গোল্ডেন গ্লাভস নিয়ে মার্টিনেজের ‘অসভ্য উদযাপন’, সমালোচনার ঝড়

কালের সংবাদ ডেস্কঃ  এমিলিয়ানো মার্টিনেজ সেরা গোলরক্ষক। এতে কারো কোনো দ্বিমত নেই। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে মেসির সাফল্য নেই- এমন আক্ষেপটা তৈরি হতো অধিকাংশক্ষেত্রে গোলরক্ষকদের কারণেই। শক্তিশালী গোলরক্ষক ছাড়া টুর্নামেন্ট জেতার বিকল্প নেই- এটা হাড়ে হাড়ে টের পেতেন মেসি।

এমিলিয়ানো মার্টিনেজ এসে সেই আক্ষেপ ঘোচালেন। ২০২১ কোপা আমেরিকার শিরোপা জয় সম্ভব হয়েছে মার্টিনেজের দৃঢ়তার কারণে। এবার বিশ্বকাপও মেসির হাতে ওঠার পেছনে অন্যতম বড় ভূমিকা ছিলো এমিলিয়ানো মার্টিনেজের। এমবাপে, কামাভিঙ্গাদের মুহুর্মুহু গোলের সুযোগগুলো ঠেকিয়ে দিয়েছেন মার্টিনেজ।

টাইব্রেকারে শট ঠেকিয়ে দিয়ে আর্জেন্টিনার জয়ের অন্যতম নায়কে পরিণত হন মার্টিনেজ। কিন্তু তার আচার-আচরণ নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকারে পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এই ম্যাচের পর নেদারল্যান্ডস কোচ লুই ফন গালের সঙ্গে অসভ্য আচরণ করেছিলেন মার্টিনেজ। তাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেছেন তিনি। অথচ লুই ফন গালকে মনে করা হয় ফুটবল বিশ্বের অনেক সভ্য এবং ব্যক্তিত্ববান একজন কোচ হিসেবে।

বিশ্বকাপের ফাইনালের পরও একইভাবে অশালীন আচরণ করে বিতর্ক তৈরি করেছেন মার্টিনেজ। গোল্ডেন গ্লাভস পুরস্কার নেওয়ার পর তিনি যে অঙ্গভঙ্গি দেখিয়েছেন, তাতে তার শালীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্বকাপে তার পারফরম্যান্সের প্রশংসা করছেন সবাই। ফাইনালের পর মার্টিনেজের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রতিযোগিতার সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার ‘গোল্ডেন গ্লাভস’। পুরস্কার নেওয়ার পর মঞ্চে উপস্থিত সবার সঙ্গে করমর্দন করেন মার্টিনেজ। তারপর মঞ্চ থেকে নেমে আসার আগে ট্রফি নিয়ে একটি ভঙ্গি করেন লিওনেল মেসির এই সতীর্থ।

আপাতত পুরস্কার প্রাপ্তির উচ্ছ্বাস প্রকাশ মনে হলেও, তার সেই ভঙ্গি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বিশ্বজয়ী গোলরক্ষকের আচরণের সমালোচনা করেছেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে কাকে বা কাদের উদ্দেশ্য করে তিনি কেন এমন করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। মার্টিনেজ নিজে অবশ্য তার এই আচরণ নিয়ে মুখ খোলেননি।

এমিলিয়ানো যখন এই আচরণ দেখাচ্ছিলেন, তখন ফক্স টিভির কভারেজে ধারাভাষ্যকার খুব অবাক হয়ে বলছিলেন, ‘ওহ নো’। বিবিসির ধারাভাষ্যে একজন বলছিলেন, ‘নো ডোন্ট ডু দ্যাট, এমি। ডোন্ট ডু দ্যাট।’

আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন গত বছর। লিওনেল স্কালোনিই তাকে জাতীয় দলে ডাকেন। গত রাশিয়া বিশ্বকাপে ভাইকে নিয়ে খেলা দেখতে গিয়েছিলেন মার্টিনেজ। আর্জেন্টিনা হেরে যাওয়ার পর ভাইকে কথা দিয়েছিলেন কাতারে তিনি যাবেন দেশের এক নম্বর গোলরক্ষক হয়ে। নিজের কাছে করা নিজের প্রতিজ্ঞা রেখেছেন মার্টিনেজ।

২০১২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মার্তিনেস ছিলেন আর্সেনালে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটির হয়ে ১৫টি ম্যাচ খেলেন। তাকে এই ৮ বছরে ৬টি ক্লাবকে ধার দিয়েছিল আর্সেনাল। ২০২০ থেকে তিনি খেলছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের আর এক ক্লাব অ্যাস্টনভিলার হয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.