কাজী মোখলেসুর রহমান এর স্মরণে আলোচনা সভা

জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রী কালাইয়ের কৃতি সন্তান কাজী পরিবারে জন্ম যুগপুরুষ কাজী মোখলেসুর রহমান এর স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কাজী পরিবারের আয়োজনে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকেলে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র সঞ্চালনায় কালাই প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় হাতিয়র কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন শিরট্টি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী, হাতিয়র কামিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মেজবাহ আহমেদ ডলার, প্রভাষক সেলিম রেজা, চান্দাইর দাখিল মাদ্রাসার সুপার হাফিজুর রহমান, কালাই প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সেলিম সরোয়ার শিপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানবিরুল ইসলাম রিগান, প্রচার সম্পাদক আব্দুন নুর নাহিদ, কাজী পরিবারের পক্ষে মারুফ, আলী আজম, প্রমুখ।
কাজী পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়,
কালাইয়ে সম্ভ্রান্ত কাজী পরিবারের মধ্যম পুত্র কাজী মোখলেসুর রহমান। তিনি ১৯০৬ সালে কালাইয়ে জন্মগ্রহন করেন। শিশুকালে তার বাড়ির নিকটে অবস্থিত মক্তবে শুরু হয় তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। এরপর তিনি কালাই ময়েন উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ স্কুলেই ১৯২৩ সালে ৪ বিষয়ে লেটার সহ স্কলারশিপ নিয়ে ১ম বিভাগে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯২৫ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে স্কলারশিপ সহ আই এ এবং ১৯২৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইংরেজিতে অনার্স সহ মুসলিম ছাত্রদের মধ্যে প্রথম হয়ে বি এ পাশ করেন। ১৯২৯ সালে কলকাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিসিএস পরীক্ষায় ১ম স্থান লাভ করে ১৯৩০ সালে অভিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে সরকারী চাকরিতে যোগদান করেন।
কাজী মোখলেসুর রহমান ময়মনসিংহ ও কুমিল্লায় জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব পালন শেষে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার থাকার সময় থেকেই তিনি কালাইয়ের উন্নয়নের জন্য কাজ করেন। অবহেলিত এলাকাবাসীর স্বাস্থ্য সেবায় প্রথমে তিনি কালাইয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্থাপন করেন। এ সময় অবিভক্ত ক্ষেতলাল নামে পরিচিত থাকলেও সমস্ত অফিস আদালত কালাইয়ে স্থাপিত হয়। ৬০ দশকে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এ সময় তিনি ফিসারিজ ডিপার্টমেন্টের ডাইরেক্টর,বোর্ড অফ রেভিনিও এর দায়িত্ব পালনের পর চাকরী হতে অবসর গ্রহন করেন। চাকরী জীবন শেষে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থানের প্রাদেশিক সরকারের খাদ্য ও কৃষি মন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালে কালাইকে বগুড়া-জয়পুরহাট মহাসড়কের আন্ডারে নিয়ে আসেন।
তিনি ১৯৬৯ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রীয় খেতাব সেতারায়ে কায়েদি আজম উপাধিতে ভূষিত হন।তিনি সরকারি ভাবে আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমন করেন। ১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে জন্মভূমি কালাইকে শেষ বারের মত দেখতে আসেন। সে সময় কালাইয়ে সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন যুবসংঘ এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে কালাই এর ইতিহাস খেতাবে ভূষিত করা হয়।
১৯৮৬ সালের ১০ মে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃতবরন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি ২ মেয়ে, ১ছেলে, নাতি নাতনি সহ অসংখ্য গুনাগ্রাহি রেখে গেছেন।
আলোচনা সভা শেষে কাজী মোখলেসুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে কাজী পরিবারসহ সকলের জন্য দোয়া করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.