বেনাপোল অমর একুশ উদযাপন। বৃটিশদের থেকে কোন অংশে পাকিস্তানীরা কম অত্যাচারী ছিল না -মেয়র লিটন

মোঃ আনিছুর রহমান, বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও বেনাপোল পৌরমেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেছেন, ভাষা শক্তি, ভাষা আবেগ, ভাষা আবেদন একটি মানুষকে একটি জাতিকে অনন্য এক উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। বাংলা ভাষা আমাদের মায়ের ভাষা, আমাদের প্রানের ভাষা, সুমুধুর ভাষা যে ভাষায় গান কবিতা শিল্প সাহিত্য আমাদের অন্তর আতœা জুড়িয়ে যায়। যে ভাষার রুপ রস সারা পৃথিবীকে আবেগ আল্পুত করে তোলে সেই দিনটি একুশে ফেব্রয়ারী। একটি সময় রাজনৈতিক দৈন্যতার কারনে ধর্মের ভিত্তিতে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভক্ত হয়েছিল। পুর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান এর দুরত্ব ২ হাজার কিলোমিটার। আর দেশকে বিভক্ত করেছিল একই ধর্মের সংখ্যা গরিষ্ট মানুষ হিসাবে। বাঙালীরা আশা করেছিল তাদের থেকে সুবিচার পাবে। আমাদের সন্তানরা চাকরী পাবে, অভাবীরা খাবার পাবে। কিন্ত আমরা পেলাম তার উল্টোটা। তারা আমাদের একের পর এক ঠকাতে থাকল। পুর্ব পাকিস্তানের সম্পদ নিয়ে যেতে থাকল পশ্চিম পাকিস্থানে। ২৪ টি বছর এই ভুখন্ডের মানুষকে তারা ঠকাতে থাকল। তারা আমাদের ভাষায় হাত দিয়েছে। একটি জাতির প্রধান এবং প্রথম সম্পদ হচ্ছে ভাষা। সেই ভাষায় তারা হাত দিয়েছে। তারা আর যাই হোক বন্ধু হতে পারে না। তারা বৃটিশদের থেকে কোন অংশে কম অত্যাচার করেনি আমাদের এই ভুখন্ডের মানুষকে। তারা আমাদের অধিকার মায়ের ভাষা কেড়ে নিতে চেয়েছিল। যারা আমাদের মায়ের ভাষার জন্য রাজপথে ঢেলে দিয়েছেন বুকের তাজা রক্ত, লড়াই করেছেন আমাদের অস্তিত্বের জন্য, তাদের আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। তাদের সে রক্তভেজা পথ ধরে আমাদের ভাষা বাংলাও একদিন ইংরেজির মতো পৃথিবীর বুকে আন্তর্জাতিক ভাষার মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। মঙ্গলবার সকাল ৯ টার সময় তিনি বেনাপোল বলফিল্ড মাঠে  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এসব কথা বলেন।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮ টার সময় বেনাপোল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বেনাপোলে শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগ ও বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগ এর আয়োজনে ভাষা শহীদদের স্মরনে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আহসান উল্লাহ মাষ্টার।

সাবেক বেনাপোল পৌর মেয়র  লিটন বলেন, এই ভূখÐ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের পূর্বপুরুষরা বার বার রক্ত দিয়েছেন।  জাতিকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। কোন অন্যায্য দাবি-অনধিকার তারা মেনে নেননি। আমরাও কোন অন্যায্য দাবি-অনধিকার মেনে নেব না। আমরা এই দিনটিকে শোক দিবস হিসেবে পালন করতাম। যেদিন সারাবিশ্ব সম্মান জানিয়ে বাংলা ভাষাকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আমি সেইদিন থেকে বিশ্বাস করি, ইংরেজি ভাষা বলে যেমন একজন লোক নিজেকে স্মার্ট মনে করেন একদিন বাংলা ভাষা বলেও মানুষ তার স্মার্টনেস দেখাবে। বাংলা ভাষার শিল্প-সাহিত্য, কবিতা-গল্প একদিন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, সুধীজন, প্রিয়জন, আপনজন প্রিয় বেনাপোলবাসী, আমরা সবাই সবাইকে ভালোবাসি।আমাদের সন্তানদেরকে একুশের চেতনা, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে এবং তা লালন করাতে হবে। কারণ এ দিনগুলো আমরা রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি। এর আগে বেনাপোল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীরা বিনম্র শ্রদ্ধায় পুস্পস্তবক অর্পন করেন শহীদদের স্মরনে। শ্রদ্ধা নিবেদন করে শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগও বেনাপোল পৌর আওয়ামীলীগ, বেনাপোল পৌরসভা, বেনাপোল পৌর যুবলীগ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়, পৌর মহিলা আওয়ামী লীগ, শার্শা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ, বেনাপোল পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারী, বেনাপোল ইমরাত শ্রমিক ইউনিয়ন, শার্শা উপজেলা ও বেনাপোল পৌর ছাত্রলীগ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন  শার্শা উপজেলা আওয়ামীলীগ এর সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালেক, দপ্তর সম্পাদক আজিবর রহমান, পৌর প্যানেল মেয়র সাহাবুদ্দিন মন্টু, শার্শা উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিউটি খাতুন, ও আওয়ামী নেত্রী হালিমা খাতুন, বেনাপোল পৌর আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক সুকুমার দেবনাথ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম এর যশোর জেলার কার্যকরি সদস্য জাকির হোসেন আলম,বেনাপোল ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশাদুজ্জামান আশা, বেনাপোল পৌর আওয়ামী ও সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি রহমত আলী,  প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.