নওগাঁর রাণীনগরে উন্মুক্ত স্থানে ময়লার ভাগাড়-নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টারঃ নওগাঁর রাণীনগরের কেন্দ্রীয় ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী হাট কালীবাড়ি হাট। এহাটে প্রতিদিন সকালে আশেপাশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রি করেন অপরদিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে সেসব কৃষি পণ্য কিনে নিয়ে যান। পাশাপাশি  সাধারন ক্রেতারাও এই হাটে এসে বাজার করে নিয়ে যান।
স্থানীয় বাসিন্দা ও হাটের আড়তদার মতিউর রহমান উজ্জ্বল বলেন, এই হাটে সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, মুরগীসহ যাবতীয় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়। বিশেষ করে মুরগী, হাঁস, মাছ সহ অন্যান্য উপকরণ পরিস্কার করার পর অবশিষ্ট নষ্ট অংশগুলো ফেলার কোন নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় হাটের উত্তর দিকে পাট গুদামের একটি জনবসতিপূর্ণ খোলা স্থানকে বর্তমানে উন্মুক্ত ময়লা রাখার ভাগার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এতে করে এই ময়লা-আবর্জনার পঁচা দুর্গন্ধ আশে পাশের জনবসতি এলাকাগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে। যার কারণে এই অঞ্চল দিয়ে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এছাড়া দিনের বেলায় এই ময়লার ভাগাড় থেকে কুকুর, বিড়াল, চিল, কাক সহ অন্যান্য পশু ও পাখিরা ময়লা থেকে উছিষ্ট অংশগুলো আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে বয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন রোগবালাই। আর রাতের বেলায় শেয়াল সহ অন্যান্য নিশাচর প্রাণীদের আসর বসে এই ময়লার ভাগাড় এলাকায়। যার কারণে দিনের বেলায় সূর্যের আলোয় এই ভাগাড়ের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে। ফলে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। এভাবে চলতে থাকলে এই এলাকায় পরিবার নিয়ে সুস্থ্য ভাবে বেঁচে থাকাটাই মুশকিল হয়ে পড়বে বসবাস কারিদের। প্রতিবছর এই হাট থেকে লাখ লাখ টাকা সরকার রাজস্ব হিসেবে আয় করলেও হাটের আধুনিকায়ন সহ হাটের অদূরে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা-আবর্জনা রাখার বিষয়ে কোন ভ্রুক্ষেপই নেই।
দড়িয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা রফিক হাসান জানান, ময়লার দুর্গন্ধে আমরা শত শত বাসিন্দারা অস্থির হয়ে উঠেছি। রেল স্টেশন সহ রাণীনগর বাজারে যেতে হলে এই ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ের পাশ দিয়েই যেতে হয়। এছাড়া সকালে হাটাহাটি করতে গেলেও এই পথ ছাড়া যাওয়ার কোন উপায় নেই। আর বিকেলে শিশুদের নিয়ে এই পরিত্যাক্ত পাটগুদাম এলাকায় খেলাধুলা করার কোন উপায় থাকে না এই উন্মুক্ত স্থানে অপরিকল্পিতভাবে রাখা ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়েরর জন্য। আমরা দ্রুত এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থেকে মুক্ত হতে চাই।
এব্যাপারে ১নং খট্টেশ্বর রাণীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দনা শারমিন রুমকি বলেন, নিরাপদ দূরত্বে একটি নির্দষ্ট স্থানে ময়লা রাখার ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। তা না হলে এই উন্মুক্ত স্থানে ময়লা রাখার কারণে আর কিছুদিন পর থেকে আশেপাশে কোন মানুষই এই এলাকায় বসবাস করতে পারবেন না। তবে পরিষদ এর পক্ষ থেকে হাটের অনুকূলে একটি স্থান খোঁজা হচ্ছে। স্থানের ব্যবস্থা হয়ে গেলেই ময়লা-আবর্জনার এই দুর্ভোগ আর এখানে থাকবে না বলেও জানান তিনি।
রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, আমি নিজে ঐ স্থানটি পরিদর্শন করে দ্রুত একটি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা রাখার ডাস্টবিন করার ব্যবস্থা করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা চিন্তা করে ও পরিবেশের ভারসাম্য যেন রক্ষা হয় এই বিষয়টি সামনে নিয়ে দ্রুতই এই ময়লার ভাগাড়কে উন্মুক্ত ওই স্থান থেকে সরিয়ে ফেলতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.