মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের নিখোঁজের প্রায় পাঁচ মাস পর কলেজ ছাত্র নাইম (২৩) এর হাড় গোরসহ বস্তাবন্দী গলিত লাশ বাড়ির টিউবওয়েল এর পাশে গর্ত খুড়ে উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান আসামী রেজ্জাকুল ও তার স্ত্রী সাবিনা কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মজ্ঞলবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় র্যাব-৫ এবং র্যাব-১২ এর যৌথ অভিযানে বগুড়া সদর থানার পীরগাছা এলাকা হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জয়পুরহাট র্যাব-৫ এর অধিনায়ক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেফতাররা হলেন যারা , বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গুপীনাথপুর গ্রামের মোজাম্মেল আলীর ছেলে রেজ্জাকুল আলী (৪৩) ও তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন (৩৮)। গত কয়েক মাস ধরে তারা পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামে শামসুল ইসলামের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর (শনিবার) ধরঞ্জী বাজার এলাকার শামসুলের বাড়িতে গোসলখানা নির্মাণের জন্য মাটি খনন করার সময় অজ্ঞাত ব্যক্তির গলিত লাশ পাওয়া যায়। পরে তার মা ও পরিবারের লোকজন মরদেহটি সনাক্ত করে। এ ঘটনায় গত ১০সেপ্টেম্বর/২৩ মৃত নাইমের মা বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তের একপর্যায়ে হত্যাকান্ডের আসামী সনাক্ত করতে সক্ষম হলে আসামী এরই মধ্যে আত্মগোপনে চলে যায়। গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে আসামীদের অবস্থান নিশ্চিত করার পর পরবর্তীতে র্যাব -১২ বগুড়া ক্যাম্পের সহযোগীতায় আসামীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পাঁচবিবি থানায় আসামীদের হস্থান্তর করা হয়েছে।
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, বস্তাবন্দী লাশটি উদ্ধারের পর মরদেহটি নাইমের বলে শনাক্ত করে মা গোলাপী বানু বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে । মামলায় পরকীয়ার জেরে নাঈমকে হত্যা করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। তিনি আরো জানান, ভাড়াটিয়া রাজ্জাকের স্ত্রী সাবিনার সঙ্গে পরকীয়ার কারণে নাঈম হোসেনকে হত্যার পর মরদেহটি গুম করতে মাটি খুঁড়ে লুকিয়ে রাখা হয়। আসামীদের আজ বুধবার আদালতে পাঠানো হবে।
জানাযায়, পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের মাসুদ রানার ছেলে নাঈম হোসেন (২৩) গত ২২ এপ্রিল ঈদের দিন সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হলে আর আর ফিরে আসেনি। বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরেও সন্ধান না পেয়ে ২৫ এপ্রিল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নাঈমের পরিবার। জিডির পর নিখোঁজ নাইমের সন্ধানে পুলিশ তৎপর থাকলেও তার সন্ধান মিলেনি।
পরবর্তীতে নিখোজের প্রায় পাঁচ মাস পর গত ৯ সেপ্টেম্বর কলেজ ছাত্র নাইমের লাশ একই গ্রামের শামসুল এর বাড়ির গোসলখানার কাজ করতে গিয়ে টিউবওয়েল এর পাশে গর্ত খুড়তে গলিত লাশের গন্ধ বের হলে পুলিশকে খবর দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে।