ইতিকাফ করতেন রমজানের শেষ দশকে রসুলুল্লাহ (সা.)

কালের সংবাদ ডেস্কঃ (বুখারি : ২০১৭) শেষ দশক তাৎপর্যপূর্ণ হওয়ার জন্য ইতিকাফের গুরুত্ব অনেক। ‘রসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের শেষ দশকে মসজিদে ইতিকাফ করতেন। যত দিন না আল্লাহ তাঁকে মৃত্যু দান করেছেন তত দিন তিনি এ আমল অব্যাহত রেখেছেন। তাঁর ইন্তেকালের পর তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন। ’ (বুখারি : ২০২৫) ইতিকাফ করার উদ্দেশ্যই হলো- দুনিয়াবি সব ধরনের ঝামেলা থেকে মুক্ত থেকে একনিষ্ঠতার সহিত আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য তাঁর ইবাদতে মগ্ন হওয়া এবং মাওলাপাকের দরবারে পড়ে থাকা। এ উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে যে কোনো মসজিদে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। ইতিকাফের আরও অনেক ফজিলত রয়েছে। ইতিকাফকারী সর্বদা মসজিদে অবস্থান করার কারণে শবেকদরের ফজিলত লাভ করতে পারে। জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ থাকে। এ সময় আল্লাহপাক বহু গোনাহগার জাহান্নামিকে নাজাত দিয়ে থাকেন। গোনাহগারদের পাপ পোচন করে থাকেন। হাদিসে আছে, হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখন রমজানের প্রথম রাত আসে তখন বিতাড়িত শয়তান ও দুষ্টু জিনদের শৃঙ্খলিত করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকেন- হে সৎকর্মশীল! অগ্রসর হও। হে অসৎকর্মশীল! থামো। মহান আল্লাহ রমজানের প্রতি রাতে অনেক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪২) ঈদের রাতে আল্লাহতায়ালা আরও দ্বিগুণসংখ্যক মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তিদান করেন। জাহান্নামের শাস্তি ভয়াবহ।

এ জন্য আমাদের মাঝে প্রতি বছর ঘুরে ঘুরে মাহে রমজানের আগমন ঘটে। রমজানের শেষ দশক জাহান্নাম হতে মুক্তি পাওয়ার সময়। হাদিসের ভাষায়- ‘ইতকুম মিনান নার’ বা জাহান্নাম থেকে মুক্তির দশক বলা হয়েছে। হজরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘রমজানের প্রথম দশক রহমতের, দ্বিতীয় দশক মাগফিরাতের আর তৃতীয় দশক জাহান্নাম থেকে মুক্তির।

নাজাতের শেষ দশক বা জাহান্নাম হতে মুক্তির দশক। ভালো সময় যেন তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। এই বরকতময় সময়ে বান্দা নিজ পাপের বোঝা আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে তাঁর নৈকট্যতা হাসিল করবে।

আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘বস্তুত যে ব্যক্তি নিজ প্রতিপালকের কাছে অপরাধী হয়ে আসবে, তার জন্য আছে জাহান্নাম, যার ভিতরে সে মরবেও না বাঁচবেও না। ’ (সুরা ত্বহা : ৭৪) মোটকথা রমজানের শেষ দশকের তাৎপর্য অনেক। তাই এখন থেকে সজাগ হতে হবে। যে সময়টা আছে তা কাজে লাগাতে হবে। তাহলেই রমজান মাস আমাদের জন্য সার্থক হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সহিহ বুঝ দান করে বেশি বেশি আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.