উন্নয়নের পাশাপাশি দুর্নীতি ও বৈষম্যের লাগাম টানা জরুরি

রায়হান আহমেদ তপাদার-লেখক: গবেষক ও কলাম লেখকঃ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে আমরা উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে চলেছি। আমাদের মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি, কৃষি সম্প্রসারণ, শিল্পের উন্নয়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস,বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী নাগরিকদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বৃদ্ধি ও পোশাক শিল্পের ব্যাপক অগ্রগতিসহ রফতানি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলেছে। তবে এ অগ্রগতি প্রশংসনীয় হলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী এগোতে পেরেছে এমন নয়। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে আমাদের বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তা উত্তরণের জন্য আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহার, বিরাট জনসংখ্যাকে উৎপাদনশীল কাজে নিয়োগের ব্যবস্থা করা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসনের প্রতি সরকারকে নজর দিতে হবে। স্বাধীনতা পরবর্তী এক দশক আমাদের অর্থনীতি মূলত ছিল কৃষিনির্ভর।যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হিসেবে অর্থনীতির কাঠামো ছিল নাজুক অবস্থায়। ১৯৭২-৭৩ সালে মাথাপিছু আয় ছিল ১২৯ ডলার। জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২.৭৫ ভাগ। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৩.০৮ শতাংশ। ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন পটপরিবর্তন যেমন: গণতান্ত্রিক শাসক, সামরিক শাসক, স্বৈরশাসক অর্থাৎ রাজনৈতিক বিভিন্ন সরকারের আমলে অর্থনীতির গতি উত্থানপতনের মধ্যদিয়ে আজকের অবস্থায় এসেছে বর্তমানে আমাদের অর্থনীতি কৃষির পাশাপাশি শিল্প ও সেবাখাত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি এখন প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্রমান্বয়ে অগ্রগতি লাভ করছে। ৫৩ বছরে অর্থনীতি অনেক ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করলেও এতে তুষ্টির অবকাশ নেই। এখনো অনেক চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে। আমাদের দীর্ঘ পথ চলা আশানুরূপ না হলেও সন্তোষজনক ছিল। তবে সম্ভাবনা ছিল অনেক বেশি। এগুলো আলোচনা-পর্যালোচনার প্রয়োজন।

ঠিক কোন কারণে আমরা সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করতে পারিনি, দেশকে দ্রুত এগিয়ে নেয়ার সম্ভাবনাও কাজে লাগাতে পারিনি, সেসব বিষয় পর্যালোচনায় আসতে হবে। বর্তমানে ব্যাংকিং খাত বড় ধরনের সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ খাতের খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি, ঋণ আদায়ের হার হ্রাস ও বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া অর্থনীতিকে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে। দ্রুত সঙ্কট উত্তরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে শক্ত হাতে, ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে সময়োচিত ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানবাধিকারের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও এ সমস্যার সমাধান না করতে পারলে আগামী দিনে অর্থনীতি কোন দিকে যাবে তা ভেবে দেখতে হবে। বর্তমানে নতুন বিনিয়োগ না হওয়া, কর্ম সংস্থানের অভাব, শিক্ষার নাজুক অবস্থা, কোনো প্রকল্প যথাসময়ে শেষ না হওয়া ইত্যাদি, ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির শর্ত বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে থাকবে। স্বাধীনতার ৫২ বছরে নিজেদের অর্জন ও ব্যর্থতাগুলোর বিশ্লেষণ ও দুর্বলতা গুলো চিহ্নিত করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। জবাব দিহিতা ও স্বাধীন মতপ্রকাশ সঙ্কুুচিত হচ্ছে। দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। আয় ও সম্পদের বৈষম্য বেড়েছে। এ সময় দুর্যোগকালীন সঙ্কট মোকাবেলায় আমাদের প্রস্তুতির বিষয়গুলো নিয়েও ভাবতে হবে। সম্প্রতি বৈশ্বিক খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থাসহ (এফএও) পাঁচটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতির যে চিত্র উঠে এসেছে, তা মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। পুষ্টিকর বা স্বাস্থ্যকর খাবার কেনার সংগতি নেই জনসংখ্যার ৭৩ শতাংশেরই। প্রতিবেদন প্রণয়নকারী অপর চারটি সংস্থা হলো আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন সংস্থা, ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

এই প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পুষ্টিকর খাদ্যের জোগানে এগিয়ে আছে ভুটান ও শ্রীলঙ্কা। এরপর যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের অবস্থান। সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় আছে নেপাল। পাকিস্তান বাংলাদেশের পেছনে। স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছরে বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। কেবল ধান নয়, মাছ, সবজি, ফল, দুধ, ডিম, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি উৎপাদনেও আমাদের অগ্রগতি যথেষ্ট। তারপরও অধিকাংশ মানুষের নাগালে স্বাস্থ্যকর বা পুষ্টিকর খাবার না থাকার কারণ আয়বৈষম্য। দ্রুত ধনী হওয়া তালিকার শীর্ষে থাকা বাংলাদেশে দারিদ্র্য কমছে খুবই মন্থরগতিতে। অন্যদিকে ধনী ও গরিবের বৈষম্য বাড়ছেই। উল্লিখিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে একজন মানুষের দৈনিক স্বাস্থ্যকর বা পুষ্টিকর খাবারের জন্য খরচ পড়ে প্রায় ২৭৬ টাকা। অথচ চার ভাগের তিন ভাগ মানুষেরই এ খাবার কেনার সামর্থ্য নেই। ২০১৪-১৬ সময়কালে তীব্র থেকে মাঝারি ধরনের খাদ্য অনিশ্চয়তায় ছিল ৫ কোটি ৪ লাখ মানুষ। তিন বছর পর ২০১৯-২১ সময়কালে একই ধরনের খাদ্য অনিশ্চয়তায় ছিল ৫ কোটি ২৩ লাখ মানুষ। অর্থাৎ দেশের মোট জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ এ অনিশ্চয়তায় ছিল। এ হিসাবে ৬৮ শতাংশ মানুষের খাদ্য বিষয়ে অনিশ্চয়তা নেই। তবে তাদের উল্লেখযোগ্য অংশ স্বাস্থ্যকর খাবার খায় না বা খেতে পারে না। গড়ে একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষের দিনে ২১০০ কিলোক্যালরির প্রয়োজন। সমাজে বিদ্যমান এই উৎকট বৈষম্যের চিহ্নগুলো বাহ্যিকভাবে হয়তো চট করে চোখে পড়ে না, কিন্তু একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে কিংবা অভিনিবেশ সহকারে ভাবলেই এর অস্তিত্বটুকু স্পষ্ট টের পাওয়া যাওয়ার কথা। অবশ্য মাঝে মধ্যে দেশে ও বিদেশের বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতেও এ নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হতে দেখি আমরা।

যেমন, গেল বছরের একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে এই করোনাকালের মধ্যেও বিশ্বে কোটিপতিদের সংখ্যাবৃদ্ধির চাঞ্চল্যকর একটি খবর দেখেছি, যার উৎস সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক একটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকাশিত গ্লোবাল ওয়েলথ রিপোর্ট ২০২১।এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও, গেল দুই বছরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে আট হাজার, যাদের একেক জনের মোট সম্পদের পরিমাণ কমপক্ষে দশ থেকে পঞ্চাশ কোটি টাকা। পাশাপাশি, এই করোনাকালের মধ্যেই দেড়, দুই কোটি মানুষের নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার খবরও আমরা পড়েছি কোনো কোনো কাগজে ও অনলাইন পোর্টালে। দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের দুই প্রান্তের এই দুই বিপরীত মুখী প্রবণতা আর কিছু নয়, আমাদের সমাজ-অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান বৈষম্যেরই জোরাল একটি সূচক। অর্থনীতির মূল বিষয় দারিদ্র্য অধ্যয়ন। তাই উন্নয়নশীল দেশে দারিদ্র্য ও দারিদ্র্য দূরীকরণের বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা প্রয়োজন। দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য কেবল প্রবৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে জয়ী হতে হলে মানব উন্নয়নে বৈষম্য (প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা) দূর ও বিনিয়োগের জন্য দরিদ্রদের ঋণ প্রাপ্তির সুযোগ অবারিত করতে হবে। তাই দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে বিজয় দাবি না করে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বর্তমান আয়বৈষম্য অব্যাহত থাকলে, আগামী ১৫ বছরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও, বিশ্বের এক বিলিয়ন মানুষ দারিদ্র্যের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হতে পারবে না। ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল চেঞ্জ পত্রিকায় ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত হোয়েন মেথড ম্যাটারস: মনিটরিং পোভার্টি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক নিবন্ধে বাংলাদেশে দারিদ্র্য পরিমাপের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলা ও এর সংশোধনের পথনির্দেশ করার সময় এসেছে। এই জরিপ দেখাচ্ছে যে, আশির দশকে দারিদ্র্য পরিস্থিতির কথিত উন্নতি কেবল ভ্রান্ত পরিমাপপদ্ধতি ও জরিপ নকশার ফলশ্রুতি। ভ্রান্ত পরিমাপ পদ্ধতি সংশোধন করেও দেখা গেছে যে, আশির দশকের মধ্যভাগ পর্যন্ত দারিদ্র্যের আপতন, গভীরতা ও নির্মমতা কমলেও তা পরবর্তী সময়ে টেকসই হয়নি।

জন মেইনার্ড কেইন্স নামে এক ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে বললেন, একমাত্র সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি গুণক ও লিংকেজ সৃষ্টি করে ঝিমিয়ে পড়া একটা অর্থনীতিকে ষাঁড়ের মতো দৌড়াতে সাহায্য করতে পারে। সুতরাং কেইন্সীয় অর্থনীতি বলে অর্থনৈতিক মন্দার সময় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি একটা মোক্ষম দাওয়াই। বস্তুত সেই দর্শনের ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, এমনকি কভিড-পূর্ব বাংলাদেশে সম্প্রসারণমূলক বাজেটের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির প্রচেষ্টা নেয়া হয়েছিল এবং তাতে বেশ সুফল ঘরে তুলে বাংলাদেশের তিলকে উন্নয়ন ধাঁধার তকমা জোটে। তবে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বিভিন্ন কার্যকারণে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পাল্টে যায় এবং সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি এ মুহূর্তে আশীর্বাদ না হয়ে বরং অভিশাপও হতে পারে বলে ধারণা করা হয়। দেশের অর্থনীতি এখন মোটাদাগে তিনটি সমস্যায় আক্রান্ত-উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যহীনতা ও আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা।সব মিলিয়ে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে। বর্তমান সরকার এবার ক্ষমতায় এসে সামষ্টিক অর্থনীতির যেসব সূচকে নজর দিতে হবে ভেবেছিল সেগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল মূল্যস্ফীতি, রফতানি ও প্রবাসী আয়, ব্যাংক খাত, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, বিদেশী ঋণ, রাজস্ব আয় ইত্যাদি। আরো আশ্বস্ত করেছিলেন, দুর্নীতির ক্ষেত্রে তাদের সহ্যসীমা শূন্য, অর্থাৎ কোনো ধরনের দুর্নীতি বরদাশত করা হবে না। তবে পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা। ব্যাপক ও বিস্তৃত দুর্নীতি ও বিদেশে অবৈধ অর্থ পাচার এবং অপেক্ষাকৃত কম রাজস্ব আয় অর্থনীতির টুঁটি চেপে ধরার মতো অবস্থা সৃষ্টি করে রেখেছে। অন্যদিকে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতির পারদ কিছুতেই যেন নিচে নামছে না, বরং ১০ শতাংশের আশপাশে ঘুরপাক খাচ্ছে। অর্থাৎ দুই বছর ধরে একজন দিনমজুর, রিকশাওয়ালা কিংবা নিম্নমধ্যবিত্ত অব্যাহত ভাবে ১০০ টাকার জিনিস কিনছে ১১০ টাকায়, তা না হলে ১০০ টাকা দিয়ে ৯০ টাকার পণ্য ক্রয় করে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছে।

সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত খাদ্যনিরাপত্তা সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাবারের ক্রমবর্ধমান দাম দেশের ৭১ শতাংশ পরিবারের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী, দেশে এখন মোট পরিবার বা খানার সংখ্যা ৪ কোটি ১০ লাখ। বিশ্বব্যাংকের হিসাব মানলে, খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা ২ কোটি ৯০ লাখের বেশি পরিবারের জন্য উদ্বেগের বিষয়। গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো সমস্যা অন্যখানেও তলানিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, টাকার মানে ধস ইত্যাদি। এসব সংকট সাপেক্ষে প্রবৃদ্ধির প্রক্ষেপণ বলছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিক প্রবৃদ্ধির হার অন্তত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ৬ শতাংশের নিচে থাকবে। এরই মধ্যে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের হুমকি আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহকে ব্যাহত করে অভ্যন্তরীণ মূল্যস্তর আরো বাড়িয়ে দিলে অবাক হওয়ার মতো কিছু থাকবে না। সুতরাং যথাযথ সুশাসন নিশ্চিত করে দুর্নীতি দূরীকরণ ও আর্থসামাজিক বৈষম্য হ্রাস বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারে আছে বলে দেশের প্রতিটি মানুষ প্রত্যাশা করে। আমরা যদি সত্যিই একটি স্বাস্থ্যবান জাতি গড়ে তুলতে চাই, নাগরিকের আয় যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি কমাতে হবে সামাজিক বৈষম্যও। অর্থাত উন্নয়নের পাশাপাশি দুর্নীতি ও বৈষম্যের লাগাম টেনে ধরা সময়ের দাবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.