঘ সারি। দুধ কিনতে আসা মঞ্জু হোসেন বলেন, মোস্তফার মহানুভবতায় রোজার মাসে দুধ খাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি। বাজার থেকে দুধ কিনা আমরা মতো মানুষের পক্ষে সম্ভব না। তিনি গত কয়েক বছর ধরে আমাদের পাশে আছেন, দোয়া করি আল্লাহ তাকে সব সময় গরিবের পাশে রাখার তৌফিক দান করুক।
কলকুটির গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, রোজার মাসে সেহরির সময় একটু দুধ দিয়ে ভাত খাইতে পারলে প্রাণটা ভরে যায়। বাজার থেকে কিনা সম্ভব না। কম দামে দুধ কিনতে পেরে ভালো লাগছে।
কয়েক বছর আগে বাজারে দুধ কিনতে গিয়ে দুধের দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের একাধিক লোক দুধ না কিনে বাড়িতে ফিরে যায়। এই বিষয়টি মোস্তফার হৃদয়ে নাড়া দেয়। আর পরের হাট থেকে তিনি বাজারে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম দামে দুধ বিক্রি শুরু করেন।
কাষ্ঠগাড়ি এলাকার মিষ্টি ব্যবসায়ী  মোস্তফা বলেন রমজান এলেই এলাকায় দুধের চাহিদা বেড়ে যায়। হাট-বাজারগুলোতে এক কেজি দুধ ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দামে নিম্ন আয়ের মানুষের দুধ কিনে খাওয়ার ক্ষমতা নেই।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছি। তাই  সুযোগ পেলেই মানুষের জন্য কিছু করার চেষ্টা করি। একজন মুসলমান হিসেবে পবিত্র রমজানে রোজাদার মানুষকে সামান্য পরিমাণে হলেও কম দামে দুধ দিতে পারছি বলে ভালো লাগছে।
এবিষয়ে মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, রমজান মাসে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়, বাজারে দুধের দাম বেশি যার কারণে অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ দুধ কেনার ইচ্ছে থাকলেও চড়া দামের কারণে দুধ কিনতে পারছেনা। মোস্তফার মত একজন মিষ্টি ব্যবসায়ী কেনা দামের চেয়েও কম দামে দুধ বিক্রি করায় সাধারন মানুষ খুব সহজেই তার কাছ থেকে দুধ কিনে নিচ্ছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published.