তমালিকা মল্লিক প্রতিবেদকঃ সাতক্ষীরা জেলার জনজীবন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেচরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ক্রমাগত ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, লবণাক্ততারপ্রসার এবং জলাবদ্ধতার কারণে এই অঞ্চলের মানুষ তাদের জীবিকাএবং নিরাপত্তা হারাচ্ছে। বিশেষত, উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারাপ্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে সংগ্রাম করছেন, যা তাদের আর্থিক, সামাজিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। উপকূলীয় এলাকার এই সংকট নিরসনে সবাইকে সম্মিলিতভাবে জরুরীপদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরা জলবায়ু অধিপরামর্শফোরামের সদস্যরা।
আজ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার সকাল ১০.০০ টায় স্বদেশসভাকক্ষ, কাটিয়া, সাতক্ষীরাতে, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স এরসহযোগিতায় এবং সাতক্ষীরা জেলা জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামআয়োজিত অর্ধবার্ষিক সমন্বয় সভায় এই দাবি তুলে ধরা হয়। সভায়সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি প্রফেসর মোঃ আব্দুল হামিদ।সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ফোরামের সদস্য সচিব মাধব চন্দ্র দত্ত , আবুল কালাম আজাদ, ফরিদা আকতার বিউটি, শেখ আফজাল হোসেন, জোৎস্না দত্ত, একোব্বর হোসেন, শরীফুল্লাহ কায়সার সুমন,আমিনা বিলকিস ময়না, নিত্যানন্দ সরকার সহ আরো অনেকে।
উক্ত সভায় উপকূলের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে বক্তারা বলেনসাতক্ষীরার নদ-নদীগুলোর জলধারণ ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার ফলেঅধিকাংশ অঞ্চল দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে। এছাড়া, সাইক্লোন আম্পান ও ইয়াসের মতো বড় দুর্যোগ এই এলাকারনদীবাঁধগুলোকে দুর্বল করে দিয়েছে, যার ফলে স্থানীয় জনসাধারণেরজন্য স্থায়ী আশ্রয় এবং জীবিকা নিশ্চিত করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। বক্তারা আরো বলেন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সাতক্ষীরারদুর্যোগকবলিত মানুষের জন্য ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনাকরলেও, টেকসই সমাধানের অভাবে তারা এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিকজীবনে ফিরতে পারছেন না। অনেকে জলবায়ু উদ্বাস্তু হিসেবে বিভিন্নশহরে কাজের খোঁজে পাড়ি জমাতে বাধ্য হচ্ছেন, যা নতুন সামাজিকসমস্যার জন্ম দিচ্ছে। এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা মোকাবিলায়সাতক্ষীরার জনগণের জন্য টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নেরআহ্বান জানাচ্ছে জলবায়ু অধিপরামর্শ ফোরামের নেতৃবৃন্দ। বিশেষ করে, লবণাক্ততা প্রতিরোধ, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, শক্তিশালীনদীবাঁধ নির্মাণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি হ্রাসে শিক্ষামূলককর্মসূচি গ্রহণের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ও সভায় জলবায়ু পরিবর্তন রোধকল্পে আগামী ৬ মাসের জন্যকিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। সভায় আলোচিত পরিকল্পনাসমূহউপকূলের জনমানুষের অধিকার রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলেফোরামের প্রত্যাশা।