জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিপ্লবী গণজোট এর উদ্যোগে “বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ভারতীয় আধিপত্যের প্রতিবাদে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ও নির্বাচিত গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের দাবিতে” এক অবস্থান কর্মসূচি

জসিম উদ্দিন রাজা, সমন্বয়ক, বিপ্লবী গণজোট, প্রতিবেদকঃ ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ইং রোজ শুক্রবার সকাল ১০.৩০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিপ্লবী গণজোট এর উদ্যোগে “বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ভারতীয় আধিপত্যের প্রতিবাদে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে ও নির্বাচিত গণপরিষদের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের দাবিতে” এক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
বিপ্লবী গণজোট এর প্রধান সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ গ্রীণ পার্টির চেয়ারম্যান মোঃ মোজাম্মেল হক এর সভাপতিত্বে বিপ্লবী গণজোট এর সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনেম এর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী গরীব পার্টির সভাপতি দিদার হোসেন, বাংলাদেশ সর্বজনীন দলের সভাপতি অধ্যক্ষ নূর মোহাম্মদ মনির, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ পীস ফোরামের আহ্বায়ক ও জোটের সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন রাজা, জোটের সমন্বয় ও প্রয়াত নেতা স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অলক চৌধুরী, জাতীয় বাংলাদেশ তরুন সংঘের সভাপতি হাজী মোঃ ফজলুল হক, প্রয়াত নেতা স্মৃতি সংসদের সভাপতি আবু সুফিয়ান, পিস ফোরামের নেতা আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ সর্বজনীন দলের যুগ্ম সম্পাদক নাসির সেরনিয়াবাদ, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির মোঃ বিল্লাল মিয়া প্রমুখ।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ভারতীয় দালাল হাসিনা সরকার উৎখাতের পর দিল্লীর প্রভুদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তারা ভারতীয় গদি মিডিয়ার মাধ্যমে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে ভারতীয় জনমতকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিষিয়ে তুলেছে এবং পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের উপহাইকমিশন ও সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও সার্বভৌমত্বকে তারা চরমভাবে অপমান করেছে এবং জাতিসংঘের ভিয়েনা কনভেনশন চরমভাবে লঙ্ঘন করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। ড. ইউনূস বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জাতীয় ঐক্যের যে আহ্বান জানিয়েছেন তাকে সময়োপযোগী মনে করছি। এজন্যে ড. ইউনূসকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। তার এ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধিত, অনিবন্ধিত নির্বিশেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের পক্ষের সকল রাজনৈতিক দলকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, ভারতীয় আগ্রাসী শক্তিকে মোকাবেলা করার জন্য আমাদের অবিলম্বে একটি বলিষ্ঠ প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দিতে এগোতে হবে। বাংলাদেশের শিক্ষা নীতিতে এসএসসি পরীক্ষার পর সকল শিক্ষার্থীর জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের সাথে অভিন্ন শত্রুর আগ্রাসন মোকাবেলার জন্য সামরিক চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। হাসিনা-মনমোহন চুক্তি, হাসিনা- মোদি চুক্তি, হাসিনার সরকার ও আদানী চুক্তি অবিলম্বে জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং এর গণবিরোধী অংশ বাতিল করতে হবে।
আবদুল মোনেম বলেন, পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় উৎপাদক বাজারে ও ভোক্তা বাজারে (বিশেষ করে কাঁচামালের আড়তগুলিতে) ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। উৎপাদক বাজার থেকে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা পণ্য ক্রয় করে সরকার নিয়ন্ত্রিত পরিবহনের মাধ্যমে ভোক্তা বাজারে প্রেরণ করবেন ভোক্তা বাজারে নিয়োজিত কর্মকর্তা তা গ্রহণ করে খুচরা। বিক্রেতাদের মধ্যে নির্ধারিত দামে বিক্রি করবেন। পাশাপাশি বিদেশী পণ্য আমদানিতে টিসিবিকে আপাতত দায়িত্ব দিতে হবে। এতে পণ্য মূল্য যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে তা গুরুত্ব সহকারে এগিয়ে নিতে হবে। আর এই সকল সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সংবিধান সংস্কার সংবিধান সংস্কারের প্রশ্নে সংস্কার কমিশনের তাড়াহুড়া মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। সংবিধান সংস্কারের লক্ষ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে গণপরিষদের নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। নির্বাচিত গণপরিষদ প্রথমে একটি খসড়া সংবিধান প্রণয়ন করবে। প্রণীত খসড়া সংবিধানের উপর গণপরিষদের সদস্যগণ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জনমত যাচাই করবেন এবং সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। এই সংশোধনী প্রস্তাবসমূহের উপর ভিত্তি করে গণপরিষদ চূড়ান্ত সংশোধিত রূপে সংবিধান প্রস্তুত করবেন এবং গণভোটের আয়োজন করবেন। গণভোটে অনুমোদিত হবার পর রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে তা কার্যকর হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.