কালের সংবাদ ডেক্স ঃ ‘জয় বাংলা’ বা ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ এই দুটির একটির দ্বারা এদেশের মানুষকে উজ্জিবীত করে যা এদেশের জাতির পিতাও সমর্থন করে ছিলেন যা ১৯৭১ সালের সাধারণ জনগনেরও প্রতীকী স্লোগান হয়ে দাড়ায়।
কিন্তু অপরটি এদেশে প্রতিষ্ঠা করবার চেষ্টা করেছিলো এদেশের জাতির জনকের হত্যাকারী বিশ্বাস ঘাতকরা ও রাজাকার আলবদররা।
আসলে দু’টোই স্লোগান একই জিনিস। কিন্তু জিন্দাবাদ স্লোগান এদেশের মানুষকে উজ্জিবীত করেনা।
কিছু রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজের লোকজন বলেন তাদের ভাষায় বিতর্কের প্রয়োজন কী দু’টোর ত একই অর্থ।
‘জয় বাংলা’ এবং ‘জিন্দাবাদের’ মধ্যে মিল বা পার্থক্য কী তা ব্যাখ্যা করে বললে দাড়ায় কি এমন?
আসলে অনুভুতিটা এ রকম যে একজন মানুষের প্রতীকী নাম ঠিক সে রকমই ‘জয় বাংলা’ হচ্ছে আন্দোলন-সংগ্রাম এবং জনযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের প্রতীকী নাম বা পরিচয়। এই স্লোগানের মাধ্যমেই আমাদের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল এবং আমরা বিজয় অর্জন করেছি। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানই ছিল আন্দোলন-সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ের ‘প্রেরণা ও শক্তির উৎস’। ‘হজরত আলীর’ শক্তিকে যেভাবে মুসলমানরা ‘ইয়া আলী’ বলে প্রেরণা লাভ করেন, আমাদের জন্য ‘জয় বাংলা’ও সেই একই রকম প্রেরণার উৎস।
ঠিক একইভাবে জিন্দাবাদ হচ্ছে: সাম্প্রদায়িক, উগ্র এবং ধর্মীয় জাতীয়তাবাদ তথা ‘ধর্ম-ভিত্তিক রাষ্ট্রের’ প্রতীকী স্লোগান হিসাবে প্রতিস্হাপন করেছেন কিছু মানুষ। শাব্দিক অর্থ দিয়ে এ সবের বিচার বা সিদ্ধান্ত নেয়া যায় না।
যেমন ‘রাজাকার’ অর্থ সহযোগী। কিন্তু আমাদের দেশে তার সামাজিক অর্থ হচ্ছে, ‘স্বাধীনতা বিরোধী’ এবং ‘ধর্মীয় জঙ্গিবাদী শক্তি’। আবার ‘মীর জাফর’ হচ্ছে একজনের নাম। কিন্তু এ শব্দটি ব্যবহৃত হয় ‘বিশ্বাস ঘাতক’ হিসাবে।
সুতরাং যে কোনো শব্দের শাব্দিক অর্থ দিয়ে সবকিছু বিচার-বিবেচনা করা যায় না বা করা সঠিকও নয়। কোনো কোনো শব্দের সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক অর্থও থাকে।
যেমন ২১শে ফেব্রুয়ারির মতো শব্দ এখন আন্তর্জাতিকভাবেও বিস্তৃতি লাভ করেছে। যেমন ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘অর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস’। অথচ এ দিনটি ছিল আমাদের ভাষা-শহীদদের স্মরণে একটি দিন।
‘জয় বাংলা’ শুধু এখন আর একটি প্রতীকী স্লোগান নয় একটি জাতির দর্শনেও পরিনত হয়েছে উঠেছে॥