কালের সংবাদ ডেস্কঃ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লার প্রথম চালান বন্দরে নোঙর করবে চলতি মাসে কক্সবাজারের মাতারবাড়ীর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে । কমিশনিং-সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের আগেই উৎপাদনের যাওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ (সিপিজিসিবিএল)।
সিপিজিসিবিএলের নির্বাহী পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল কাজ প্রায় শেষ।
যেখানে রাত-দিন বিরামহীন কর্মযজ্ঞ চালাচ্ছেন দেশি-বিদেশি হাজার হাজার শ্রমিক, ১ হাজার ৬০০ একর লবণভূমিতে গড়ে উঠেছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণের ভৌতিক অগ্রগতি হয়েছে ৯১ শতাংশের বেশি। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্যাকেজ ১ ও ২-এর আওতায় চ্যানেল তৈরি করা হয়েছে ৩০০ মিটার প্রস্থ এবং ১৪ দশমিক ৩ কিলোমিটার লম্বা চ্যানেল। তৈরি করা হয়েছে সেডিমেন্টেশন মিটিগেশন ডাইক, যা চ্যানেলের নাব্য নিশ্চিত করবে।
চকরিয়া-মাতারবাড়ী ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন এবং মাতারবাড়ী ১৩২/৩৩ কেভি সাব-স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই ব্যবস্থাপনার জন্য তৈরি করা হয়েছে লাইফটাইম অ্যাশপন্ড, যার মধ্যে একটি অ্যাশপন্ডের আয়তন ৯০ একর, আরেকটি ৬০০ একর। কয়লা মজুদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৮০ একর জমিতে কোল ইয়ার্ড। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাওয়ার হাউস, বয়লার, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট ও ফ্যাসিলিটিজের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মাদার ভ্যাসেল থেকে সরাসরি কয়লা গিয়ে জমা হবে সাইলোতে।
এ সাইলোতে ৬০ দিনের কয়লা মজুদ রাখা যাবে, যা এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাস থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে রক্ষা করতে নির্মাণ করা হচ্ছে ১৪ মিটার উঁচু বাঁধ। বাঁধের ভিতর অবস্থিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অবকাঠামো থাকছে ১০ মিটার উঁচু।
প্রসঙ্গত, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির জন্য ২০১৪ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে ঋণচুক্তি করা হয়। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি ৩ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে দেবে জাইকা। বাকি ৭ হাজার ৯৩৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা আসবে বাংলাদেশ সরকার ও সিপিজিসিবিএলের নিজস্ব তহবিল থেকে। ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়।