জয়পুরহাটে ডিপটিউবলে বৈদ্যুতিক মিটার চুরি

মোঃ মোকাররম হোসাইন, জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধি: বুধবার দিবাগত রাতে জয়পুরহাটের কালাইয়ের বিভিন্ন মাঠে অবস্থিত গভীর নলকূপের ৭টি বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হয়ে গেছে। পাশাপাশি চোরেরা এসব নলকূপের ঘরে প্রতিটি মিটার বাবদ ৫ হাজার টাকা বিকাশ করলে চুরি যাওয়া মিটার ফেরত দেবে বলে একটি চিরকুট লিখে ফেলে যায়। এমন ঘটনায় শঙ্কিত এলাকার গভীর নলকূপের মালিকরা।
গভীর নলকূপের মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বুধবার দিবাগত রাতে প্রচণ্ড কুয়াশা ছিল। দশ হাত জায়গাও দেখা যায়নি। এরই মধ্যে চোরেরা কালাই পৌরশহরের কাজীপাড়া মহল্লার বজলার হোসেন, টিএন্ডটি মোড়ের মোজাফ্ফর হোসেন, বালাইট গ্রামের রুবেল হোসেন, থুপসাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর, নওপাড়া গ্রামের বাবলু মিয়া, হাজিপাড়া গ্রামের কোরবান আলী ও আব্দুল লতিফের মাঠের মধ্যে অবস্থিত গভীর নলকূপের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করে নিয়ে যায় চোরেরা। ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মিটার ফেরত পেতে একটি চিরকুটে তাদের একটি মোবাইল বিকাশ নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। টাকা দেওয়ার সময় অবশ্যই মিটার নম্বর উল্লেখ করতেও বলা হয়। প্রত্যেক মিটারের ঘরেই চিরকুট দেওয়া হয়েছে বলে জানান গভীর নলকূপের মালিকরা।
গভীর নলকূপের মালিকরা আরও জানান পুলিশ এবং স্থানীয় পল্লীবিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করতেও সাহস পাচ্ছেন না তারা। কারণ হিসেবে তারা বলেন, অভিযোগ করে কোনো লাভ হয় না। বরং চোরদের টাকা দিয়ে মিটার ফেরত পাওয়া যায়। কারণ চোরদের দাবির চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা জমা দিয়েও মিটার নিতে হয় পল্লীবিদ্যুৎ অফিস থেকে। অন্যদিকে সময়ও বেশি লাগে।
গত নভেম্বর মাসের শেষের দিক থেকে শুরু করে প্রায় এক মাসে জেলার আক্কেলপুর উপজেলায় ৩৮টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। পুলিশ গত ডিসেম্বর মাসে মিটার ও ট্রান্সফরমার চুরির মূলহোতাসহ চক্রের ১৬ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে।
কালাই কাজীপাড়া মহল্লায় মিটার চুরি যাওয়া গভীর নলকূপের মালিক বজলার হোসেন বলেন, টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নিতে চোরদের বিকাশ নম্বরে কথা বলেছি। তারা ফেরত দিতে চায় কিন্তু পুলিশকে জানালে নলকূপ চালাতে পারব না। তাই পুলিশকে জানাইনি।
বাবলু মিয়া বলেন, এর আগে চোরেরা আমার গভীর নলকূপে এসে দেখভালের দায়িত্বে থাকা পাহারাদারের (লাইনম্যান) কাছে টাকা চেয়ে গেছে। টাকা না দেওয়ায় আজ চোরেরা আমার গভীর নলকূপের মিটার চুরি করে নিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে অনেকেই আলুখেতে সেচ দিতে এসে ফেরত গেছেন।
চুরির তথ্য নিশ্চিত করে জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কালাই জোনাল অফিসের ডিজিএম হামিদুল হক জানান, গত রাতে মিটার চুরির বিষয়ে ৭ জনের মধ্যে একজন মালিক অফিসকে অবগত করেছেন। তবে শুনেছি সাতজনেরই মিটার চুরি হয়েছে। এর আগেও বেশ কয়েকটি মাঠে ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরি হয়েছে।
তিনি আরও জানান, চুরি যাওয়া মিটার পুনরায় লাগানোর কোনো সুযোগ নেই। মালিকদের সরকার নির্ধারিত টাকা অফিসে জমা দিয়ে মিটার নিতে হবে।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, কালাই থানার ওসি ওয়াসিম আল বারী বলেন, চুরিরোধে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছ।

Leave a Reply

Your email address will not be published.