দেখার কেউ নাই? অনিয়ম দুর্নীতি ও নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে তৈরী হচ্ছে বেনাপোলের নারানপুর গ্রামে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়

মোঃ আনিছুর রহমান,বেনাপোল প্রতিনিধি: অনিয়ম দুর্নীতি এবং নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে তৈরী হচ্ছে বেনাপোল পোর্ট থানার নারানপুর নতুনপাড়া সরকারী প্রাথমীক বিদ্যালয়ের তিন তলা ভবন। নতুন এ ভবনে এত নিম্ন মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে যার কারনে ওই ভবন যে কোন সময় ছাদ ধ্বসে কোমল মতি শিক্ষার্থীদের মাথায় পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। এলাকাবাসীর অভিযোগ ওই ভবন ভেঙ্গে নতুন করে ভবন নির্মান করা হোক।

নারানপুর নতুন পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয় গত ২৭/০৬/২০২২ ইং তারিখে। ১,২৬,২৯,৬০৬ টাকার কাজ শেষে হস্তান্তর করার কথা ২৬/০২/২০২৩ ইং তারিখে। কিন্তু ও্ই প্রতিষ্ঠানের কাজ বিগত ১ বছর দুই মাস অতিক্রম করলেও কাজ হস্তান্তর এর কোন লক্ষন দেখা যাচ্ছে না। স্কুলের কাজ অত্যান্ত নিম্নমানের হওয়ায় কয়েক দফা সেখানে স্থানীয়রা কাজ বন্দ করে দেয় বলে গুঞ্জন রয়েছে।

স্থানীয় বেলাল হোসেন বলেন, স্কুলের ছাদ এবং প্লাষ্টার যে সময় করেছে সেই সময়ই তাদের বার বার স্মরন করানো হয়েছে তারপরও তারা এ্কই অনিয়ম দুর্নিতী করে যাচ্ছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আফজাল কনষ্ট্রাকশান এন্ড জাহানারা রিসোর্স  (জেভি ) প্রতিষ্ঠানের কর্তা মন্টু মিয়াকে স্থানীয়ারা কয়েকবার বললেও সে কোন কর্নপাত করে না। ছাদ ঢালাই দেওয়ার পর ছাদে পানি দিলে ওই ছাদের নীচ দিয়ে পানি পড়ায় স্থানীয় অভিভাবকরা হতবাক। বিষয়টি প্রতিষ্ঠানের মালিক সহ স্থানীয় নেতাদের জানালেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। স্কুলের দেওয়ালে পানি দিলে প্লাষ্টার খসে খসে পড়ে।

কলেজ পুড়ুয়া ছাত্র সুমন বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের সময় ইচ্ছামত ওই ঠিকাদার প্রতিষ্টান কাজ করিয়াছে। সে এলাকার কোন লোকের কোন কথা শোনে না। স্কুলের ছাদে পানি পড়া সহ কলাব সিকল গেট ও নিম্ন মানের তৈরী করেছে। যেখানে ৩ এম এম রড (পাত) দেওয়ার কথা সেখানে তারা ২ এম এম রড দিয়ে তৈরী করেছে।

নারায়নপুর গ্রামের আলামিন বলেন, যে কোন সময় ওই ভবনের ছাদ ধ্বসে পড়তে পারে। এতে যদি স্কুল চলাকালিন সময় ধ্বসে পড়ে তবে ছাত্র ছাত্রীরা নিহত হবে এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নাই।

স্থানীয় একাধিক অভিবাবক বলেন আমাদের স্কুলটি নির্মান প্রায় তিন বছর ধরে নির্মান করছে তাও শেষ হচ্ছে না। আরো কতদিন লাগবে তা ঠিক বলা যাচ্ছে না। এখানে প্রকৌশলীরা ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে ঘুষ খেয়ে চুপ রয়েছে মনে হয়। তানাহলে এত অনিয়ম এর মধ্যে দিয়ে কি ভাবে নির্মান হচ্ছে তাও একটি সরকারী প্রতিষ্ঠান। দেরীতে স্কুল নির্মান হওয়ার কাজ চলায় পুরাতন ভভনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতী কম। সেখানে ছেলে মেয়েরা কাস করতে যাচ্ছে না। এতে করে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।

এ বিষয় ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী মন্টুর আছে তার মুঠোফোনে আলাপ করলে সে বলে একটু অনিয়ম হয়েছে। আমরা সেগুলো ঠিক করছি। ছাদ দিয়ে পানি পড়া প্লাষ্টার উঠে যাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো মিস্তি্রুরা করেছে। আমি ওই মিস্ত্রিদের নামে মামলা করেছি।  স্কুলের কেইসি গেটে এল জি আরডি মন্ত্রনালয়ের বই অনুযায়ী রড না দেওয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওটা মালামাল রক্ষনা বেক্ষনের জন্য আপাতত দেওয়া হয়েছে আবার নতুন করে তৈরী করে আর একটি গেট লাগানো হবে। এটাতো নতুন তবে কেন আর একটা নতুন তৈরী করবেন তাতে খরচ বেড়ে যাবে । এ প্রশ্নে তিনি বলেন যেহেতু অনিয়ম হয়েছে সেহতেু তৈরী আর একটা করতে হবে। এছাড়া এখানকার এক শ্রেনীর লোক তার কাছে চাঁদা দাবি করেছে। কে চাঁদা দাবি করেছে তিনি তা বলতে পারেন নাই।

স্কুল আঙ্গিনায় ১৮ মার্চ বেলা ১২ টার সময়  উপস্থিত অভিভাবকরা স্কুল ভবনটি যাতে গুন গত নির্মান সামগ্রী দিয়ে নির্মান করা হয় তার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অভিভাবকরা বলেন, বিগত আওয়ামী সন্ত্রাসী দিয়ে তিনি এখানে নিম্ন মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করেছে। ওই আওয়ামী সন্ত্রাসীদের জন্য এলাকায় কেউ মুখ খুলতে পারে নাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *