আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: শাবিতে র্যাগিংয়ে আরও ১০ জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে ৫ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এই পাঁচ জন ছাড়াও র্যাগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন আরো ১০ জন। তারা সকলেই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তদন্ত কমিটি সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টও মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবেন দায়িত্ব প্রাপ্তরা। এতে যাদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত হবে, তাদের সবাইকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শাস্তির আওতায় আনা হবে। তবে সাময়িক বহিষ্কার হওয়া পাঁচ জনের বাইরে নতুন করে কাউকে শোকজ কিংবা কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রক্টর আরো বলেন, যাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী তাদের হলের আসন বাতিল এবং ক্যাম্পাসে অবস্থানেও বিধিনিষেধ রয়েছে।
২০ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজতবা আলী হলের ১১১ নম্বর কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন (বিবিএ) বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদেও ডেকে নিয়ে র্যাগ দিয়ে ছিলেন একই বিভাগের কয়েক জন সিনিয়র শিক্ষার্থী। র্যাগের শিকার নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক শিক্ষার্থী ভয়ে বাড়িতে চলে গিয়ে ছিলেন। পরে ওই শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে বিষয়টি মুঠোফোনের ক্ষুদে বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধানকে অবহিত করেন। তিনি ওই রাতের ঘটনাকে তার ‘জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ রাত’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপর ঘটনাটি জানাজানি হলে ২২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। প্রথম দিকে শুধু এক শিক্ষার্থীকে র্যাগ দেওয়ার বিষয়ে আলোচিত হলেও পরে জানা যায়, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ১০ জনের মতো নবীন শিক্ষার্থী রাতে পরিচয় পর্বের নামে ডেকে নিয়ে র্যাগ দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনার সঙ্গে ১৫-১৬ শিক্ষার্থী জড়িত।
র্যাগের ঘটনায় বহিষ্কৃত ৫ শিক্ষার্থী হলেন, মো. আপন মিয়া, মো. আল আমিন, মো. পাপন মিয়া, মো. রিয়াজ হোসেন ও মো. আশিক হোসেন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের (বিবিএ) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। সেই সঙ্গে তারা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তবে তাদের দলীয় কোনো পদ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতারাও স্বীকার করেছেন বহিষ্কৃতদের মধ্যে ৩ জন তাদের কর্মী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বিকেলে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি বৃহস্পতিবার থেকে তদন্ত শুরু করেছে। আগামী ৫ মার্চ তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।