মোহাম্মদ আককাস আলী, মহাদেবপুর প্রতিনিধি : নওগাঁয় চাঞ্চল্যকর ‘নাজিম উদ্দিন ফকির’ ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন, জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১১ জুন) দুপুরে সদর থানা প্রাঙ্গনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্যটি জানিয়েছেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গাজিউর রহমান। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সদর উপজেলার বিলভবানীপুর গ্রামের নিহত নাজিম উদ্দীন প্রায় এক বছর আগে মারপিটের ঘটনায় একটি গ্রাম্য সালিশ দরবার করেছিল এলাকায়। সেই শালিসে ৩০ হাজার টাকা অর্থ জরিমানা করেন তিনি। ওই গ্রাম্য শালিসে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি ক্ষিপ্ত ছিল নাজিমের উপর। তৈরি হয়েছিল শত্রুতা। এছাড়া প্রায় ৬-৭মাস আগে পারিবারিক জমি সংক্রান্ত বিষয়ে একটি আপস করেন নিহত নাজিমুদ্দিন। এরই জ্বেরে সোমবার (১০ জুন) দিবাগত রাত ১০টার দিকে নাজিম উদ্দিন ফকির বিলভবানীপুর মৎস্যজীবী পাড়ায় জনৈক ব্যক্তির শালিস শেষে নিজের বাড়ি ফেরার সময় অজ্ঞাতনামা আসামীরা ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে নাজিম উদ্দিনের মৃত্যু হয়।
হত্যাকান্ডের বিষয়টি পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হককে জানালে তাঁর সার্বিক দিক নির্দেশনায় পুলিশের একটি চৌকস দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও তথ্য প্রযুক্তি এবং সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করার মাধ্যমে মঙ্গলবার (১১ জুন) শহরের দপ্তরীপাড়া এলাকা হতে ওই গ্রামের মৃত-আব্দুস সামাদের ছেলে সুজাত আলী (৩২) ও রঘুনাথপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান (২৮) কে গ্রেফতার করা হয়। আটকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পূর্বের রাগ ও ক্ষোভের জ্বেরে দীর্ঘ পরিকল্পনার মাধ্যমে তারা নাজিম উদ্দিন ফকিরকে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করে।
এসময় তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক বিভিন্ন স্থান থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র চাকু ও ভাঙ্গা হাতুড়ি উদ্ধার করে পুলিশ। আটকৃতদের মঙ্গলবার বিকেলে আইনী প্রক্রিয়া শেষে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কি না সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য আদালতের কাছে আসামীদের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
রিমান্ডের মাধ্যমে আরো তথ্য জানা জেতে পারে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা। এসময় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফৌজিয়া হাবিব খান, সদর থানার ওসি জাহিদুল হকসহ থানার অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।