জয়পুরহাটে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে মাহমুদপুর বি,এল উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যাবহারিক পরীক্ষার নামে অর্থ আদায় ও খাতা বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এম.এইচ নূরুন্নবী চৌধুরী রতনের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এই অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ নিয়ে তথ্য সংগ্রহে গেলে ওই বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী মুকুল হেসেন সাংবাদিকদের হুমকি ধামকি দেয়।
শনিবার (৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত মাহমুদপুর বি,এল উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ওই বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে বসিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ব্যবহারিক খাতার কাজ করা হচ্ছে। এসসয় সাংবাদিকরা বাহিরে অপেক্ষা করে। ব্যবহারিক খাতার কাজ শেষে পরিক্ষার্থীরা বাহিরে আসলে তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা অর্থ আদায়ের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে।
মাহমুদপুর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা এবার মোট ১২০ জন শিক্ষার্থী এই বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। এরমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ৩৮ জন, মানবিক বিভাগের ৪২ জন এবং ভোকেশনাল বিভাগের ৪০ জন। ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে বিজ্ঞান বিভাগের প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৬শ টাকা এবং মানবিক বিভাগের প্রত্যেক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩শ টাকা করে আদায় করেছে। এর মধ্যে কয়েকজন টাকা না নিয়ে আসায় তারা পরে দিবে মর্মে সময় নেয়।
পরীক্ষার্থীরা আরো অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এইচএম নূরুন্নবী চৌধুরী রতনের নির্দেশে কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মোল্লাসহ অন্য শিক্ষকরা প্রতি বিষয়ের ব্যবহারিক খাতা ও ব্যবহারিক পরীক্ষা বাবদ এসব টাকা আদায় করেছেন। টাকা না দিলে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে ওইসব পরিক্ষার্থীদের।
এ বিষয়ে টাকা আদায়কারী কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মোল্লা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীদের থেকে কোন টাকা নেওয়া হয়নি। তারা ভুল ব্যাখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এমএইচ নুরুন্নবী চৌধুরী রতন বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নয়। খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাবো কেন টাকা নেওয়া হচ্ছে বা কি বাবদ নেওয়া হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষক ভারতে অবস্থান করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এ বিষয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ হরুনুর রশিদ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
এ বিষয়ে উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের অতি:দা: জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমান উদ্দিন মন্ডল বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) জিন্নাতুন আরা বলেন, বিষয়টি আমি খোঁজ নিচ্ছি। যদি সে এই রকম বলে থাকে বা টাকা নিয়ে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্য সংগ্রহ শেষে উপজেলার আছরাঙ্গা দিঘিতে বসে নিউজটি লেখার সময় হঠাৎ ওই বিদ্যালয়ের পিয়ন মুকুল হোসেন সাংবাদিকদের কাছে এসে বলেন, এত ছোটখাটো বিষয়ে আপনারা কেন স্কুলে গিয়েছিলেন? আপনারা কাজটা ঠিক করেননি। দেখেন আপনারা যতই সাংবাদিক হোননা কেন, আপনাদের বাড়িও এই উপজেলায় আমার বাড়িও কিন্তু এই উপজেলায়ই। এবার শুধু স্কুলে আসেন তারপর দেখছি আপনাদের!

Leave a Reply

Your email address will not be published.