মাগুরা প্রতিনিধি খন্দকার নজরুল ইসলাম মিলন: মাগুরা সদর উপজেলায় মনোয়ারা জামান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেতন করার জন্য ১ লাখ টাকা নিয়েছে বর্ণনা সহকারী প্রধান শিক্ষক ম্যাডাম, অভিযোগ জানালেন ৪র্থ পদের ভুক্তভোগী কর্মচারী। প্রধান শিক্ষক ওহিদুর রহমান জানালেন বর্ণনা খাতুন স্কুলটিকে ধ্বংস করার জন্য সাবেক সভাপতি কামরুল লায়লা জলির সাক্ষর জাল করে ভূয়া রেজুলেশন বই তৈরি করেছে।
এ্যাপারে বর্ণনা খাতুনকে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি গড়িমসি কথা এবং রেজুলেশন বই দেখাননি। আজ দুই মাস ধরে সহকারী প্রধান শিক্ষিকা বর্ণনা খাতুন বেশ কয়েকবার রেজুলেশন বই নিয়ে আসার কথা বলে পরে আর যোগাযোগ করে নাই, একজন মানুষকে কয়বার আর ফোন করা যায়।।
ঐ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ওহিদুর রহমান জানান, ২০১৯ সালে খ্রিস্টান শুরু করি নড়িয়াটিতে তৎকালীন এমপি সাইফুজ্জামান শিখর এবং ছয় গ্রামের লোক একত্রিত হয়ে আমরা একটি প্রতিষ্ঠানের স্বপ্ন দেখেছিলাম। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ছয় গ্রামের লোকজন এবং তৎকালীন এমপি সাইফুজ্জামান শিখর প্রতিষ্ঠান গড়ে দেওয়ার ব্যাপারে আমাকে অনুরোধ করেন। ২০২০ সালের ১৭ ই মার্চ থেকে করো না শুরু হয় অতি কষ্টে এবং ব্যাপক সমস্যা নিয়ে এলাকাবাসীর লোকজন সাথে ছাত্র-ছাত্রী সংগ্রহ করি ৩০০ জনের অধিক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে প্রতিষ্ঠান শুরু করি। আমি নিজ খরচে বড় প্যান্ডেল ও দুইশত চেয়ার ভাড়া নিয়ে এলাকার কিছু শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিয়ে আলোচনা সভা শুরু করি তাদের সহযোগিতায় এবং এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে। করোনার কারণে স্কুল বন্ধ হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিচালনা করেছি টিম করে তিনটি গ্রুপ করে ক্লাস করিয়েছি। স্কুলের কাজ ৯০ ভাগ শেষ হওয়ার পর এমতাবস্থায় ২০২২ সালে তৎকালীন সাবেক এমপি ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুল লায়লা জলি আপা আমাকে ফোন করে ডেকে বলে এক মাস ছুটি নিতে হবে। ছুটি নেয়ার এক মাস পর তিন দিন স্বাক্ষর শিটে সই করি এরপর তিনি আমাকে বলে আর স্কুলে আসতে হবে না আমি বললে আসবেন। সরকার পতনের পর সভাপতি কামরুল লাইলা জলি নিখোঁজ হওয়ার পর সহকারী প্রধান শিক্ষিকা বর্ণনা খানম সে আমার নামে ভুয়া দুইটা রেজুলেশন করে। সেখানে সভাপতি কামরুল লায়লা জলি ও অন্যান্যর স্বাক্ষর জাল করে অফিস আদালতে ভুয়া রেজুলেশন দেখিয়ে আমাকে বরখাস্তের ব্যাপারে কমপ্লেন করে। আদৌ ওই রেজুলেশন জলি আপা করেননি তাকে এক মাসের মৌখিক ভাবে মাগুরার তো দেয়া হয়েছিল তাকে কোন রেজুলেশন দেয়া হয়নি। সে নিজে মিথ্যা বানোয়াট আশ্রয় নিয়ে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে সে একটা নিজের তৈরি করা রেজুলেশন করে যেটা সম্পূর্ণ গর্হিত অন্যায় ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর এর সাথে এলাকার পাঁচ থেকে সাত জন লোক সহযোগিতা করছে, এমনকি তার স্বামী ডিসি কোর্টের অফিস সহকার অহিদুল ইসলাম সহযোগিতা করছে এই কাজে। মনোয়ারা জামান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফাউন্ডার হেডমাস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি নিখুঁতভাবে সারা বাংলাদেশের ইএম আই এস, এনটিআরসিএ, উপবৃত্তি সেকশন, যশোর শিক্ষা বোর্ড, ব্যানবেইজ ও মন্ত্রণালয়ে সমস্ত জায়গায় হেডমাস্টার হিসেবে তথ্য সংগ্রহ আছে। ছয় গ্রামের লোকজন ও এমপি সাইফুজ্জামান শিখর জানতেন ইছাখাদা গ্রামের হযরত পীর মোকাররম আলী মাদ্রাসায় অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলাম। তিনি বলেন আপনি ছাড়া এই প্রতিষ্ঠান গড়া সম্ভব নয় তাই এই প্রতিষ্ঠান এমপি হলে আপনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে আসবেন। যেহেতু প্রতিষ্ঠানের শুরু ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী এখানে কোন সহকারী প্রধান শিক্ষকের কোন পদ ছিল না। আমি সাতজনকে শিক্ষক পদে এনেছিলাম তারা হল সাবিনা ইয়াসমিন, ইরাদত হোসেন, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, শাহনাজ পারভীন, আবুল কাশেম। ৭৩ শতক জমি স্কুলের নামে আছে। মুল রেজুলেশন কথিত সহকারী প্রধান শিক্ষিকা বর্ণনা খানম মূল রেজুলেশন ও সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে সে বাংলায় নিয়োগ দেখিয়েছে বেতন করার জন্য। সে কখনও সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক বাংলা এইসব আশা করে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহিম অনেক আন্তরিক তার বিরুদ্ধে এক লাখ টাকা নেওয়ার অপরাধ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট কথা আর ওই সময় শিক্ষা অফিসার ছিলেন মালা রানী।
স্কুলের চতুর্থ কর্মচারী জানান, আমার ছোট ভাই এসে বর্ণনা আপার কাছে কাগজপত্র দিয়ে যায় আমার বেতন করানোর জন্য। গরু-ছাগল বিক্রি করে ১ লাখ টাকা ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বর্ণনার কাছে দিয়েছিলাম স্কুলের গেটের সামনে থেকে আমি বর্ণনা ম্যাডামের হাতে নিজে দিয়ে ছিলাম। এখন সে অস্বীকার করলে উপর আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবে।
সহকারী প্রধান শিক্ষিকা বর্ণনা খানমের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে গড়িমসি কথা বলেন এবং রেজুলেশন বহি দেখানোর কথা বলেও আজকাল এই বলে আর দেখায়নি।
মাগুরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহিম জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষকের নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় কোন পদ নেই, ম্যানেজিং কমিটি নিয়োগ দিয়েছে বর্ণনাকে। আর আমাকে জড়িয়ে এক লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে এটা মিথ্যা কথা তখন তো আমি ছিলাম না। ২০২২ সালের ২০ এপ্রিল আমি যোগদান করি, আর ১৩ সদস্য বিশিষ্ট বোর্ড হয় ম্যানেজিং কমিটিতে।