জয়পুরহাটে ফসলের মাঠে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ধানক্ষেত নষ্ট

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের কাঁশড়া, নামা বাঁশখুর, বাঁশখুর ও গোবিন্দপুর গ্রামের ফসলের মাঠের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় চলতি বোরো মৌসুমে একটু বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে জমিতে থাকা পাকা ধান পানিতে নুয়ে পরে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
গেল দুদিনের টানা বৃষ্টিতে ওই এলাকার কিছু কিছু ধানক্ষেতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমেছে। যাঁর ফলে ওই মাঠের অন্তত ২০ হেক্টর জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকেরা।
সরেজমিন পরিদর্শন ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নামাবাঁশখুর, বাঁশখুর, কাঁশড়া ও গোবিন্দপুর গ্রামের কয়েক শতাধিক কৃষক এই মাঠে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের চাষাবাদ করেছেন। বর্ষাকালে বোরো মৌসুমে একটি ভারী বৃষ্টিপাত হলেই ধানক্ষেতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে ধানের ক্ষতি হয়। এতে বিপাকে পড়েন স্থানীয় কৃষকেরা।
কৃষকেরা জানান, এই মাঠে পানি নিষ্কাশনের মোট চারটি নালা রয়েছে। এসবের মধ্যে একটি পুরো বন্ধ। দুটি প্রায় বন্ধের পথে। আর একটি মাত্র নালা দিয়ে পানি বের হচ্ছে। তাতে খুব বেশি লাভ হচ্ছে না। এ কারণের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের নালা সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন কৃষকেরা। ধানক্ষেত ডুবে থাকায় ধান পানিতে ভিজে শেকড় গজাচ্ছে। মাঝে মধ্যে কিছু গাছে পচন ধরেছে। পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় টাকা খরচ করে ফসল ফলিয়ে তা ঘরে তুলতে পারবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।
কৃষক মোহসিন মন্ডল বলেন, বোরো মৌসুমে ওই মাঠে আমার ৮ বিঘা জমির ধান লাগানো আছে। তার মধ্যে ২ বিঘা কেটেছি। বাকি ৬ বিঘা পানিতে ডুবে আছে। মাঠের পানি বের হতে না পারায় এ সমস্যায় পড়েছি। সময় মতো ধান ঘরে তুলতে না পারলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সাইফুল ইসলাম নামে অপর আরেক কৃষক বলেন, আমি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ৩ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। ফসল বিক্রি করে তা পরিশোধ করার কথা। কিন্তু ফসল ঘরে আসবে কি না সেই চিন্তাই আছি। সামান্য কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসল তলিয়ে গেছে। ফসল নষ্ট হলে কীভাবে আমি ঋণ পরিশোধ করবো। এদিকে ফসল তলিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকেরা বেশি দাম চাচ্ছে।
স্থানীয় কুসুম্বা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পাঁচবিবি মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি জিহাদ মন্ডল বলেন, অত্র ইউনিয়নের বাঁশখুর গোবিন্দপুর ফসলের মাঠে যে কারণেই পানির জলাবদ্ধতা হোক তা দ্রুত পরিদর্শন করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষি ও কৃষকের কোনো ক্ষতি হোক আমরা সেটা চাই না। কৃষকেরা তাদের সোনার ফসল নিরাপদে ঘরে তুলবে এই প্রত্যাশা আমাদের।
 এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন দৈনিক কালের সংবাদ বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে মন্তব্য করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.