তালশাঁস বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন চঞ্চল

রিফাত হোসেন মেশকাত, জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ স্বপ্ল খরচ কিন্তু পরিশ্রম বেশি, তালেরশাঁস বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন চঞ্চল। একটি তাল গাছের সম্পন্ন তাল কিনতে খরচ হয় ২শ৫০ থেকে ৩শত টাকা। সেই তাল সারাদিনে ভ্যানযোগে বিক্রয় করে পাওয়া যায় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। এতে লভ্যাংশটা বেশি থাকলেও পরিশ্রম ও কাজের ঝুঁকিটা বেশি। কষ্টের মধ্যেও সংসার চলছে চঞ্চল এর।

চলছে মধু মাস। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো জয়পুরহাটের আক্কেলপুর বাজারেও আম, লিচুসহ হরেক রকমের মৌসুমি ফলের দেখা মিলছে। সেই সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে সুস্বাদু তালশাঁসও। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে বেড়েছে ফলটির কদর।

আক্কেলপুর পৌর শহরের অলিগলিসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও গ্রামের মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস। একটি শাঁস ৫ টাকা এবং একটি তাল ১৫-২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতাদের দাবি, আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্য ফলের ক্ষেত্রে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তালশাঁসে এসবের প্রয়োজন হয় না। তাই ভেজালমুক্ত তালশাঁসের কদর বেশি।

আক্কেলপুর সরকারি মুজিবর রহমান কলেজ গেটের সামনে ভ্যানযোগে তালশাঁস বিক্রি করছেন, উপজেলার সোনামূখী ইউনিয়নের জাফরপুর গ্রামের ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম চঞ্চল। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে তালগাছ মালিকদের কাছ থেকে তাল সংগ্রহ করেন। পরে আক্কেলপুর পৌর কলেজ বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে তাল বিক্রি করেন।

চঞ্চল বলেন, প্রতিবছরই এ সময়ে জৈষ্ঠ্যের প্রথম সপ্তাহ থেকে আষাঢ় মাস পর্যন্ত আমি তালশাঁস বিক্রি করি। গরমের সময় প্রচুর চাহিদা থাকে। দাম ভালো পাওয়া যায়। সারাদিনে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার তালের শাঁস বিক্রি হয়। প্রায় এক হাজার টাকা মুনাফা থাকে। তিনি বলেন, তালগাছ থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ফল কেটে আনা কষ্টকর বিষয়। অতিরিক্ত পরিশ্রম দিয়ে কেটে আনতে হয়। একটি গাছে ৫শত-৭শত টি তাল পাওয়া যায়।

আক্কেলপুর পৌর সভার কলেজ গেটের সামনে তালশাঁস কিনতে আসা হাইটেক কিন্ডার গার্টেন স্কুলের শিক্ষক মোঃ সাহাজান আলী বলেন, ‘গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালশাঁস অনেক উপকারী। এর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। খেতেও সুস্বাদু।

আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইমরান হোসেন বলেন, ‘এবছরে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) এর অর্থায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে উপজেলায় ৪শটি তাল গাছের চারা রোপন করা হয়েছে। তালগাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো বজ্রনিরোধক। তালশাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমের দিনে তালশাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রনসহ অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.