শার্শার কামারবাড়ি সড়ক থেকে কাশিপুর পর্যন্ত জোড়াতালি দিয়ে মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে

মোঃ আনিছুর রহমান বেনাপোল প্রতিনিধিঃ শার্শার কামারবাড়ি মোড় থেকে কাশিপুর সড়কটি চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। ছোট বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় প্রায় সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে সড়কটিতে। এর মধ্যে কামারবাড়ি মোড় থেকে ওয়াবদা ব্রীজ পর্যন্ত সড়কটি বেশী খারপ অবস্থা। জোড়া তালি দিয়ে মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে যাতায়াত করছে মানুষ।

সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শার্শা কাশিপুর সড়কের কামারবাড়ি মোড় থেকে ওয়াবদা পর্যন্ত খানা খন্দপে পরিনত হয়েছে সড়কটি। মাঝে মধ্যে ইটের সলিংয়ের তালি দিতে দিতে উঁচু হয়ে গেছে সড়কের একাধিক জায়গায়। মানুষ চলাচলের অনুপযোগি সড়কে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, ট্রাক্টর, ট্রাক, নসিমন, করিমন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করায় গত তিন বছরে ৬ জন নিহত হয়েছে এসব যানবাহনে।

সুত্র মতে উত্তর শার্শার ৪ টি ইউনিয়নে প্রায় তিন লক্ষাধিক জনবসতি রয়েছে। এ পথে প্রতিদিন কয়েক হাজার জনগন ব্যবসা বানিজ্য বানিজ্য, কৃষি পণ্য, চাকুরীর সুবাদে যাতায়াত করে থাকে শার্শা, নাভারন, ও বেনাপোলে। তাদের যাতায়াতের একমাত্র এই পথটি ব্যবহার করে থাকে। বৃষ্টি বাদলের সময় স্কুল কলেজের ছেলে মেয়েদের যাতায়াত সহ সাধারন এসব জনগন ঝুকি নিয়ে কর্মস্থলে ও ব্যবসার উদ্দেশ্য যাতায়াত করে। গত ১০ বছরে সড়কটি কোন রকম নাম মাত্র  নিম্ন মানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। বছর যেতে না যেতে ইট বালূ খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানা খন্দপের।

স্থানীয় ইয়াসিন জানায় কামারবড়ি মোড় থেকে ওয়াবদা পর্যন্ত সব থেকে বেশী দুরাবস্থা এই সড়কটির। এখানে কয়েকবার সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গেলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কোন সুদৃষ্টি নেই। তিনি আরো বলেন উত্তর শার্শায় কয়েক জায়গায় শত শত বিঘা জমি ক্রয় করেছে স্থানীয় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতারা। তারা জমির দাম বৃদ্ধি পাবে বলে রাস্তাটি সংস্কার করে না বলে বাতাসে ও গুঞ্জন ছড়ায়।
স্থানীয় বাবুল আক্তার বলেন, কাশিপুর থেকে শার্শার দুরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। জরুরী রোগি ও প্রসুতিদের আনার সময় অনেকের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে।  কারন এই ১৫ কিলোমিটার সড়কে অনেক জায়গায় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় গাড়ি উল্টে যায় মাঝে মধ্যে।
শাড়াতলা বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীরা বলেন, তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে তাদের ব্যবসার ক্ষতি হয়। এছাড়া যানবাহনের চাকা রাস্তার গর্তে পড়ে  কাদাপানি ছিটকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মানেুষের গায়ে লাগে।
সরকারী বীরশ্রেষ্ঠ নুর মোহাম্মদ ডিগ্রি কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, শাড়াতলা থেকে শার্শায় আসতে সর্বোচ্চ ২০ মিনিটের রাস্তা। সেখানে রাস্তার বেহাল অবস্থার কারনে ঘন্টা পার হয়ে যায়। আবার খারাপ রাস্তার অজুহাতে ভাড়াও বেশী আদায় করছে যানবাহনগুলি।
একাধিক শিক্ষার্থী বলেন দেশের উন্নয়ন হলেও গত কয়েক বছরে এই সড়কটির কোন পরিবর্তন হয়নি। এটি অত্যান্ত লজ্জার বিষয়। এই সড়কের কারনে উপজেলার উত্তর শার্শার কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে ভোগান্তিতে রয়েছে।

ওয়াবদা সড়কের পাশে ঝরনা খাতুন বলেন, এই সড়কটি দিয়ে কোন গর্ভবর্তী প্রসূতি মা কখনোই স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারবেন না। সড়কটি এতটাই খারাপ অবস্থায় যে, তা প্রকাশ করা সম্ভব না। সড়কটি দ্রুত সংস্কার এর প্রয়োজন। তা না হলে এ ভাবে দুর্ঘটনা ঘটতে থাকবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বরুপদা গ্রমের এক ব্যাক্তি বলেন স্থানীয় নেতাদের দুর্বলতা রয়েছে। তারা উত্তর শার্শায় জমি ক্রয় করছে বিভিন্ন মাঠে। সড়ক নির্মান হলে জমির দাম বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। যার ফলে তারা রাস্তা সংস্কার বন্ধ রেখেছে। জমি ক্রয় শেষ হলে সড়ক নির্মান হবে তখন তাদের জমির দাম বৃদ্ধি পাবে। তবে শোনা যাচ্ছে ২ মাসের মধ্যে ঢাকা থেকে সড়কটির টেন্ডার হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.