কালাইয়ে টানা বৃষ্টিতে মানুষের দুর্ভোগ ও আগাম শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ জয়পুরহাটের কালাইয়ে গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে মানুষের দুর্ভোগ ও আগাম শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা কাজের সন্ধানে বাহিরে যেতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন।

নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কিনতে হিমশিম পোহাতে হচ্ছে তাদের। অনেকই এনজিওর কিস্তি পরিশোধে হাত বাড়াচ্ছেন দাদন ব্যবসায়ীদের নিকট। গত কয়েক দিনে টানা বর্ষনের কারনে মানুষ ঘর থেকে বাহিরে বের হতে না পারায় দিনমজুর, রিক্সা চালক , ও আটো ভ্যান চালকরা পড়েছে আরো বিপাকে।

সারা দিনে যা আয় রোজগার হচ্ছে তা দিয়ে তাদের সংসারের খরচ চালানোই দায় হয়ে পরেছে।

কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র গ্রামের অটোভ্যান চালক রুবেল বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে রাস্তাই কোন লোকজন চলাচল নেই । যাত্রী অভাবে রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে । সংসারের খরচ করবো কি দিয়ে,আর এনজিওর কিস্তিই বা দিবো কেমনে।

ঝামুটপুর গ্রামের ভ্যানচালক রাশিদুল আলম জানান, বৃস্টির কারনে গত দুদিন ধরে কোন আয় না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে দূর্ভোগে পরেছি।

এদিকে অতি বৃষ্টির কারণে প্রাকৃতিক ভাবে রোপা আমন ধানের পোকা মাকড় দমনে উপকার হলেও উপজেলা আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজি হিসাবে মুলা, মরিচ, সিম, লাউ, ফুলকপি, বাধা কপির, করলা, খেত লাগানো হলেও জমিতে পানি জমে থাকার কারনে নষ্ট হতে শুরু করেছে। এতে কৃষকের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

উপজেলার হাতিয়র গ্রামে কৃষক মতলেব বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে করলা চাষ করেছিলাম। এবার জমিতে ভাল করলা হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তুু কয়েক দিনের অতি বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে থাকায় করলা ক্ষেতগুলো মরে যাচ্ছে। অনেক টাকার ক্ষতি হয়ে গেল।

একই গ্রামের কৃষক আঃ বাছেদ বলেন, লাভের আশায় চিচিঙ্গা ক্ষেত তুলে আগাম মরিচ চাষাবাদ করেছিলাম। কিন্তুু পানির কারনে সব সর্বনাশ হয়েছে। উপজেলার হাজিপাড়া গ্রামের কৃষক শাহারুল বলেন, এবার এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের লাউ চাষ করেছিলাম। টানা বৃষ্টির কারণে লাউয়ের চারা গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির কারনে আগাম জাতের শীতকালীন সবজি চাষের জমি তৈরিতে বিলম্ব হবে। এছাড়া ইতোমধ্যে লাগানো বিভিন্ন ফসলের চারা নস্ট হয়ে যাচ্ছে।

কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুন চন্দ্র রায় বলেন, আগাম রবি শষ্য চাষ কৃষকদের জন্য একটা চ্যালেন্জ । এ চ্যালেন্জ মোকাবেলায় এমন আগাম শষ্যের জমি থেকে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্হা করে ক্ষতি রোধ করা সম্ভব হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.