নওগাঁর মান্দায় মরুমিয়া নামে এক যুবক দশবছরে ২১ টি বিয়ে করে রেকর্ড অর্জন

উজ্জ্বল কুমার সরকার, প্রতিনিধি নওগাঁঃ একটি, দুটি কিংবা তিনটি নয়, ২১টি বিয়ে করেছেন নওগাঁয় মরু মিয়া (৩৫) নামে এক যুবক। ১০ বছরে ২১টি বিয়ে করে এলাকায় রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন এই যুবক। মজার বিষয় হলো— মরু মিয়ার যাদেরকে বিয়ে করেছেন তারা সবাই তার চেয়ে বয়সে বড়। কোনো কোনো নারীকে বিয়ে করেছেন বাচ্চাসহ। বর্তমানে তার সঙ্গে তিন বউ থাকলেও বাকি বউয়েরা কোথায় আছেন জানেন না তিনি। মরু মিয়া নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।জানা যায়, মরু মিয়ার বাবা কাজ করতেন বয়লারে (ধানের চাতাল)। সেই সুবাদে ছোটবেলা থেকেই তিনি বয়লারে বেড়ে উঠেন। এরপর মরু মিয়া বড় হলে তিনিও যোগ দেন সেই পেশায়। সেই কাজের ফাঁকে প্রায় দশ বছর আগে পরিবারের পছন্দে প্রথম বিয়ে করেন মরু মিয়া। এরপর নানা ঘটনায় একের পর এক বিয়ে করতে থাকেন তিনি। প্রতিবার বাড়ি আসার সময় বউ পরিবর্তন করে আসতেন। এলাকাবাসী সেসব নারীদের পরিচয় জানতে চাইলে নতুন বিয়ে করা স্ত্রী হিসেবে পরিচয় করে দিতেন। তার এমন ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। বর্তমানে মরু মিয়া শেষ স্ত্রীকে নিয়ে প্রতিদিন ভ্যানযোগে মান্দা ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাট-বাজারে সাহায্য চেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
২১টি বিয়ে করার বিষয়ে মরু মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, কোনো ওষুধ বা বশ করে নয়, তাকে দেখলেই বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যেতেন নারীরা। কোনো নারী তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মন খারাপ করবেন ভেবে না বলতেন না। এরপর চলতি পথেই কোনো মৌলভীকে ৫০০ টাকা দিয়ে বিয়ে পড়ে নিতাম। কিছুদিন সংসার করার পর যেখানে বিয়ে সেখান থেকেই বাদ দিয়ে দিতাম। কোনো কাবিননামা না থাকায় কোনো স্ত্রী আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারে না বলেও জানান তিনি।

মরু মিয়া বলেন, এখনো পর্যন্ত ২১টি বিয়ে করেছি। সর্বশেষ বিয়ে করেছি আদিবাসি এক নারীকে। তবে সব বউয়ের নাম মনে না রাখতে পারলেও ৮ বউয়ের নাম তিনি মনে রাখতে পেরেছেন। তারা হলেন— শহিদা, নার্গিস, সেলিনা, আলেয়া, তারা, জোসনা, রাবেয়া ও পারুল। যাদেরকে বিয়ে করেছি তারা সবাই এক বাচ্চা বা দুই বাচ্চার মা। আমাকে দেখার পর তারাই বিয়ে করে। আমার থেকে বয়সে বড় হওয়ায় আমি তাদেরকে কিছু বলতেও পারি না। এইভাবে এখনো পর্যন্ত ২১টি বিয়ে করেছি। এখন তিনটি বউ এক সঙ্গে একই বাড়িতে আছে। তবে সবাই আলাদা আলাদা থাকেন।

এই মরু মিয়া জানান, প্রায় দুই বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনা পায়ে আঘাত পান। এরপর থেকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলেন। কোনো ভারি কাজ করতে পারেন না। সেসময় শেষ বউ ছাড়া কেউ সেবা যত্ন না করলে নিয়ত করেন আরও কোনো বিয়ে করবেন না এবং কেউ যেন কখনও তার মতো এতগুলো বিয়ে করে ভুল না করে সেই কথাও জানান।বর্তমানে মরু মিয়া শেষ স্ত্রীকে নিয়ে প্রতিদিন ভ্যানযোগে মান্দা ও রাজশাহীর বিভিন্ন হাট-বাজারে সাহায্য চেয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। নিজের কোনো জায়গা জমি না থাকায় সরকারিভাবে ঘর করে দেওয়ার দাবি জানান মরু মিয়া।

তার শেষ স্ত্রী তারা ঢাকা মেইলকে বলেন, মোবাইলে আমার সঙ্গে তার (স্বামী) যোগাযোগ হতো। এরপর বিয়ে হয়। আমি বিয়ে হয়ে এসে দুই বউকে এই বাড়িতে দেখেছি। আমরা বোনের মতোই এখনো মিলেমিশে থাকি। তবে একসাথে থাতকে গেলে দুকথা হলে পরে আবার আমরা আমরা ঠিক হয়ে যাই। কেউ কাউকে হিংসা করি না।
নওগাঁ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.