মাগুরা মহম্মদপুর ভাবির ষড়যন্ত্রের জালে নির্দোষী দেবর জেলখানায়

খন্দকার নজরুল ইসলাম মাগুরা প্রতিনিধি:মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের রোনগর গ্রামে আপন ভাবি রুপা বেগম ছোট দেবর হেদায়েত মোল্যার নামে আদালতে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে জেলের ঘানি টানাচ্ছে।
ঘটনার সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার ২৭ অক্টোবর ২০২২ তারিখে, এই বিষয়ে সরেজমিনে মঙ্গলবার ১০ জানুয়ারি বিকাল ৪ টার সময় রোনগর গ্রামে হেদায়েত মোল্যার বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রী পাপিয়া বেগমের সাথে প্রতিবেদকের কথা হয়। রুপা বেগম বলেন আমার ঘরের পিছনে চাঙ্গির উপর ২ টা বাঁশ ছিলো গাছ থেকে পেঁপে পাড়ার জন্য। ঘরের চাঙ্গির পাড় থেকে ১ টা বাঁশ পাওয়া যায় রুপা আপার গোয়াল ঘরের চাঙ্গিতে। আমি এই বাঁশ এক সপ্তাহ ধরে তন্নতন্ন করে খুঁজেছি সারা বাড়ি আমার শশুর আলাউদ্দিন মোল্যার কাছে শুনলে তিনি জানান বাঁশের কথা আমি বলতে পারিনা কোথায় আছে বা কে নিয়েছে।
এরপর ঘটনার দিন সন্ধ্যায় আমার স্বামী হেদায়েত মোল্যা বাড়ি আসলে তাকে বলি বাঁশ রুপার গোয়াল ঘরে চাঙ্গির উপর আছে। সে তখন রুপার গোয়াল ঘর থেকে বাঁশটি বের করে নিয়ে আসে কিন্তু বাঁশ নিয়ে আসার কিছু সময় পরে রুপা আপার সাথে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। একপর্যায়ে রুপা ও আমি দুজনেই রাগের বশে উত্তেজিত হয়ে রুপার মুখে আমি একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয়। রুপার ঘরের সামনে উঠানের উপরে দুজনেরই মাথার চুল টানাটানির সময় যে কোন ভাবে তার কানের লতি ছিড়ে দুল পড়ে যায়। তখন রুপা মাটি থেকে দুল কুড়িয়ে  নিয়ে ক্রন্দনরত চিৎকার অবস্থায় বলে তোদের দুজনের থানা ও আদালতে মামলা করে এর প্রতিশোধ নিবো।
আমি তৎক্ষনাৎ আমার সাজে  ভাসুর গ্রাম চিকিৎসক আয়নাল মোল্যাকে নিয়ে এসে তার কানের লতি সেলাই করে দেয়। এরপর ঘটনার দিন অনুমান রাত ৯ টার সময় রুপার মেজো ভাই তৌহিদ মোল্যা, ভাবি লাবনী বেগম ও ছোট ভাই সাহাত মোল্যা এসে রুপা ও তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে যায় জহরুল হক মোল্যার বাড়িতে। হেদায়েত মোল্যার মাঝে ভাই রবিউল ইসলাম, হেমায়েত মোল্যার স্ত্রী গোলাপি, আয়নাল মোল্যা, রেশমা, ফরিদা, রিজিয়া বেগম, আলাউদ্দিন মোল্যা ও এলাকার প্রতিবেশী লোকজন জানান বাঁশ নিয়ে দুই বৌর মধ্যে তুমুল ঝগড়া বিবাদ হয়। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নীরিহ নিরপরাধ হেদায়েত মোল্যাকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে জেল খাটাচ্ছে।
রুপার খালাতো বোন সেলিনা বেগম বলেন দুই জা বাঁশ নিয়ে মারামারি করে চুল টানাটানির সময় কানের লতি ছিড়ে যায়। অনুমান রাত ১০ টার সময় রুপার মা, ভাবি ও দুই ভাই এসে তাকে তার বাপের বাড়ি নড়াইল জেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নে রাজাপুর গ্রামে নিয়ে যায়। আয়নাল ও সেলিনা আরও জানান রুপা বিয়ের শুরু থেকেই ছিলো চরিত্রহীনা স্বভাবের এবং ঝগড়া বিবাদ করা মহিলা। সে এর আগেও তার স্বামী রুবায়েত মোল্যার বিরুদ্ধে ৫-৬ বার থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার এ বিষয়ে রুপা বেগমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন ঘটনার দিন বিকাল সাড়ে ৫ টার সময় মাঝে ভাই, ভাবি ও ছোট ভাই আমার বাড়িতে বেড়াতে আসছিলো। রাতে তাদেরকে আমি রান্না ঘরে বিছানা করে ৩ জনকে শুতে দেয়।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান দেখেন বিস্তারিত ঘটনা বলার সময় এখন আমার নেই। আমার শশুর আলাউদ্দিন মোল্যা বাঁশ নিয়ে আমার ঘরে দিয়ে এসেছিলো। আমার আপন ছোট দেবর ২৭ অক্টোবর রাত ১১ টার সময় আমাকে ঘরের ছিটকানি খুলে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে আর সেই সাথে আমাকে শারীরিক নির্যাতন করে আমার কান ছিড়ে স্বর্ণের দুল ও গলার চেইন খুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। তারপর আমি বাপের বাড়ি রাজাপুর গিয়ে ৯-১০ দিন পর হাসপাতালে ডিএনএ পরীক্ষা করতে দেয়। এ বিষয়ে পলাশবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার লুৎফার রহমান বলেন ঘটনা হলো বাঁশ নিয়ে আপন দুই জায়ের মধ্যে মারামারি হয়ে বড় ভাবি রাগ-ক্ষোভের বশত আপন ছোট দেওরের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে আদালতে। মেম্বার লুৎফার আরও জানান হেদায়েত একজন খুবই ভালো ও সৎ চরিত্রের ছেলে সে খলিশাখালী অটো ব্রিকস ভাটার ট্রাক্টর চালক।
আর রুবায়েত মোল্যার স্ত্রী রুপা এলাকায় লোকজনের মুখে মুখে সমালোচিত একজন দুশ্চরিত্র ও ঝগড়াটে মহিলা। তবে রোনগর এলাকাবাসীর সচেতন লোকজন মনে করেন মিথ্যা মামলা দায়ের করে একজন সৎ ও নিরীহ ভালো মনের মানুষ হেদায়েত মোল্যা জেলে বন্দী জীবনযাপন করছে তারা সবাই আইনের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচারের মাধ্যমে নিরপরাধ হেদায়েতের মুক্তি কামনা করেন। গোপন সূত্রে রুপা খাতুনের মোবাইল অডিও কল রেকর্ড থেকে জানা যায় রুপা তার আপন দেবরকে জেল খাটানো এবং তার আপন ভাশুর, হেদায়েতের স্ত্রী ও শশুর-শাশুড়িকে ঘায়েল করার জন্য আদালতে মিথ্যা মামলা করে হেদায়েতকে জেলের ঘানি টানাচ্ছে। ধর্ষণের মেডিকেল রিপোর্ট প্রসঙ্গে কথা হলে রুপা বলে এটা পজিটিভ আসবে তবে তিনি আরও বলেন এই মামলার তদন্ত দারাগো সবই ঠিক করে দিবে তার সাথে আমার কথা হয়েছে। আসলে এখানেই প্রশ্ন হেদায়েত ধর্ষণ না করলে তাহলে কিভাবে এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব ও কর্তব্যরত এসআই এটা পজিটিভ বা ঠিক করে দিবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.