কালাইয়ে খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: শীত যত বাড়ছে খেজুর রসের চাহিদাও ততো বাড়ছে। গ্রামীণ জনপদের ঘরে ঘরে এই রস দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস।এ উপজেলার তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করে পাঁচটি ইউনিয়নওএকটি পৌরসভার রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুর। ফলে গাছিরা কাজের চাপে দম নেয়ার সময় পান না তারা । খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন গাছিরা । গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে করে ছোট বড় মাটির কলসি বেঁধে রাখা রসের জন্য । পরদিন সকালে রস সংগ্রহ করা হয়। কেউ কেউ এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন।গাছিরা বলেন শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করা হয়। এ রস থেকে বিভিন্ন ধরনের পাটালি ও লালি গুর তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা।বাজারে প্রতি কেজি খেজুরের গুর বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়।
কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র হাজীপাড়া গ্রামে গাছি সামিউল ইসলাম বলেন, রস সংগ্রহের জন্য গাছ প্রস্তুত করছেন। শীত শুরুর আগেই আমরা নিজের ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকার পরিবারের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে খেজুরের গাছ লিজ নিয়ে থাকি। এবারও নিয়েছি। রস সংগ্রহের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে গাছ ঝাড়ার কাজ শেষ করেছি। ইতোমধ্যে রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরির কাজও শুরু করেছি।
কালাই পৌরসভার গাছি আবু সামাদ  বলেন,খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথার অংশকে ভালো করে পরিষ্কার করতে হয়। এরপর পরিষ্কার সাদা অংশ কেটে বিশেষ কায়দায় ছোট-বড় কলসিতে রস সংগ্রহ করা হয়। ছোট বড় বিভিন্ন রকমের খেজুর গাছে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়েই আমরা কোমরে রশি বেঁধে গাছে ঝুলে রস সংগ্রহের কাজ করি। প্রতিদিন বিকেলে ছোট-বড় কলসি গাছে বাঁধি, সকালে রস সংগ্রহ করি। কেউ কেউ কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন। আবার কেউ কেউ সকালেই এ রস জ্বালিয়ে গুড় তৈরি করেন।’
উদয়পুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের আশরাফ হোসেন গাছি বলেন, শীত মৌসুমের শুরুতেই আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহের কাজ করে থাকি। বছরের এ শীত মৌসুমেই কয়েক মাস আমরা খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করে থাকি। এ রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায় বলেন,শীত মৌসুম আসার সঙ্গে সঙ্গে রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকেন গাছিরা। আমরা গাছিদের রস সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। খেজুর গাছ ফসলের কোনো প্রকারের ক্ষতি করে না। এ গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। খেজুর গাছ যে কোন স্থানে লাগানো যায়।তিনি আরো বলেন, বর্তমান সময়ে খেজুর গাছ অনেকটা কমে গেছে। ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে খেজুর গাছ রোপণের উদ্যোগ নেয়া দরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published.