নওগাঁয় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

আতাউর শাহ্, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর সদর উপজেলার বলিহার দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বুধবার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে জাহাঙ্গীর নামের এক যুবক। এর আগে গত সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় প্রঙ্গণে এলাকাবাসীর আয়োজনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, এই প্রধান শিক্ষক নিয়োগের আগে স্কুলটি জাঁকজমকপূর্ণ ছিল। নবম ও দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের মধ্য হতে দূর্বল শিক্ষার্থীদের আলাদা ভাবে ক্লাস করা হতো এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের নানা ভাবে সহযোগীতা করা হতো। বিভিন্ন দিবস ও ধর্মীয় দিনগুলো জাঁকজমক ভাবে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গন্যমান্য ব্যাক্তি বর্গের সমন্বয়ে পালিত হতো। কিন্তু আফজাল হোসেন প্রধান শিক্ষক হওয়ার পর হতে শিক্ষা ব্যাবস্থা ভেঙ্গে তছনছ করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক, নৈশ্য প্রহরী, অফিস সহায়ক, অফিস সহকারীদের নিয়োগ হইতে ৪৭ লক্ষ টাকা নিলেও স্কুলে খাতে জমা করেননি। গত কয়েক বছর হতে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন বন্ধ রেখে দুর হতে কমিটির সভাপতি বানিয়ে স্কুলকে এক নায়কতন্ত্র বানিয়ে চলেছেন। স্কুলের মার্কেট, ফসলি জমি, পুকুর ইজারা ও স্কুলের মূল্যবান সম্পদ নানা কৌশলে নানা ভাবে হস্তান্তর করেছেন। আয়কৃত অর্থ পুরোপুরি স্কুল ফান্ডে জমা না করে জমাকৃত অর্থ বিভিন্ন ভাবে খরচ দেখানো হয়েছে এবং অনিয়ম করে স্কুলের বিভিন্ন গাছ কেটেছেন।

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, গত ১২ থেকে ১৩ বছরে স্কুলের আয় ছিল সর্বমোট প্রায় ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এরমধ্যে কিছু অর্থ জমা করলেও ভূয়া ভাউচারের মাধ্যমে খরচ দেখিয়ে তা লোপাট করেছে। এ সময় বিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় হতে আজ পর্যন্ত বিশ লক্ষ টাকার কোন উন্নয়ন করা হয়নি। প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন গত সরকারের বড় দুর্নীতিবাজদের তালিকায় মাঠ পর্যায়ের বড় দুর্নীতিবাজ। 

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিদ্যালয়ের নামে থাকা ছয়টি পুকুর লিজ দেওয়া নিয়ে প্রধান শিক্ষক নানান তালবাহানা করছে। গত সোমবার প্রকাশ্যে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে জনস্মুখে বিদ্যালয়ের পুকুর লিজ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি সেদিন বিদ্যালয়েই আসেননি। গত ১২-১৩ বছরের মতো আবারও তিনি অর্থ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ের পুকুরগুলো গোপনে লিজ দেওয়ার পাঁয়তারা করেছিলেন। কিন্তু এলাকাবাসী সেটা আর হতে দেবে না। 

এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন বলেন, আমি কোন দূর্ণীতি করিনি। স্বচ্ছতার সাথে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি। তবে তিনি ২০১১ সালে সাড়ে চার লক্ষ টাকা দিয়ে নিয়োগ নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন এবং অন্যান্য শিক্ষকদের কাছে থেকে কিছু টাকা নেওয়া হয়েছিল। 

অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *