বেনাপোল বন্দরে কাঁচামাল আমদানির আড়ালে সক্রীয় চোরাচালান সিন্ডিকেট মিথ্যা ঘোষনায় মাদক আমাদানি

মোঃ আনিছুর রহমান, বেনাপোল প্রতিনিধি:  বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে মাছ,সবজিসহ বিভিন্ন প্রকার কাঁচামাল আমদানিকারকদের সাথে সখ্যতা গড়ে মাদকসহ মিথ্যা ঘোষনার  পণ্য আমদানিতে সক্রীয় হয়ে উঠেছে এক শ্রেনীর অসৎ ব্যবসায়ীরা। এতে একদিকে যেমন সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি হচ্ছে তেমনি মাদক ছড়াচ্ছে দেশের অভ্যন্তরে। এদিকে কাঁচামালের ওজন স্কেলে বন্দরে ট্রাক প্রতি বড় অংকের টাকা অর্থ বানিজ্য করে অনিয়মের সুযোগ করে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তবে  দির্ঘদিন ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলেও বন্দর,কাস্টমসের কোন মাথা ব্যাথা নেই। এতে ােভ প্রকাশ করেছেন সচেতন ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারক সোহারব হোসেন জানান, বেনাপোল বন্দরে চোরাচালান প্রতিরোধে স্থাপিত মোবাইল স্ক্যানিং মেশিনটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় আবারো মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মাছ,সবজিসহ বিভিন্ন কাঁচামালের ট্রাকের বৈধ পথে আমদানি পণ্যের সাথে চোরাচালান বেড়েছে। এতে সাধারন ব্যবসায়ীরা হয়রানি ও তির মুখে পড়ছে।

ফল আমদানি কারক মুজিবর জানান, বন্দরের ৩১ নাম্বার কাঁচামালের মাঠে ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তাদের নেতৃত্বে এসব অপরাধমুলক কর্মকান্ড বেশি পরিচালিত হচ্ছে। এদের সাথে সতা করে চোরাকারিরা ট্রাকে চোরাচালান পণ্য দেশে ঢোকাচ্ছে। এতে সাধারন ব্যবসায়ীরা হয়রানি হচ্ছে। বন্দরে সিসি ক্যামেরা থাকলে রহস্য জনক কারনে এসব অপরাধ ধরা পড়ছে না। এছাড়া কাঁচামালের মাঠে বন্দরের প্রতিটি দপ্তরে ঘুষ না দিলে পেপারে সার হয়না।

বন্দরের তথ্য মতে, সম্প্রতি  আমদানিকারক মেসার্স লাকী এন্টারপ্রাইজের মাছের ট্রাক কাঁচামালের মাঠ থেকে খালাসের চেষ্টা করছিলেন সোনালী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্সি লিমিটেডের শান্ত। এসময় ঐ ট্রাক থেকে কাস্টমস শাড়ি, থ্রিপিসের চালান উদ্ধার করে। এছাড়া  আমদানি করা সবজির (ক্যাপসিকাম) কার্টনে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা বিপুল পরিমাণ শাড়ি, থ্রিপিস, সিশা (মাদক) ও ওষুধ আটক করেছে বেনাপোল কাস্টমস। এছাড়া বন্দরে কাচামালের মাঠে ভুষির  ট্রাক  ট্রাক থেকে বিজিবি ফেনসিডিল ও আর এক ট্রাক থেকে ফেনসিডিল,গাজা আটক করে পুলিশ।।

সাম্প্রতি বেনাপোলে কর্মরত এনএসআইয়ের সহকারী পরিচালক ফরহাদ হোসেন তাদের প্রচেষ্টায় মিথ্যা ঘোষনার পণ্য চালান আটক নিয়ে গনমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছিলেন, তাদের কাছে গোপন সংবাদ আসে বেনাপোল বন্দরে সবজিজাতীয় খাদ্য ক্যাপসিকামের নামে একটি ভারতীয় ট্রাকে শাড়ি, থ্রিপিস ও মাদক পাচার হচ্ছে। পরে এনএসআইয়ের সদস্যরা কাস্টমসের সহযোগিতা নিয়ে বন্দরে প্রবেশ করে ট্রাকটিতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন। এ সময় দেখা যায় ক্যাপসিকামের কার্টনে ক্যাপসিকামের পরিবর্তে উন্নতমানের শাড়ি, থ্রিপিস ও মাদকজাতীয় দ্রব্য সিসা রয়েছে। বন্দর থেকে পণ্য চালানটি ছাড় করাতে সহযোগিতা করছিল বেনাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্বদেশ ইন্টারন্যাশনাল। পণ্যের আমদানিকারক যশোরের সিয়াম এন্টারপ্রাইজ। সরকারের সঠিক ভাবে রাজস্ব আদায়ের েেত্র তাদের এ অভিযান অব্যহত থাকবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি।

সম্প্রতি যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আহমেদ হাসান জামিল মাদকের একটি চালান আটকের ঘটনায় গনমাধ্যমকর্মীদের  জানিয়েছিলেন, আরআইবির গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন ভারত থেকে আমদানি করা কাঁচের গুড়াভর্তি একটি ট্রাকে বিপুল মাদকের একটি চালান বাংলাদেশে ঢুকবে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে বেনাপোল আইসিপি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা আগে থেকে গোপন অবস্থানে থেকে রাত ১০ দিকে ভারতীয় গাড়িটি শনাক্ত করে। পরে বিজিবি এবং কাস্টমসের যৌথ তল্লাশিতে কাঁচামালের মাঠে ভারতীয় ট্রাক থেকে ৯৯ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ সময় ওই ট্রাকের চালক রফিকুল মন্ডলকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়।

সম্প্রতি কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী জানান, চোরাচালান প্রতিরোধে স্ক্যানিং মেশিনগুলো চালু করতে দ্রুত পদপে গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া অবৈধ পণ্যর কোন তথ্য থাকলে কাস্টমসকে সহযোগিতা করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.